
শিল্পকলা নীরব। কড়া পাহারার মধ্যে মাত্র একটা ফটক দিয়ে নজরদারির মধ্যে প্রবেশ করতে হয়। এর মধ্যেই আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় একাডেমির স্টুডিও থিয়েটার মিলনায়তনে মঞ্চস্থ হলো নাটক ‘দ্বীপ’।
ভুল পথে চলা আদর্শহীন মানুষের কাহিনি নিয়ে রচিত নাটক ‘দ্বীপ’। প্রথিতযশা নাট্যকার উৎপল দত্তের রচনা থেকে নাটকটির নির্দেশনা দিয়েছেন তপন হাফিজ। এটি নাট্যদল নাট্য তীর্থের তৃতীয় প্রযোজনা। বৃহস্পতিবার নাটকটির ৭৪তম মঞ্চায়ন হয়।
নাটকের গল্পের প্রধান চরিত্র মিলন সরকার। প্রথম জীবনে এই মিলন সরকার সমাজতন্ত্রের আদর্শের অনুসারী থাকে। পরবর্তী সময়ে আদর্শিক রাজনীতি থেকে বিচ্যুতি ঘটে তার। ব্যক্তিস্বার্থের লোভে সহজেই অসাধু হয়ে যায়। খবরের কাগজের মালিকের হুকুমে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় উসকানিমূলক তথ্য সরবরাহ করে। একপর্যায়ে বিবেক তাকে তাড়িত করে নিয়ে আসে কাঠগড়ায়। যেখানে তার বিচারের সম্মুখীন হতে হয় তারই সহকর্মী জনার্দন মল্লিক, কপিল নাথ ও ইউনুস মোহাম্মদের। সহকর্মীরা মিলনকে মনে করিয়ে দেয় দেয় যে সে আদর্শ থেকে বিচ্যুত হচ্ছে। সহযোদ্ধাদের জাগিয়ে দেওয়া বিবেকের দংশনে ভুল বুঝতে পারে পারে মিলন। তখন সে আবার ফিরে আসে আদর্শের পথে। এভাবেই শেষ হয় ‘দ্বীপ’ নাটকের কাহিনি।
নাটকে মিলন সরকারের চরিত্রে অভিনয় করেছেন তপন হাফিজ। এ ছাড়া অন্য কয়েকটি চরিত্রে রূপ দিয়েছেন সাদিয়া ইসলাম, শামসুর রহমান, মারুফ তমাল ও আমিনুল শুভ। ফয়েজ জহিরের মঞ্চ পরিকল্পনায় আলোক পরিকল্পনা করেছেন ঠান্ডু রায়হান। এ কে আজাদের আজাদের আবহ সংগীতে পোশাক পরিকল্পনা করেছেন কাজী শিলা।
নাটকটি প্রসঙ্গে নির্দেশক বলেন, ‘আমাদের তৃতীয় প্রযোজনা ‘দ্বীপ’ মঞ্চে নির্দেশনা কাজ যখন শুরু করি, ঠিক তখন পৃথিবীতে এক ক্রান্তিকাল অতিবাহিত হচ্ছে। কেন এই ক্রান্তিকাল, কেন এত অস্থিরতা, কেন এত অরাজকতা, কেন এত অসাধুতা—এসব কারণের সমাধান খুঁজতে গিয়ে আমি উপলব্ধি করেছি যে এর একমাত্র প্রধান কারণ হচ্ছে পৃথিবীর মানুষ কেবলই আদর্শচ্যুত হয়ে যাচ্ছে। আর তাই আমি উৎপল দত্তের ‘দ্বীপ’ নাটকটি একেবারেই সমসাময়িক বলে মনে করেছি। উৎপল দত্ত এই নাটকে মানুষ কীভাবে আদর্শচ্যুত হয় এবং তাতে মানুষের দ্বারাই মানুষের কত বড় ক্ষতি হতে পারে কিংবা হয়, তা-ই স্পষ্ট করে প্রমাণ করেছেন।