২০২৫ সালের সেরা ২৫ সিনেমা কোনগুলো। কোলাজ
২০২৫ সালের সেরা ২৫ সিনেমা কোনগুলো। কোলাজ

২০২৫ সালের সেরা ২৫ সিনেমা কোনগুলো

বিবিসির চলচ্চিত্র সমালোচক কেরিন জেমস ও নিকোলাস বারবার ২০২৫ সালের সেরা সিনেমাগুলোর তালিকা করেছেন। এ তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে ২৫টি সিনেমা। সিনেমাগুলোর মধ্যে যেমন রয়েছে চোখধাঁধানো অ্যাকশন থ্রিলার, তেমনি রয়েছে পারিবারিক ড্রামা থেকে শুরু করে কমেডি পর্যন্ত। তবে তালিকার ২৫টি সিনেমার ক্রমানুসার কোনো র‍্যাংকিং নয়;

১. ‘হ্যামনেট’
ক্লোয়ি ঝাও পরিচালিত এই মর্মস্পর্শী সিনেমাটি উইলিয়াম শেক্‌সপিয়ারের পুত্র হ্যামনেটের মৃত্যুর গল্প নিয়ে। ম্যাগি ওফ্যারেলের উপন্যাস অবলম্বনে তৈরি এই সিনেমা বইটির মূল ভাব নিপুণভাবে তুলে ধরেছে। ১১ বছর বয়সী হ্যামনেটের মৃত্যু তার শোকাহত মা–বাবার ওপর কী প্রভাব ফেলেছিল, এটিই সিনেমার মূল সুর। তবে সিনেমাটি মেলোড্রামাটিক করেননি পরিচালক। বরং অভিনেতাদের আন্তরিক ও দারুণ অভিনয় এটিকে করে তুলেছে স্পর্শকাতর, মানবিক সিনেমা।

‘হ্যামনেট’ সিনেমার দৃশ্য। আইএমডিবি

১৬ শতকের জীবনযাপনকে ছবিটি এমনভাবে তুলে ধরে যে দর্শক সেই সময়ের ভেতর ঢুকে পড়েন। প্রেম, দাম্পত্য, মৃত্যু, শোক তো ছিলই, তবে সব ছাপিয়ে গেছে ‘হ্যামলেট’ নাটকের হৃদয়বিদারক মঞ্চায়ন। এ সিনেমায় হ্যামনেট যেন সাহিত্যের এক অমর চরিত্র হয়ে ফিরে আসে।

সন্তানকে হারিয়ে মা-বাবার যে শোক, সেটিই সিনেমার মূল গল্প। এতে শেক্‌সপিয়ারের চরিত্রে অভিনয় করেছেন পল মেসক্যালল ও অ্যাগনেসের চরিত্রে জেসি বাকলি।

২. ‘সরি, বেবি’
‘সরি, বেবি’ একটি স্বাধীন ধারার ইন্ডি কমেডি-ড্রামা। এটি লিখেছেন ও পরিচালনা করেছেন ইভা ভিক্টর, যিনি নিজেই প্রধান চরিত্র অ্যাগনেসের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। এটি ইভার প্রথম সিনেমা হলেও এ সিনেমার চলচ্চিত্রভাষা একেবারেই স্বতন্ত্র।

‘সরি, বেবি’ সিনেমার দৃশ্য। আইএমডিবি

সিনেমায় বর্তমান সময়ের অ্যাগনেসকে দেখা যায়। তিনি কলেজে শিক্ষকতা করেন। ঘনিষ্ঠ বন্ধু লিডিয়ার সঙ্গে দেখা হলে তাঁরা দুজন অতীতে ফিরে যান। যখন তাঁরা দুজনেই ছাত্রী ছিলেন এবং সেই সময়ে অ্যাগনেস তাঁর এক অধ্যাপকের দ্বারা যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন। সমালোচকেরা বলছেন, সিনেমাটি বিষণ্ন হতে পারত, কিন্তু নির্মাতার স্পষ্টভাষী এবং নির্মম অথচ ব্যঙ্গাত্মক বর্ণনা সিনেমাটির সুর বদলে দিয়েছে। ফলে সিনেমাটি কমেডির সঙ্গে সঙ্গে বন্ধুত্বের একটি অদ্ভুত, মিষ্টি উপাখ্যানে পরিণত হয়েছে।

