
বিশ্বজুড়ে বক্স অফিসে ঝড় তুলেছে জেমস গানের আলোচিত সিনেমা ‘সুপারম্যান’। তবে সিনেমাটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে আলোচনা। অনেক দর্শক মনে করছেন, এটি শুধু সুপারহিরোর গল্প নয়, এতে লুকিয়ে আছে একটি রাজনৈতিক বার্তা। ছবিতে কিছু বিষয় এমনভাবে দেখানো হয়েছে, যা অনেকের কাছে বর্তমান বিশ্বের বাস্তব পরিস্থিতির সঙ্গে মিলে গেছে। বিশেষ করে একটি দৃশ্যকে ঘিরে উঠেছে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের প্রসঙ্গ।
ছবিতে দেখানো হয়েছে দুটি কল্পিত দেশের সীমান্ত–সংঘাত। বরাভিয়া—একটি ধনী ও সামরিকভাবে শক্তিশালী দেশ, যাকে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন করে; আর জারহানপুর—একটি দরিদ্র প্রতিবেশী রাষ্ট্র, যেখানে সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে নারী ও শিশুরা, বারবার বিমান হামলা ও বাস্তুচ্যুতির শিকার হয়। অনেক দর্শকের মতে, বরাভিয়াকে মনে হয়েছে ইসরায়েলের প্রতীক, আর জারহানপুরকে দেখা গেছে ফিলিস্তিনের প্রতিরূপ হিসেবে। আল–জাজিরা, ডন, দ্য নিউ আরবসহ একাধিক আরব গণমাধ্যমে উঠে এসেছে এ প্রসঙ্গ। অপর দিকে, ইসরায়েলপন্থী বিশ্লেষকেরা একে আখ্যা দিয়েছেন ‘ক্যাপ পরা প্রোপাগান্ডা’।
যদিও পরিচালক জেমস গান বা ছবির কোনো অভিনয়শিল্পী সরাসরি ইসরায়েল বা ফিলিস্তিনের নাম উল্লেখ করেননি, তবু দর্শকেরা মনে করছেন, এই সংঘাতই যেন ছবিতে রূপক হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। সিনেমাটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একদিকে যেমন অনেকেই প্রশংসা করছেন, অন্যদিকে তেমনি দেখা গেছে নানা রকম মতবিরোধ ও বিতর্ক।
একজন এক্স ব্যবহারকারী মন্তব্য করেছেন, ‘সত্যি বলতে, সবাই যেটা বলছিল, সেটা একেবারে ঠিক। “সুপারম্যান” সিনেমাটা এতটা স্পষ্টভাবে ইসরায়েলবিরোধী ও ফিলিস্তিনপন্থী ছিল যে বুঝতে কোনো কষ্ট হয়নি। এটা একেবারেই ঢাকঢোল না পেটানো সরাসরি বার্তা।’ আরেকজন লেখেন, ‘“সুপারম্যান” সিনেমাটা এতটা স্পষ্টভাবে ইসরায়েলবিরোধী ছিল, আর সেটা দারুণ লেগেছে।’
অন্য একজন লিখেছেন, ‘মিথ্যা বলব না, “সুপারম্যান”–এর ইসরায়েলবিরোধী দৃষ্টিভঙ্গি ভালো লেগেছে। এখন জানলাম, জেমস গান সত্যিই নিজের জায়গায় অটল।’
পরিচালক জেমস গান অবশ্য জোর দিয়েই বলেছেন, তিনি কোনো বাস্তব দেশকে মাথায় রেখে এই গল্প তৈরি করেননি। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমি যখন চিত্রনাট্য লিখি, তখন মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাত শুরুই হয়নি। তবে আমি সচেতনভাবেই কিছু বিষয় পরিবর্তন করেছি, যেন ছবিটি ওই অঞ্চলের সঙ্গে না মিলে যায়। এটা পুরোপুরি কল্পনার ওপর ভিত্তি করে বানানো।’
পরিচালক আরও জানান, ছবির মূল বিষয়বস্তু রাজনৈতিক বার্তা নয়, বরং নৈতিকতার জটিলতা—একজন সুপারহিরোর ভালো থাকার সংগ্রাম।
ওয়ার্নার ব্রাদার্স ও ডিসি স্টুডিওর ছবিটি পরিচালনা করেছেন জেমস গান। ছবিতে সুপারম্যান হয়েছেন প্রায় আনকোরা ডেভিড কোরেনসোয়েট। তাঁর প্রেমিকা লোইস লেনের চরিত্রে আছেন ‘দ্য মার্ভেলাস মিসেস ম্যাইসেল’ তারকা র্যাচেল ব্রসনাহান।
তথ্যসূত্র: আরব নিউজ