নাজিয়া হক অর্ষা
নাজিয়া হক অর্ষা

‘এতটা আশাও করিনি’

ভিডিও স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম চরকিতে মুক্তি পেয়েছে চলচ্চিত্র ‘সাহস’। সাজ্জাদ খান পরিচালিত এই চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন নাজিয়া অর্ষা। মুক্তির পর থেকেই এই চলচ্চিত্রে তাঁর অভিনয় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইতিবাচক আলোচনা চলছে। সম্প্রতি কথা হলো তাঁর সঙ্গে।

প্রশ্ন

মুক্তির আগে ‘সাহস’ দেখার আহ্বান জানিয়েছিলেন। কতটা সাড়া মিলেছে?

দারুণ সাড়া পাচ্ছি। অনেকে অনেক রকমের প্রশংসা করছেন। এতটা আশাও করিনি। মানুষ এটা নিয়ে আলোচনা করছেন। ভালো-মন্দ দুটোই বলছেন। তাই সব মিলিয়ে ভালো লাগছে।

প্রশ্ন

‘সাহস’-এর কোন দিকটা নিয়ে বেশি কথা বলছে?

গল্পটাকে যেভাবে বলা হয়েছে, সেই চেষ্টাকে সবাই প্রশংসা করছেন। গল্প একদমই সোজাসাপটা রাখা হয়েছে। গল্পের কিছু কিছু বিষয় তো একদম রুট লেভেলের যেসব পরিণতি, সেগুলো ঠিক ওইভাবে বলা হয়েছে। একদমই সিনেম্যাটিক বা আরোপিত কিছু মনে হয়নি। অভিনয়ও অনেকের অনেক পছন্দ হয়েছে বলে জানিয়েছেন। খুবই বাস্তবসম্মত লেগেছে।

‘সাহস’–এর দৃশ্যে মোস্তাফিজ নুর ইমরান ও নাজিয়া হক অর্ষা। কাল বৃহস্পতিবার রাত আটটায় মুক্তি পাচ্ছে ছবিটি
প্রশ্ন

‘সাহস’ বলতে আপনি কী বোঝেন?

যখন যেটা উপযুক্ত এবং বলা উচিত, সেটা বলতে পারাটাই সাহসের এবং সেটা আমরা সবাই প্রতিটি মোমেন্টে কোথাও না কোথাও দেখিয়েই থাকি।

প্রশ্ন

ওটিটিতে ব্যস্ত হওয়ায় টেলিভিশন মাধ্যমে সময় কমিয়ে দিয়েছেন কি?

টেলিভিশন নাটক এখন কমই করছি। ওটিটিতে যখন নিয়মিত কাজ শুরু করি, তখন থেকেই টেলিভিশনের কাজ কমিয়ে দিয়েছি। কারণ, যে প্যাটার্নে কাজ করতে চাই—একটু সময় ও প্রস্তুতি নিয়ে, হোমওয়ার্ক করে; সেই অপশনগুলো যখন ওটিটি দিচ্ছিল অনেক বেশি, তখনই টেলিভিশনে কাজ কমিয়ে দিয়েছি। তারপরও টেলিভিশনে দু-চারটি কাজ করছি, যাঁদের সঙ্গে সম্পর্কটা খুব ভালো। এমনকি যাঁরা প্রত্যাশা করেন আমাকে নিয়ে কাজ করার বা গল্পটা নিয়ে অনেক দিন ধরে বসে আছেন, এরপর তাঁদের সঙ্গে কথা বলে গল্পটা পাঠালে পড়ে ঠিকঠাক মনে হলে কাজের জন্য মুভ করি।

প্রশ্ন

আপনার নিজের অভিনীত কাজ ছাড়া সম্প্রতি কোনটি দেখে ভালো লেগেছে?

ওটিটিতে আমি সিরিজ দেখেছি বেশি। সিরিজই বেশি আমাকে আরাম দিয়েছে। এসব সিরিজে গল্প বলার ঢং এবং শিল্পীদের পারফরম্যান্স ভালোই লেগেছে। দেখার পর সহশিল্পীদের ইনবক্সে লিখেছিও সেই ভালো লাগার কথা। পরিচালককেও বলেছি যে আপনার এই কাজ দেখে আরাম লেগেছে, এক দৃশ্য থেকে আরেক দৃশ্য। ছবির মধ্যে শেষবার দেখলাম নোনা জলের কাব্য, আমার ভালোও লেগেছে। টেকনিক্যাল জায়গা ভালো ছিল। গল্প বলার ধরনটাও ভিন্ন। মূলধারার বাণিজ্যিক সিনেমার মধ্যে ‘শান’ও দেখলাম। দুটি কাজ দুই রকমের মনে হয়েছে। আমি আশাবাদী হয়ে উঠছি, বাংলাদেশি সিনেমা বিভিন্ন ধাপ পার করে এসেও এখন একটা সম্ভাবনার জায়গা তৈরি করছে। আমজনতার জন্য যেমন কাজ হচ্ছে, একটু ভিন্ন ঘরানার দর্শকের জন্যও কাজ হচ্ছে। হাওয়ার ট্রেলার দেখেও আমি আশাবাদী। এই সিনেমাও দর্শক টেনে আনতে পারবে।

নাজিয়া হক অর্ষা
প্রশ্ন

আমজনতার চলচ্চিত্র, তা করার ইচ্ছা আছে?

আমজনতার জন্য সিনেমা করব না, বললে ভুল হবে। আমজনতা বলতে আসলে আমরা যেটা বুঝি, সেটার ধরনটা আরেকটু ভিন্ন হলে ভালো হয়।

প্রশ্ন

কেমন সেটা?

আমজনতার যে সিনেমা, সেটা কোথাও কোথাও মনে হয়, আমি গল্পটাকে বিশ্বাস করতে পারছি না। আমজনতার জায়গায় ফ্যান্টাসি থাকতে পারবে, এটা ঠিক আছে। কারণ, ওইটা আবার ভিন্ন ধারার। যেমন আমি যদি হরর বা সাইকো থ্রিলার বা সুররিয়ালিস্টিক সিনেমা যখন দেখি, সেসবের মনমানসিকতা থাকে এক রকম; ম্যাজিক রিয়েলিজম বা সায়েন্স ফিকশন টাইপের সিনেমা দেখার ক্ষেত্রে মানসিক প্রস্তুতি থাকে আরেক রকম। ‘পথের পাঁচালী’র কথা যদি বলি, এটা তো আমজনতার সিনেমা। আবার বিশ্বাসও করতে পারি। ‘অপুর সংসার’ আমজনতার ছবি হলেও সংযোগ করতে পারে, কোথাও কিছু অসত্য মনে হয়নি। এ রকম জায়গাটা আমি চাই। একটা সময় হয়তো এটাই হবে, আমজনতাও দেখবে, আবার সত্যও লাগবে।

এই ছবির প্রধান নারী চরিত্রে অভিনয় করেছেন নাজিয়া হক অর্ষা
প্রশ্ন

অভিনয়ের ক্ষেত্রে গল্প নির্বাচনের কোন দিকটাতে নজর দেন?

গল্প নির্বাচনের ক্ষেত্রে যে জিনিসটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, সে বিষয়টা হচ্ছে গল্পের গাঁথুনি; দ্বিতীয় হচ্ছে সংলাপ; তৃতীয় হচ্ছে উপস্থাপন।