৫ কারণে কোটি কোটি ডলার আয়

সিনেমার পোস্টার
সিনেমার পোস্টার

মুক্তির পরই বাজিমাত। প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের ধারণা ছিল প্রথম সপ্তাহে ৭০ থেকে ৯০ মিলিয়ন ডলার আয় করতে পারে। সেখানে একের পর রেকর্ড গড়ে ‘আ মাইনক্রাফট মুভি’ সিনেমাটি আয় করেছে ৩১৩ মিলিয়ন ডলারের বেশি। অপ্রত্যাশিতভাবে প্রথম সপ্তাহের আয়ে রেকর্ড গড়া ‘বার্বি’ সিনেমাকে ছাড়িয়ে গেল। ওয়ার্নার ব্রসের হিসেবেই যেন পাল্টে দিয়েছে সিনেমাটি। প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ও সিনেমা বিশেষজ্ঞদের মতে, পাঁচটি কারণে সিনেমাটির আয় দাঁড়াতে পারে বিলিয়ন ডলারের ঘরে।

সব বয়সী দর্শকের সিনেমা

সিনেমাটি বিনোদনে ভরপুর। আর এই বিনোদন সব শ্রেণির দর্শকদের জন্য হয়ে উঠেছে উপভোগ্য। সব দর্শকদের ধরতে পারায় সিনেমাটির গ্রহণযোগ্যতা বাড়ছে। ভ্যারাইটিতে লেখা হয়েছে সিনেমাটি, বিশ্বের যেকোনো দেশের কিশোর থেকে বয়স্ক দর্শকদের শেষ পর্যন্ত আগ্রহ ধরে রাখবে। সব জেনারেশনের সিনেমা এটি। দর্শকদের কথায়, অ্যাকশন ও অ্যাডভেঞ্চারের পাশাপাশি সিনেমাটি কমেডি আকারে তুলে ধরায় টান টান উত্তেজনা তৈরি করে। অল্প সময়ে ‘আ মাইনক্রাফট মুভি’ সিনেমাটি যদি বিলিয়ন ডলার আয় করে, তাহলেও অবাক হওয়ার কিছু নেই।

সিনেমার একটি দৃশ্যে। ছবি: আইএমডিবি

তুমুল প্রচারণা
সিনেমাটি প্রচারণায় সব দিক থেকে এগিয়ে ছিল। প্রথমত, সিনেমাটি ভিডিও গেমস থেকে নির্মিত। সিনেমাটির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে একাধিক নামী ব্যান্ড। তারা সবাই নিজেদের জায়গা থেকে প্রচারণা চালিয়েছে। এ ছাড়া প্রচারণায় যুক্ত ছিল থার্ড পার্টি। আলাদা করে প্রচারণায় কিশোরদের টার্গেট করায় সিনেমাটি আরও বেশি দর্শকদের কাছে পৌঁছেছে।

পেন্ট-আপ ডিমান্ড
‘পেন্ট-আপ ডিমান্ড’ বিষয়টা এমন যে সময়ের প্রয়োজনে, একটি সিনেমা ব্লকবাস্টার হওয়ার দরকার ছিল। কারণ, গত কয়েক মাসে ‘ক্যাপ্টেন আমেরিকা: ব্রেভ নিউ ওয়ার্ল্ড’, ‘স্নো হোয়াইট’, ‘মিকি ১৭’সহ বেশ কিছু সিনেমা আয় করলেও সেই অর্থে বক্স অফিসে তুমুল দাপট দেখাতে পারেনি। সিনেমা অঙ্গন চাঙা থাকা সত্ত্বেও এই সময় ব্লকবাস্টারের কাতারে যেতে পারেনি কোনো সিনেমা। বিশেষজ্ঞদের ভাষ্য, এই সময়ে বক্স অফিস হিট সিনেমা দেওয়ার জন্য মরিয়া ছিল। তেমনটিই ঘটেছে ‘আ মাইনক্রাফট মুভি’র ক্ষেত্রে। যদিও ওয়ার্নার ব্রস জানত না এমন কিছু ঘটবে। কারণ, কয়েক বছর আগেই তাদের সিনেমাটি মুক্তির তারিখ ঘোষণা করা হয়েছিল।

জনপ্রিয়তা পেয়েছে ‘আ মাইনক্রাফট মুভি’ সিনেমাটি। ছবি: আইএমডিবি

আলোচিত ভিডিও গেম
আগেই বলা হয়েছে, সিনেমাটি সর্বাধিক বিক্রীত ভিডিও গেম অবলম্বনে নির্মিত। বিভিন্ন সময় ভিডিও গেম থেকে নির্মিত সিনেমার জন্য বক্স অফিস আয়ে রেকর্ড করা চ্যালেঞ্জিং হয়ে যায়। সেখানে সফল ‘আ মাইনক্রাফট মুভি’। এখন পর্যন্ত ভিডিও গেম থেকে নির্মিত সিনেমার মধ্যে এর আয় রেকর্ড। ওয়ার্নার ব্রসের সিনেমার প্রথম সপ্তাহের আয়ে এখন শীর্ষে এই সিনেমা। প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান থেকে জানানো হয়েছে, সিনেমাটি নিয়ে তাদের কয়েক বছর ধরে পরিকল্পনা করতে হয়েছে। এমনকি সিনেমাটি বানানোর আগে ভিডিও গেমসের ক্রিয়েটর প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেও একাধিকবার বসতে হয়েছে। যেটা চরিত্র বুঝতে অভিনয়শিল্পী ও কলাকুশলীদের সহায়তা করেছে। কারণ, জনপ্রিয় ভিডিও গেম থেকে সিনেমা নির্মাণ করেও এর আগে বক্স অফিসে সেই অর্থে সাড়া মেলেনি। সেখানে চ্যালেঞ্জও মোকাবিলা করতে পেরেছেন পরিচালক জারেড হেস।

সব বয়সী দর্শকদের টেনেছে সিনেমাটি। ছবি: ফেসবুক

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনা
সিনেমা মুক্তির আগে টানা ৯ মাস একের পর এক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মজার ভিডিও দিয়ে প্রচারণা চালানো হয়েছে। যে কারণে এটি দর্শকদের কাছে পৌঁছেছে, যা দর্শকদের হলমুখী করেছে। বর্তমান ট্রেন্ডকে অনুসরণ করে টিকটক, ইনস্টাগ্রাম, এক্স, ফেসবুকসহ সব মাধ্যমে প্রচারণার আলাদা টিম ছিল প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের। ওয়ার্নার ব্রসের কর্মকর্তা এহরম্যান ভ্যারাইটিকে জানান, তিনি নিজেই এসব প্রচারণার ভিডিওতে অ্যাডিক্টেড হয়ে গিয়েছিলেন। যে কারণে একসময় ইনস্টাগ্রাম বন্ধ রাখেন। কিন্তু নিয়মিত প্রচারণার ভিডিও পাঠিয়েছেন। সেটাই এখন তাঁদের প্রতিদিন কোটি কোটি ডলার আয় বাড়িয়ে দিচ্ছে।