সাবিলা নূর
সাবিলা নূর

ঈদের প্রথম দুই–তিন দিন চিন্তায় ঘুম আসছিল না: সাবিলা নূর

ওটিটিতে নাম লিখিয়েছেন সাবিলা নূর। ঈদে মুক্তি পাওয়া চরকির ওয়েব সিরিজ মারকিউলিস–এ তাঁকে জয়িতা চরিত্রে দেখা গেছে। ঈদের কাজ ও পরিকল্পনা নিয়েই মঙ্গলবার কথা বললেন অভিনেত্রী
প্রশ্ন

ঈদ কেমন কেটেছে?

ঈদের আগে খুবই দুশ্চিন্তায় ছিলাম। ঈদের প্রথম দুই–তিন দিন চিন্তায় ঘুম আসছিল না। খুবই নার্ভাস ছিলাম। প্রথম অভিনয়ের সময় যে চিন্তায় পড়েছিলাম, দীর্ঘদিন পর সেই একই চিন্তা এবারও ছিল। কারণ, দর্শক জানতেন, আমি কাজটিতে সময় নিয়েছি। মাঝে দর্শক অনেক দিন আমাকে পর্দায় দেখেননি। প্রথমবার সিরিজে দেখে কে কী বলেন, এসব ভেবেই এত চিন্তা। এখন খুশি, সবাই আমাকে জয়িতা বলছেন, ফাইনালি প্রশংসা করছেন। এখন ঈদ অনেক ভালো কাটছে।

প্রশ্ন

দুই–তিন দিন কোন ভাবনাগুলো মাথায় ঘুরছিল?

এত দিনের কষ্টের ফল কী হবে? সাকসেস নাকি ফেইলিওর? দর্শক কীভাবে চরিত্রটাকে নেবেন। যখন অভিনয় করি, তখন তো অনেক কিছু মাথায় থাকে না। সেই চরিত্র থেকে বের হওয়ার পর আরও অনেক কিছু মাথায় ঘুরছিল। মনে হচ্ছিল, কিছু দৃশ্য ঠিকমতো করছি কি না? প্রথম সিনে দর্শক কি হুক হবেন? জয়িতার জার্নির সঙ্গে কি দর্শক যাবেন? কিন্তু যখন দেখলাম আমার সমালোচনাকারীরা জয়িতার প্রশংসা করছেন, তখন মনে হলো হয়তো উতরাতে পেরেছি।

ওয়েব সিরিজ ‘মারকিউলিস’ এর দৃশ্যে অভিনয়শিল্পী সাবিলা নূর
প্রশ্ন

আপনার কাজের সমালোচনা বেশি করেন কারা?

আমার কাছের মানুষ। আমার স্বামী, বোন, আমার আম্মাসহ অনেকেই আছেন। তাঁরা ধরে ধরে আমার অভিনয়ের খুঁত বের করেন। আবার প্রশংসা করেন। যেমন তাঁরা কেউ কেউ বলেছেন, চরিত্রের জার্নি শুরুর অংশ থেকে গতি স্লো ছিল, তৃতীয় পর্বে গিয়ে সেটা একদমই ব্যতিক্রম হয়ে যায়। আবার গল্পে কখনো আমাকে খুব বেশি ইমোশনাল, কখনো খুবই প্র্যাকটিক্যাল মনে হয়েছে, আমি এটা না করলেও পারতাম। এগুলো নিয়েই কিন্তু বাড়িতে অনেক কথা হয়। কিন্তু অনেক কিছুই তো পরিচালকের হাতে থাকে। এটা-ওটা করলে ভালো হতো, এগুলো ঘরে শুনতেই হয়।

প্রশ্ন

জয়িতা চরিত্র নিয়ে আপনি ব্যক্তিগতভাবে কতটা খুশি?

দর্শকদের কাছে প্রশংসা পেয়েছি, এতেই আমি খুশি। এটা আমাদের এত দিনের পরিশ্রমের ফসল। ভালো লাগার সঙ্গে দায়িত্বটাও বেড়ে গেছে। সামনে দর্শক যেন হতাশ না হন, সেটা মাথায় রাখতে হবে। দর্শক আমাদের কাজ পছন্দ করলেই কষ্ট সার্থক।

সাবিলা নূর
প্রশ্ন

ক্যারিয়ারের চ্যালেঞ্জিং চরিত্রের মধ্যে কোনটির কথা আগে আনবেন?

অবশ্যই এখন মারকিউলিস–এর জয়িতার কথা বলব। কারণ, এখানে লম্বা একটা ইমোশনাল জার্নির গল্প বলা হয়েছে। ইমোশনগুলোর প্রতিটি স্তরে চেঞ্জ হচ্ছে, ডেভেলপমেন্ট হচ্ছে। তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে জয়িতার চরিত্রের সঙ্গে অ্যাডজাস্ট করাটা চ্যালেঞ্জিং ছিল। আমি আমার শতভাগ দিয়ে চেষ্টা করেছি। যদিও দেখার পর মনে হয়েছে, কিছু জায়গায় আরও ভালো করতে পারতাম, সেগুলো করলে হয়তো দর্শক আরও বেশি খুশি হতো। এই অপ্রাপ্তি হয়তো সব শিল্পীর থাকে।

সাবিলা নূর
প্রশ্ন

ওটিটির জন্য এতটা সময় নিলেন কেন?

মনের মতো চরিত্র, গল্প পাচ্ছিলাম না। পরে মনে হয়েছে মারকিউলিস আমার জন্যই। এখানে প্রত্যেক নারী শিল্পী দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে কাজটি করেছেন। ধর্ষণ নিয়ে একের পর এক খুন হওয়ার ঘটনা এর আগেও হয়েছে। সমাজের বাস্তব সেই চিত্রগুলোই উঠে এসেছে। পাশাপাশি ধর্ষণ নিয়ে নানান প্রশ্ন এখানে উঠে এসেছে। নারী হিসেবে গল্পের সঙ্গে অনেক কানেকটেড ছিলাম।

প্রশ্ন

ঈদে তো নাটকও মুক্তি পেয়েছে...

ওয়েব সিরিজের জন্য খুব বেশি নাটক রিলিজ হয়নি। অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে শুটিং করেছিলাম, সেখানকার কয়েকটি কাজ রিলিজ হয়েছে। দর্শক ফেসবুক গ্রুপগুলোতে প্রশংসা করছেন। ভালো লাগছে। আবার টিভি, ইউটিউব, ওটিটির পর অনেকেই বড় পর্দায় দেখতে চাইছেন। ভালো গল্পের অপেক্ষায় আছি, গল্প পেলেই সিনেমায় নাম লেখাতে আপত্তি নেই। আমি তাড়াহুড়া করতে চাই না।

সাবিলা নূর
প্রশ্ন

ঈদের ছুটি শেষে কাজে ফিরবেন কবে?

আমার ঈদ এবার দেরিতে শুরু হয়েছে। মারকিউলিস নিয়ে চিন্তায় ছিলাম। এখন ভালো লাগছে। আমার ঈদের ছুটি শুরু হয়েছে। ভালো গল্প পেলে আবার কাজ শুরু করব। অভিনয় ছাড়া তো থাকতে পারব না।