৩. ‘ইজ দিস থিং অন’
ব্র্যাডলি কুপার পারফর্মিং আর্টস নিয়ে বানানো তাঁর তিনটি সিনেমার মধ্যে (‘আ স্টার ইজ বর্ন’, ‘মায়েস্ত্রো’, ‘ইজ দিস থিং অন?’)  এটি নিখাদ আনন্দময়। স্ট্যান্ড আপ কমেডিকে ঘিরে সিনেমাটি বানানো হলেও এটি একটি জীবনমুখী গল্প।

লিভারপুলের ব্রিটিশ কমেডিয়ান জন বিশপের জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে অনুপ্রাণিত ছবিটি দাম্পত্যজীবনের কঠিন দিক দেখায়। আবার এটাও মনে করিয়ে দেয়, সম্পর্কগুলো আরেকবার না হয় ঝালিয়ে নিন নতুন করে।

সিনেমায় ব্র্যাডলি কাপুরের সঙ্গে আরও অভিনয় করেছেন উইল আর্নেট, লরা ড্রেন, অ্যান্ড্রা ডে।

‘ওয়ান ব্যাটল আফটার অ্যানাদার’ সিনেমায় লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও। আইএমডিবি

৪. ‘ওয়ান ব্যাটল আফটার অ্যানাদার’
ডার্ক কমেডি, স্পর্শকাতর পারিবারিক গল্প এবং কর্তৃত্ববাদী সরকার ও বর্ণবাদী ষড়যন্ত্র নিয়ে এক রাজনৈতিক গল্প পল টমাস অ্যান্ডারসনের এই সিনেমা। টমাস পিনচনের উপন্যাস ‘ভাইনল্যান্ড’ থেকে ছবির গল্প নেওয়া হলেও, এর নির্মাণ মৌলিক। লিওনার্দো ডি ক্যাপ্রিও এখানে তাঁর সেরা কমেডি পারফরম্যান্সগুলোর একটি দিয়েছেন। তিনি অভিনয় করেছেন অগোছালো, সাবেক বিপ্লবী বব ফার্গুসনের চরিত্রে। বাবা-মেয়ের সম্পর্কের আবেগ এই সিনেমায় যোগ করেছে ভিন্ন মাত্রা।

অনেকে বলছেন, অস্কার পাওয়ার তালিকায় এগিয়ে আছে। তবে সে হিসাব সরিয়ে রাখলেও শিল্প, আবেগ, বিনোদনের মিশ্রণ এ সিনেমা নিঃসন্দেহে এ বছরের অন্যতম সেরা সিনেমার তালিকায় থাকবে। ছন্দময় গতিশীল এ সিনেমা একই সঙ্গে যেমন বিনোদন দেয়, তেমন চিন্তিত করে তোলে। কিছু দৃশ্যে ডার্ক হিউমার মনে রাখার মতো।

এ সিনেমাকে পুরোপুরি রাজনৈতিক সিনেমা বললেও ভুল বলা হবে। গতিময়, রোমাঞ্চকর এক যাত্রা শেষে এটি হয়ে ওঠে এক গভীর মানবিক ছবি। যেখানে মানুষেরাই গল্পের নায়ক আর যাদের জীবন এক বিশৃঙ্খলতার চাকার ভেতর বন্দী।
ডিক্যাপ্রিও ছাড়াও এ সিনেমায় আরও অভিনয় করেছেন টেয়ানা টেইলর, শন পেন, বেনিসিও দেল তোরো, রেজিনা হল।

৫. ‘নো আদার চয়েস’
‘ওল্ডবয়’ ও ‘দ্য হ্যান্ডমেইডেন’ নির্মাতা পার্ক চান-উকের এই ব্যঙ্গাত্মক সিনেমাটি ডোনাল্ড ই. ওয়েস্টলেক উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত। চাকরি থেকে ছাঁটাই এবং চাকরি না পাওয়ার ঘটনা হঠাৎ কীভাবে সিরিয়াল কিলিংয়ের দিকে মোড় নেয়, এ সিনেমাতে তা দেখানো হয়েছে।

