আহমেদ হাসান সানি ও ইমতিয়াজ বর্ষণ। কোলাজ
আহমেদ হাসান সানি ও ইমতিয়াজ বর্ষণ। কোলাজ

আসছে ‘এখানে রাজনৈতিক আলাপ জরুরি’

গল্প আর পরিচালক পছন্দ হলে সিনেমায়ও অভিনয় করেন ছোট পর্দার ইমতিয়াজ বর্ষণ। সেই ধারাবাহিকতায় নতুন একটি সিনেমার শুটিং করছেন তিনি। বর্ষণ বলেন, ‘গল্পটা আমার ভালো লেগেছে। চরিত্রটাও পছন্দ হয়েছে। গল্পটিতে আমার চরিত্রের উপস্থাপন একদম ভিন্ন।’ ‘এখানে রাজনৈতিক আলাপ জরুরি’ নামে সিনেমাটির পরিচালক আহমেদ হাসান সানি।

‘এখানে রাজনৈতিক আলাপ জরুরি’ সিনেমার শুটিং চলছে। নির্মাতার সৌজন্যে

‘শহরের দুইটা গান’, ‘হয়তো আমরা’, ‘মানুষ কেন এ রকম’, ‘কেমনে কী’ ইত্যাদি গান গেয়ে শ্রোতাদের প্রশংসা পেয়েছেন সংগীতশিল্পী আহমেদ হাসান সানি। বিজ্ঞাপনচিত্র নির্মাতা হিসেবেও তাঁর পরিচিতি রয়েছে। তাঁর বেশ কয়েকটি বিজ্ঞাপনচিত্র আলোচিতও হয়েছে। বর্ষণও তাঁর সঙ্গে আগে বিজ্ঞাপনচিত্রে কাজ করেছেন। ফলে সানির নির্মাণ সম্পর্কে ধারণা ছিল। তাই গল্পটি নিয়ে যখন আলাপ হচ্ছিল, তখন একবাক্যে রাজি হয়ে যান। পবিত্র ঈদুল আজহার আগে ছবিটির শুটিং শুরু করেছেন। এ কারণে নাটক কিংবা ওয়েব—কোনো কাজই করেননি বর্ষণ। আর মাত্র দুই দিনের শুটিং হলেই সিনেমাটির কাজ শেষ হবে। কুয়াকাটা, ঢাকার বিভিন্ন স্থানে ছবিটির শুটিং হচ্ছে।

আগস্টের প্রথম সপ্তাহে ছবিটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে। সেভাবেই প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। শুটিংয়ের পাশাপাশি একই সঙ্গে ডাবিং, সম্পাদনা ও আবহসংগীতের কাজ চলছে। ছবিতে বর্ষণ ছাড়াও আছেন আজাদ আবুল কালাম, তানভীর অপূর্ব, এ কে আজাদ সেতু, কেয়া আলম প্রমুখ। ছবিটির গল্প ও চিত্রনাট্য লিখেছেন খালিদ মাহমুদ।

ইমতিয়াজ বর্ষণ

জানা গেছে, বর্ষণ অভিনীত নতুন ছবির পটভূমি ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থান। তবে এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন সময়ের ইতিহাসও তুলে ধরা হবে। কথা প্রসঙ্গে বর্ষণ বলেন, ‘আমরা প্রায় সময় বলে থাকি, রাজনৈতিক আলাপ নিষেধ। বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট কিংবা নানা জায়গায় এটা লেখাও থাকে, রাজনৈতিক আলাপ নিষেধ। কিন্তু রাজনৈতিক আলাপটা আসলে জরুরি। মানুষ যত বেশি রাজনৈতিকভাবে সচেতন হবেন, ততই দেশ নিয়ে ভাবতে শিখবেন। আমরা এ ছবিতে রাজনৈতিক আলাপ যে জরুরি, সেটিই তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।’

