মীর নওফেল আশরাফী
মীর নওফেল আশরাফী

এটি আমার জীবনের বিশেষ চরিত্র

আলোচিত ওয়েব সিরিজ কারাগার পার্ট টুতে রাজু চরিত্রে অভিনয় করে প্রশংসিত হয়েছেন তরুণ অভিনয়শিল্পী মীর নওফেল আশরাফী, জিসান নামে যিনি পরিচিত বেশি। ২০১০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত গৌতম ঘোষের মনের মানুষ সিনেমা দিয়ে চলচ্চিত্রে অভিষেক। তারপর একে একে করেছেন হইচইয়ের সিরিজ একাত্তর, চরকির জাগো বাহে সিরিজের ‘লাইটস, ক্যামেরা, অবজেকশন’সহ বেশ কয়েকটি কাজ।
প্রশ্ন

‘কারাগার পার্ট টু’ মুক্তির পর আপনার অভিনয় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অভিনয়শিল্পী, নির্মাতাসহ দর্শকেরা প্রশংসা করছেন। কেমন লাগছে?

কাজটি অনেকেই পছন্দ করছেন, অনেকে উৎসাহিত করছেন। খুব ভালো লাগছে। একধরনের দায়িত্ববোধও তৈরি হয়েছে।

প্রশ্ন

‘কারাগার’–এর সঙ্গে যুক্ত হলেন কীভাবে?

সিরিজের সঙ্গে বেশ আগে যুক্ত হয়েছি। অমনিবাস সিনেমা ইতি তোমারই ঢাকার শাওকী ভাইয়ের পর্বে কাজ করেছি। পরে চরকির অমনিবাস সিনেমা জাগো বাহের একটি পর্বে কাজের সময় শাওকী ভাই আমাকে কারাগার–এর গল্পটা বলেছিলেন। ওই সময়ই কারাগার–এর মধ্যে ঢুকে গেছি।

প্রশ্ন

শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে (পুরোনো) সিরিজের দৃশ্য ধারণ করা হয়েছে। সেটি দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহৃত হয়নি, এটার মধ্যে ডার্ক একটা বিষয় আছে। কাজ শুরুর পর দেখলাম নির্মাতা, অভিনয়শিল্পী, সহকারী পরিচালক—সবাই কাজটি সিরিয়াসলি করছে। তখনই আমার অনুভূতি হচ্ছিল—কিছু একটা হচ্ছে।

মীর নওফেল আশরাফী
প্রশ্ন

রাজু চরিত্র করতে কী ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছেন?

চরিত্র নির্মাণের পুরো কৃতিত্ব (নির্মাতা সৈয়দ আহমেদ) শাওকী ভাইয়ের। চরিত্রের লুক কেমন হবে, কী ধরনের অভিব্যক্তি দেবে, কীভাবে কথা বলবে—এই বিষয়গুলো শাওকী ভাই আমাকে বুঝিয়ে দিয়েছেন। চরিত্রটি যখন যার সঙ্গে কথা বলছে, তার মতো করে, তার জন্য কথা বলছে। শাওকী ভাইয়ের তত্ত্বাবধানে চরিত্রের নকশাটা হয়েছে।

প্রশ্ন

চরিত্রটি ধারণের জন্য কাউকে অনুসরণ করেছেন কি না?

চরিত্রটি কেন কারাগারে এল, সে কবিতা ও সিনেমা নিয়ে কেন কথা বলছে, তার উদ্দশ্য কী—এসবের উত্তর খুঁজতে শাওকী ভাই ও চিত্রনাট্যকার নেয়ামত উল্লাহ মাসুম ভাইয়ের সঙ্গে বিস্তারিত আলাপ করেছি। আর রেফারেন্সের কথা যদি বলেন, এই চরিত্রের কোনো রেফারেন্স নেই।

প্রশ্ন

‘কারাগার’ কি আপনার ক্যারিয়ারে টার্নিং পয়েন্ট?

ক্যারিয়ারের কথা বলতে পারব না, আমার জীবনে যতটুকু কাজ করেছি, সেটার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাজ। গৌতম ঘোষের মনের মানুষ সিনেমায় লালনের ছোটবেলার চরিত্রে আমার অভিষেক হয়। সেটা ১২ বছর হয়ে গেল। এর মধ্যে আরও কিছু কাজ করেছি। তবে কারাগার–এর চরিত্রটা আমার জীবনের বিশেষ হয়ে থাকবে।

প্রশ্ন

আপনার হাতে এখন কয়টি কাজ আছে?

কারাগার শেষ করেই চরকির ওয়েব সিরিজ ওভার টাইম, দীপ্ত প্লের অরিজিনাল ফিল্ম নিকষ–এর কাজ করেছি; অনুদানের সিনেমা গাঙকুমারী অর্ধেক করেছি।

প্রশ্ন

অভিনয়ে এলেন কীভাবে?

ক্লাস ওয়ানে পড়ার সময় বাগেরহাট থিয়েটারে শফিক সোহাগের নির্দেশনায় একটি নাটকে অভিনয় করি। পরে রুদ্র নাট্যদলে যোগ দিই। এরপর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগে ভর্তি হলাম, এর কিছুদিনের মধ্যেই তারিক আনাম খানের নাট্যদল নাট্যকেন্দ্রে যোগ দিই। এর মধ্যেই বাগেরহাট ফিল্ম সোসাইটির আবদুল্লাহ বনি ভাই আমাকে গৌতম ঘোষ দাদার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন; তাঁর মনের মানুষ সিনেমায় আমি লালনের ছোটবেলার চরিত্র করি। আমার ক্যারিয়ার ওভাবেই শুরু হয়ে যায়। এরপরই আস্তে আস্তে কাজ চলছে।

প্রশ্ন

অভিনয়ে আপনাকে অনুপ্রাণিত করেন কে?


তারিক আনাম খান আমার গুরু। ওনার অভিনয় দেখতে অসম্ভব ভালো লাগে। টিভি বা সিনেমায় নয়, মঞ্চের নাটকের মহড়ায় প্রতিটা চরিত্র এমনভাবে বুঝিয়ে দেন—দেখতে আমার ভালো লাগে। নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষকদের কাছ থেকে বরাবরই অনুপ্রেরণা পাই।

কারাগার সিরিজের রাজু চরিত্রে জিসান
প্রশ্ন

ক্যারিয়ারে আপনার লক্ষ্য কী?

আমি অভিনয় করতে চাই, সুন্দর ও বৈচিত্র্যময় কাজ করতে চাই। নতুন নতুন কাজ করতে আমার ভালো লাগে।