‘নো আদার চয়েস’ সিনেমার দৃশ্য। ছবি: আইএমডিবি

এটি এক ভয়ঙ্কর ব্ল্যাক কমেডি, অদ্ভুত চরিত্র, অপ্রত্যাশিত মোড় ও উদ্ভট কল্পনায় ভরা একটি সিনেমা ‘নো আদার চয়েস’। সিনেমাটি পুঁজিবাদ, চাকরি ছাঁটাই ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যুগে মানুষের অসহায়তার প্রশ্ন তোলে।

বছরের অন্যতম সেরা এই সিনেমায় অভিনয় করেছেন লি বাইয়ুং–হান, সন ইয়ে–জিন, পার্ক হি–সুন।

৬. ‘দ্য সিক্রেট এজেন্ট’
এই রুদ্ধশ্বাস সিনেমা রাজনৈতিক থ্রিলারের পরিচিত সব উপাদানকে যেন নতুন করে তুলে ধরেছে। পরিচালক ও চিত্রনাট্যকার ক্লেবার মেন্ডোসা ফিলহো খুব সূক্ষ্মভাবে দেখিয়েছেন, কীভাবে ওপরের স্তরের দুর্নীতিগ্রস্ত সরকারি ক্ষমতা ধীরে ধীরে সাধারণ মানুষের জীবনে নেমে এসে তাদের জীবন নষ্ট করে দেয়।

‘দ্য সিক্রেট এজেন্ট’ সিনেমার দৃশ্য। আইএমডবিি

১৯৭৭ সালের ব্রাজিলের পটভূমিতে সেখানকার স্বৈরশাসনের ভয়াবহ বাস্তবতাকে কেন্দ্র করে এ সিনেমার গল্প এগিয়ে চলে। এ সিনেমায় দেখা যায়, একজন রাজনীতি-নিরপেক্ষ অধ্যাপক, যিনি হঠাৎ করেই সরকার-ঘনিষ্ঠ এক ধনকুবেরের বিরাগভাজন হন। এর ফলে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। ছবিটি অনেকগুলো ভিন্ন ভিন্ন থিম একত্রিত করে, যা পরিচালক হিসেবে ফিলহোর মুনশিয়ানারই পরিচয়।

এ সিনেমায় অভিনয় করেছেন ওয়াগনার মৌরা, কার্লোস ফ্রান্সিসকো, তানিয়া মারিয়া, রোবেরিও ডিওজেনেস, অ্যালিস কারভালহো।

৭. ‘দ্য ভয়েস অব হিন্দ রজব’
যদি শুধু আবেগের তীব্রতা বিচার করা হয়, এবে এই বছর প্রেক্ষাগৃহে মুক্তিপ্রাপ্ত কোনো সিনেমাই ‘দ্য ভয়েস অব হিন্দ রজব’–এর সমতুল্য নয়। তিউনিসিয়ার নির্মাতা কাওথার বেন হানিয়া পরিচালিত ছবিটি ২০২৪ সালের জানুয়ারির এক হৃদয়বিদারক সত্য ঘটনা পর্দায় তুলে এনেছে।

‘দ্য ভয়েস অব হিন্দ রজব’ সিনেমার পোস্টার থেকে। আইএমডিবি

গাজায় পাঁচ বছর বয়সী এক ফিলিস্তিনি শিশু, হিন্দ রজব, একটি ধ্বংস হওয়া গাড়ির ভেতর আটকে পড়ে। সে সময় সে আতঙ্কে ছিল যেকোনো সময় ইসরায়েলি ট্যাংক থেকে চালানো গুলিতে সে মারা যাবে। মৃত্যুর আগের শেষ কয়েক ঘণ্টা সে ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির কিছু স্বেচ্ছাসেবকের সঙ্গে কথা বলেছিল। সিনেমাতে হিন্দ রজবের নিজের আসল কণ্ঠের রেকর্ডিং ব্যবহৃত হয়েছে। ডকুমেন্টারি ও ড্রামার মিশ্রণে এ সিনেমা যেন যুদ্ধের ভয়াবহতা ও নিষ্ঠুরতার যেন এক প্রামাণ্য দলিল!

