ধারাবাহিক ‘শাদী মোবারক’ ও ‘নোয়াখালী এক্সপ্রেস’-এ অভিনয় করছেন রেজমিন সেতু। নতুন বছরে শুরু হচ্ছে তাঁর আরেক সিরিয়াল বিশ্বাস বনাম সরদার। মুক্তির অপেক্ষায় আছে মোশাররফ করিমের সঙ্গে পাঁচটি একক নাটক। তরুণ অভিনেত্রীর সঙ্গে কথা বলেছে প্রথম আলো।
একসঙ্গে দুটি ধারাবাহিক প্রচারিত হচ্ছে...
রেজমিন সেতু: শামীম জামানের পরিচালনায় ‘শাদী মোবারক’ আর অরণ্য আনোয়ারের ‘নোয়াখালী এক্সপ্রেস’। ‘শাদী মোবারক’ প্রায় শেষের দিকে, শুটিংও শেষ। এতে মোশাররফ করিম ভাই থেকে শামীম জামান, আ খ ম হাসান, রোবেনা রেজা জুঁই, জয়রাজ দাদাসহ অনেক সিনিয়র অভিনেতার সঙ্গে অভিনয় করেছি। কাজটি করে অনেক কিছু শিখতে পেরেছি। ইতিবাচক সাড়া পেয়েছি। ‘নোয়াখালী এক্সপ্রেস’ কয়েক দিন আগেই শুরু হলো। এখানেও অনেক সিনিয়র শিল্পী আছেন। ধারাবাহিকের শুটিং টানা হয়, কোনো তাড়াহুড়া থাকে না, তাই সময়টা আমার মতো নতুন শিল্পীদের জন্য স্কুলিংয়ের মতো কাজ করে।
আরেকটি ধারাবাহিকের পোস্টার শেয়ার করলেন...
রেজমিন সেতু: সকাল আহমেদের পরিচালনায় ‘বিশ্বাস বনাম সরদার’ নাটকের পোস্টার। এর আগে আমরা ‘পিতা বনাম পুত্র গং’ নামে একটা সিরিয়াল করেছিলাম, সেটির সিকুয়েল। নতুন বছরের শুরুতে প্রচার শুরু হবে। দুই পরিবারকে কেন্দ্র করে গল্পটি এগিয়েছে। যাতে আমি সরদারবাড়ির মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করছি। আর চঞ্চল (চৌধুরী) দাদা আমার বড় ভাই চরিত্রে আছেন। বিশ্বাসবাড়ির সঙ্গে সরদারবাড়ির দ্বন্দ্ব এতে উঠে আসবে।
আর একক নাটক...
রেজমিন সেতু: সম্প্রতি কয়েকটি মুক্তি পেয়েছে, নতুন বছরের শুরুতে মুক্তির তালিকায় আছে কিছু। বিশেষ করে বলতে গেলে প্রথমবার চয়নিকা চৌধুরী দিদির পরিচালনায় কাজ করেছি ‘খায়রুন গোলাপের সুবাস’ নাটকে। এতে আমার বিপরীতে আছে দুজন হিরো সাদ নাওভী ও পারভেজ প্রান্ত। মোশাররফ করিম ভাইয়ের সঙ্গে পাঁচটি একক নাটকে অভিনয় করেছি। এর মধ্যে সকাল আহমেদের পরিচালনায় দুটি নাটক জানুয়ারিতে মুক্তি পাবে। আর দুটি পরিচালনা করেছেন সোহেল রানা ইমন, একটি তাইফুর জাহান আশিক।
মেগা সিরিয়াল ‘জবা’ দিয়ে পরিচিতি পেয়েছেন, যুক্ত হওয়ার গল্পটা শুনতে চাই...
রেজমিন সেতু: জবা চরিত্রের খোঁজে ফেসবুকে একটি বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছিল, ‘কে হবে জবা?’ পোস্টারটি সেভ করে রেখেছিলাম। এরপর নিজের একটা বায়োডেটা বানিয়ে তাঁদের ইমেইল করি। আমাকে তাঁরা প্রাথমিকভাবে ডাকেন। এরপর পাঁচ ধাপ পেরিয়ে চূড়ান্ত হই। ২০২২ সালের শেষে এর শুটিং শুরু হয়, ২০২৩ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত সিরিয়ালটি প্রচারিত হয়। কাজটি দিয়ে দেশব্যাপী পরিচিতি পাই। কাজ করার আগে থেকেই টুকটাক কাজ করতাম, কিন্তু তখন খুব একটা সাড়া পাইনি। জবার পর থেকে পরিস্থিতি বদলে যায়। কাজটির জন্যই সবাই আমাকে চিনতে থাকে। অনেক কাজের প্রস্তাব পেতে থাকি। লাক্স থেকে কেউ এলে যেমন তাঁর নামের সঙ্গে লাক্স যুক্ত হয়, জবার জন্য ঠিক তেমনই প্রচার পেয়েছি।
নিয়মিত কাজ করছেন, ঠিক সেভাবে আলোচনায় আসতে পারছেন না। এর কারণ কী মনে করেন?
রেজমিন সেতু: আসলে প্ল্যাটফর্ম একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কাজ অনেক করলেও কোন প্ল্যাটফর্মের জন্য করছি, তা গুরুত্বপূর্ণ। ইউটিউবে কাজ করার কারণে হয়তো কিছু দর্শকের কাছে পৌঁছাতে পেরেছি, কিন্তু সবার কাছে গ্রহণযোগ্যতা পেতে হলে আরও ভালো কাজের সঙ্গে যুক্ত হতে হবে। এর বাইরে আমার একটা জীবনদর্শন আছে। ধীরে ধীরে এগোতে চাই। খুব দ্রুত পরিচিতি পেয়ে আবার দ্রুতই হারাতে চাই না। তাই স্বল্প সময়ের খ্যাতি নিয়ে ভাবি না। ভালো কাজ করে মানুষের মনে জায়গা পেতে চাই।
মঞ্চ দিয়ে অভিনয়ের হাতেখড়ি, এখন কি সময় দিতে পারছেন?
রেজমিন সেতু: প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি হওয়ার আগে থেকেই নাচতাম। এরপর ঢাকায় এসে ‘টোকাই’ নাট্যদলে যুক্ত হই। সেখানেই অভিনয় শিখি, ছোট পর্দায় সুযোগ পেতে থাকি। আমাদের দল সেভাবে নিয়মিত কাজ করেনি, তাই হয়তো নিয়মিত আমাকে পাওয়া যায়নি। মঞ্চে নিয়মিত সময় না দিতে পারলেও সবার সঙ্গে আমার যোগাযোগ রয়েছে।
যতটুকু জানি, আপনার পরিবার থেকে সাংস্কৃতিক অঙ্গনে আপনিই প্রথম। পথটা সহজ ছিল?
রেজমিন সেতু: আমাদের পরিবারে এখন পর্যন্ত কেউ বিনোদনজগতে কাজ করেনি, শুধু আমি। তাই কিছু সংকট তো অবশ্যই ছিল। এখানে আমার মায়ের কথা বলব, আম্মুর সাপোর্ট না পেলে এই জায়গায় পৌঁছাতে পারতাম না। শুটিং কিংবা শোবিজের বিভিন্ন আয়োজনে মা সব সময় আমার সঙ্গে থাকেন। তিনিই আমার বন্ধু, মেন্টর, আবার মা আমার সবচেয়ে বড় সমালোচক।