
বিপ্লব সরকারের ‘আগন্তুক’ সিনেমায় ‘কোহিনূর’ চরিত্রে অভিনয় করেছেন সাহানা সুমি। সরকারি অনুদান পাওয়া সিনেমাটি জায়গা করে নিয়েছিল বুসান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের ২৮তম আসরের প্রধান প্রতিযোগিতা বিভাগে। ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের ‘বাংলাদেশ প্যানারমা’ বিভাগে আজ দেখানো হবে সিনেমাটি। এই সিনেমা ও নানা প্রসঙ্গে অভিনেত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন নাজমুল হক।
বিদেশ ঘুরে দেশে প্রথমবারের মতো ‘আগন্তুক’। কেমন লাগছে?
সাহানা সুমি: অবশ্যই অনেক ভালো। এত দিন দেশের বাইরের বিভিন্ন উৎসবে সিনেমাটি দেখেছেন দর্শকেরা। এবার দেশের দর্শকেরা দেখে কী মন্তব্য করেন, তা জানার জন্য আমরা উদ্গ্রীব হয়ে আছি।
‘আগন্তুক’-এ যুক্ত হলেন কীভাবে?
সাহানা সুমি: আমি এমনিতে খুব কম কাজ করি। যেকোনো কাজের আগে আমি দেখি, গল্পটা আমাকে টানছে কি না। যখন মনে হয় ওই গল্পের সঙ্গে আমি যাই, তখন যুক্ত হই। এই সিনেমার নির্মাতা বিপ্লব সরকার ও তাঁর টিম যখন আমার সঙ্গে গল্পটা শেয়ার করেন, গল্প ও তাঁদের পরিকল্পনা আমার ভীষণ ভালো লাগে। এরপর বেশ কয়েক দিন প্রস্তুতি নিলাম, রিহার্সাল করলাম। এভাবেই যুক্ত হওয়া।
‘কোহিনূর’ চরিত্রটি কেমন
সাহানা সুমি: আমার মনে হয়েছে, ‘কোহিনূর’ একটা মেশিনের মতো। সবকিছুতে নির্মোহ, নির্লিপ্ত একটা মানুষ—সে আসলে এমন হয়ে গেছে। শাশুড়ি ও এক সন্তান নিয়ে তার সংসার। সেলাইয়ের কাজ করে সে সংসার চালাচ্ছে। সন্তান আর শাশুড়ির দেখভাল করে কাটে তার সময়। এর বাইরে পুরোটা সময় তার সেলাইয়ের মেশিন চলতে থাকে। দীর্ঘদিন একটা মেশিনের সঙ্গে থাকতে থাকতে একঘেয়ে একটা জীবনে সে অভ্যস্ত হয়ে গেছে। আবেগের যে প্রকাশ তা আমরা কখনো তার মধ্যে দেখি না। ভেতরে-ভেতরে ক্ষয়ে যাওয়া একটা মানুষ, শুধু যুদ্ধটা করে যাচ্ছে। কোহিনূরের নিজের সঙ্গে নিজের একটা যুদ্ধ চলছে, কিন্তু এর প্রকাশ বাইরের কেউ দেখে না।
বুসানের প্রিমিয়ারের অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?
সাহানা সুমি: একজন শিল্পী হিসেবে অসাধারণ অভিজ্ঞতা। জীবনে এটা একটা অন্য রকম পালক যুক্ত করেছে। সিনেমার শেষে প্রশ্নোত্তর পর্বে তাঁদের প্রশ্ন আমাদের অবাক করেছে। ছোট ছোট বিষয়গুলো তাঁরা তুলে এনেছেন। কোনো কিছুই যেন তাঁদের চোখ এড়ায়নি। আমাদের প্রদর্শনী ছাড়াও তো অন্য সিনেমা আমরা দেখেছি, তখন অনেকেই এসে আমাদের সঙ্গে ছবি তুলেছেন, কথা বলেছেন। বিশেষ করে ওদের মুখে যখন ‘কোহিনূর কোহিনূর’ শুনেছি, এই ভালো লাগা প্রকাশ করা যাবে না।
বড় পর্দায় ‘আগন্তুক’ কবে আসবে?
সাহানা সুমি: আশা করছি, খুব শিগগির দেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে। ইতিমধ্যে আমরা সার্টিফিকেশন বোর্ড থেকে সনদ পেয়েছি। নির্মাতারা পরিকল্পনা করছেন। সব ঠিক হলেই ঘোষণা আসবে।
নতুন আর কী কী কাজ আসছে?
সাহানা সুমি: জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারজয়ী সম্পাদক সুজন মাহমুদের একটা শিশুতোষ সিনেমায় অভিনয় করেছি। ডাবিং শেষ, পোস্ট–প্রোডাকশনের কাজ চলছে। এ ছাড়া জাহিদুর রহিম অঞ্জনের চাঁদের অমাবস্যায় অভিনয় করেছি, এটিও মুক্তির অপেক্ষায় আছে।