৮. ‘সেন্টিমেন্টাল ভ্যালু’
নাম শুনে এটিকে আবেগীয় সিনেমা মনে হলেও এটি একটি বাস্তব পারিবারিক গল্প। এ সিনেমায় এক প্রতিভাবান কিন্তু আত্মকেন্দ্রিক চলচ্চিত্র নির্মাতা বাবা এবং তাঁর দুই প্রাপ্তবয়স্ক মেয়ের মধ্যে জটিল সম্পর্ক নিয়ে। বাবা অনেক দেরিতে মেয়েদের সঙ্গে দূরত্ব কমিয়ে মানসিক বন্ধন দৃঢ় করতে চান।

‘সেন্টিমেন্টাল ভ্যালু’ সিনেমার অভিনেত্রী রেনাতে রাইনসভে। এএফপি

এর আগে ‘ওরস্ট পারসন ইন দা ওয়ার্ল্ড’ বানিয়ে চমকে দিয়েছিলেন নরওয়ের নির্মাতা ইয়েকিম ত্রিয়ার; তাঁরই নতুন সিনেমা এটি। এবারের কান উৎসবের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পুরস্কার গ্রাঁ পিজয়ী ছবিতে অভিনয় করেছেন রেনাতে রেইন্সভে। ছবির শুরুতেই অসলোতে বোর্গ পরিবারের বাড়িটি দেখানো হয়। সিনেমাটি দেখতে গেলে মনে হয়, তাঁদের বাড়ির ভেতরে ঢুকে বাবা-মেয়ে, ভাই-বোনের মধ্যকার পারিবারিক সম্পর্ক দেখছেন আপনি।

৯. ‘ইট ওয়াজ জাস্ট অ্যান অ্যাক্সিডেন্ট’
ইরানে পরিচালক জাফর পানাহির সিনেমা বানানো নিষিদ্ধ। দুবার তিনি কারাগারেও গিয়েছেন, ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞাও রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। এমন পরিস্থিতিতে আপনি ভাবতে পারেন, জাফর পানাহি সরকারবিরোধী সিনেমা ছাড়া আর কী বানাবেন?

তবে ‘ইট ওয়াজ জাস্ট অ্যান অ্যাক্সিডেন্ট’ ছবিটি দেখলে একে শুধু ‘সরকারবিরোধী’ তকমা দিতে পারবেন না আপনি। এ সিনেমায় রয়েছে মানবিকতা, আশাবাদ আর প্রাণখোলা হাস্যরস।

‘ইট ওয়াজ জাস্ট অ্যান অ্যাকসিডেন্ট’ সিনেমার দৃশ্য। আইএমডিবি

একজন মেকানিক হঠাৎ এক কথোপকথন শুনে বুঝতে পারে, তার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা লোকটির কণ্ঠ সেই কারারক্ষীর মতো, যে তাকে রাজনৈতিক বন্দি থাকার সময় নির্যাতন করেছিল। সে সিদ্ধান্ত নেয় লোকটিকে অপহরণ করবে। কিন্তু সমস্যা একটাই—কারাগারে থাকার সময় তার চোখ বাঁধা ছিল, তাই সে নিশ্চিত নয় লোকটি তার সেই নির্যাতনকারী কি না। সমাধান হিসেবে সে তেহরানজুড়ে গাড়ি চালিয়ে বেড়িয়ে তার সহ-বন্দিদের কাছে পরামর্শ চাইতে থাকে। এই ভুল-বোঝাবুঝির কমেডির মাধ্যমে পানাহি এমন এক ছবি বানিয়েছেন, যা এ বছর কান চলচ্চিত্র উৎসবে সর্বোচ্চ পুরস্কার স্বর্ণপাম জিতে নিয়েছে।

সিনেমাটিতে অভিনয় করেছেন ওয়াহিদ মোবাস্সেরি, মরিয়ম আফসারি, ইব্রাহিম আজিজি, হাদিস পাকবাতেন, মাজিদ পানাহি।