ওরা ১১ জন সিনেমা দেখে নির্মাণের প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠেন সানি। স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র বানিয়ে হাত পাকিয়ে এবার পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসেবে অভিষেক ঘটবে; কিন্তু কাজটা তিনি চুপিসারে করছেন। এ বিষয়ে গতকাল রোববার আহমেদ হাসান বলেন, ‘বিজ্ঞাপনচিত্র বানিয়েছি। স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রও বানিয়েছি; কিন্তু পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র তো অনেক বড় ব্যাপার। তাই এটার প্রতি মনোযোগটা অন্য সব কাজের চেয়ে একদম আলাদা। সে জন্য মনে হয়েছে, কাজটা নীরবে করি। ভুল হোক, শুদ্ধ হোক, নিজের মতো করে করার চেষ্টা করি। জীবনের প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য ছবি, জানি না কতটা কী করতে পেরেছি। যাঁরা ছবিটি দেখবেন, তাঁরাই বলতে পারবেন।’

‘এখানে রাজনৈতিক আলাপ জরুরি’র পটভূমি বিষয়ে আহমেদ হাসান বলেন,‘আমাদের একটা বিশাল প্রজন্ম আই হেট পলিটিকসের মধ্য দিয়ে বেড়ে উঠেছে। এ কারণে দেশের ইতিহাস সম্পর্কে তাদের অতটা জানাশোনা নেই। কেন দ্বিজাতি তত্ত্ব হয়েছে, কেন বাংলাদেশ ভাগ হয়েছে, বাঙালি জাতি হয়েছে—আমাদের কতটা ভাঙা-গড়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। আমি যদি আমার অতীত সম্পর্কে ঠিকঠাক না জানি, তাহলে আমাদের ভবিষ্যৎও বেশি দূর এগোবে না। সে কারণেই রাজনৈতিক আলাপটা জরুরি। আমাদের ইতিহাস জানতে হবে। আমরা গল্পটার মধ্যে বিভিন্ন কথোপকথনের মাধ্যমে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের ইতিহাস বলার চেষ্টা করেছি। সে কারণে ছবিটির নাম এটাই যথোপযুক্ত মনে হয়েছে।’

প্রথম ছবির গল্প রাজনৈতিক ভাবনা থেকে নেওয়ার পেছনে আর বিশেষ কোনো কারণ ছিল কি? ‘আমার প্রথম ছবির জন্য অনেক ধরনের গল্পের কথা ভেবেছি। ভেবেছি, এটা প্রথম হবে, ওইটা সেকেন্ড, আরেকটা থার্ড। কোনোটার মধ্যে আমার এই গল্পটা ছিল না। এটা অনেকটা আমার মনের তাগিদ। আমার মন এই গল্পের দিকে টেনে নিয়েছে।’

‘এখানে রাজনৈতিক আলাপ জরুরি’ সিনেমার শুটিং চলছে। নির্মাতার সৌজন্যে

এরই মধ্যে আহমেদ হাসান সানির আরেকটি ছবির ঘোষণা এসেছে। ‘রুহের কাফেলা’ নামে ছবিটি সরকারি অনুদানে তৈরি হবে। সানি বলেন, ‘গল্পটা খুব সুন্দর। এক দৃষ্টিহীন মাদ্রাসাছাত্রের মাকে খোঁজার গল্প। এতিম কিন্তু তার মাকে খোঁজা, একই সঙ্গে বাংলাদেশকে খোঁজা—এটার মধ্যে একটি রূপক ব্যাপার আছে। আপাতত এর বেশি কিছু বলতে চাইছি না।’ জানিয়ে রাখলেন, ‘এখানে রাজনৈতিক আলাপ জরুরি’ মুক্তির পরপরই নতুন ছবির প্রি–প্রোডাকশনের কাজ শুরু করতে চান। সামনের শীতে ‘রুহের কাফেলা’র শুটিং শুরু করবেন সানি।

গাইছেন আহমেদ হাসান সানি