১০. ‘মার্টি সুপ্রিম’
টিমোথি শ্যালামে এ সিনেমায় এক স্বার্থপর তরুণকে জীবন্ত করে তুলেছেন। যে প্রতারণার মাধ্যমে জীবন চালায় এবং স্বপ্ন দেখে একজন পিং-পং চ্যাম্পিয়ন হওয়ার। সিনেমাটি ১৯৫০–এর দশকের নিউইয়র্ককে ফুটিয়ে তোলে।

‘মার্টি সুপ্রিম’ সিনেমায় টিমোথি শ্যালামে। আইএমডিবি

শ্যালামে এ সিনেমায় মার্টি মাউজার চরিত্রে উচ্চাকাঙ্ক্ষী, বিদ্রূপী, দ্রুত কথা বলা এক যুবককে তুলে ধরেছেন, যে এগিয়ে যেতে এতটাই মরিয়া যে নিজের নিষ্ঠুরতাও সে বুঝতে পারে না। এ চরিত্রকে আপনি ভালোবাসতে পারবেন না, আর পরিচালক যেন এটাই করতে চেয়েছেন। স্পোর্টস ফিল্মের আদলে তৈরি এ চরিত্রভিত্তিক সিনেমার নায়ক আপনাকে না টানলেও এর  প্রাণবন্ত ও উপভোগ্য উপস্থাপনের কারণে আপনি সিনেমা থেকে চোখ সরাতে পারবেন না। এতে শ্যালামে ছাড়া আরও অভিনয় করেছেন গিনেথ প্যালট্রো।

১১. ‘ওয়েক আপ ডেড ম্যান’
২০১৯ সালে ‘নাইভস আউট’ দিয়ে শুরু হয় এই ফ্র্যাঞ্চাইজির যাত্রা, ২০২২ সালে আসা গ্লাস ওনিয়ন-এর পর এবার এসেছে তৃতীয়টি-‘ওয়েক আপ ডেড ম্যান’। গত ১২ ডিসেম্বর নেটফ্লিক্সে মুক্তির পর থেকেই সাড়া ফেলেছে রিয়ান জনসনের সিনেমাটি।

‘ওয়েক আপ ডেড ম্যান’–এর দৃশ্য। আইএমডিবি

এটি এই ফ্র্যাঞ্চাইজির সবচেয়ে উপভোগ্য সিনেমা।  প্রাইভেট ডিটেকটিভ বেনোয়া ব্লাঙ্ক চরিত্রে ড্যানিয়েল ক্রেইগ আবার ফিরেছেন, আগের তুলনায় খানিকটা বেশি গম্ভীর মেজাজে। এবার কৌতুকপূর্ণ সংলাপ আর কৃত্রিম সরলতার ভঙ্গি কম; তবে লম্বা চুল আর নিখুঁতভাবে কাটা থ্রি-পিস স্যুটে তিনি দারুণ মানানসই।

প্রধান সন্দেহভাজন শান্ত, সংবেদনশীল তরুণ যাজক ফাদার জাড ডুপ্লেন্টিসির চরিত্রে জশ ওকনরের অভিনয় বিশেষভাবে মনে দাগ কাটে, ক্রেগের কথা মনে রেখেও এ সিনেমায় পারফরম্যান্সের বিচারের সম্ভবত তিনিই সেরা।

‘ওয়েক আপ ডেড ম্যান’-এর মূল থিম হলো—কেবল নিজের দলকে রক্ষা করার চেষ্টা করলে আমরা বাঁচতে পারব না; একমাত্র উপায় হলো বাইরে থেকে আগত মানুষদের স্বাগত জানানো। ধারালো চিত্রনাট্য আর দুর্দান্ত নির্মাণে এটি তাই হয়ে উঠেছে চলতি বছর মুক্তি পাওয়া এই ঘরানার অন্যতম সেরা সিনেমা। প্রশ্ন একটাই, পরের কিস্তিগুলোতে নির্মাতা কি এই সিনেমাকে ছাড়িয়ে যেতে পারবেন?

১২. ‘ফাদার মাদার সিস্টার ব্রাদার’
এবারের ভেনিস উৎসবে সেরা সিনেমার পুরস্কার পেয়েছে জিম জারমুশের ‘ফাদার মাদার সিস্টার ব্রাদার’।

‘ফাদার মাদার সিস্টার ব্রাদার’ সিনেমার জন্যে ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসবে মার্কিন পরিচালক জিম জারমুশ স্বর্ণসিহং জেতেন। এএফপি

কেট ব্ল্যানচেট অভিনীত ছবিটি তিনটি ভিন্ন দেশের তিনটি গল্প নিয়ে নির্মিত। ‘ফাদার’ অধ্যায়ের পটভূমি যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর-পূর্বাঞ্চল, ‘মাদার’ ঘটেছে ডাবলিনে আর ‘সিস্টার ব্রাদার’ অধ্যায় প্যারিসে। সিনেমাটি মূলত প্রাপ্তবয়স্ক সন্তানদের সঙ্গে তাঁদের মা–বাবা ও একে অপরের সম্পর্ককে কেন্দ্র করে আবর্তিত। ছবিতে কেট ব্লানচেট ছাড়াও আছেন অ্যাডাম ড্রাইভার।

১৩. ‘ওয়েপন্স’
২০২২ সালে মুক্তি পাওয়া ‘বারবারিয়ান’-এর কথা মনে আছে? এয়ারবিএনবি রিজার্ভেশন থেকে শুরু হওয়া সেই অদ্ভুত হরর সিনেমাটি যেন হঠাৎ করেই ঝড় তুলেছিল।

রাতারাতি পরিচালক জ্যাক ক্রেগার হয়ে উঠেছিলেন ভূতের সিনেমার নতুন রাজা। তবে দুর্দান্ত ভিজ্যুয়ালের আড়ালে ‘বারবারিয়ান’-এর গল্পটা ছিল দুর্বল। নির্মাতার দ্বিতীয় সিনেমা ‘ওয়েপনস’ নিয়ে আরও শক্তিশালী হয়ে ফিরেছেন তিনি।

‘ওয়েপনস’ সিনেমার দৃশ্য। আইএমডিবি

জুলিয়া গার্নার, জশ ব্রোলিন, অস্টিন আব্রামস অভিনীত ছবিটির গল্প শুরু হয় নিখোঁজ-রহস্য দিয়ে। এক রাতে একই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১৭ জন শিশু রহস্যজনকভাবে উধাও হয়ে যায়। ধীরে ধীরে সামনে আসতে থাকে অনেক ঘটনা। ছবিতে স্কুলশিক্ষকের চরিত্রে অভিনয় করেছেন এই সময়ের আলোচিত তরুণ অভিনেত্রী জুলিয়া গার্নার।

ক্রেগার একটি চরিত্রকে কেন্দ্র করে গল্প বলেননি। বরং ছবিটি গড়ে উঠেছে ছয়টি অধ্যায়ে, ছয়টি ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে। শিক্ষক, অভিভাবক, পুলিশ কর্মকর্তা (অলডেন এহরেনরাইখ), স্কুল প্রশাসক (বেনেডিক্ট ওয়ং) এবং আরও কয়েকজনের চোখে একই ঘটনাই নতুন ব্যাখ্যা পায়। সব মিলিয়ে বছরের অন্যতম সেরা হরর সিনেমা এটি।

১৪. ‘হায়েস্ট ২ লোয়েস্ট’
স্পাইক লি পরিচালিত এই থ্রিলারে অভিনয় করেছেন ডেনজেল ওয়াশিংটন ও জেফরি রাইট। আকিরা কুরোসাওয়ার ‘হাই অ্যান্ড লো’ থেকে অনুপ্রাণিত হলেও সিনেমাটিজুড়ে স্পাইক লির ছাপ স্পষ্ট। একজন সংগীত ব্যবসায়ীর ছেলেকে অপহরণ ঘিরে কাহিনি, যেখানে বর্ণ, শ্রেণি, নৈতিক দ্বন্দ্ব—সব একসঙ্গে মিশে গেছে তীব্র ভিজ্যুয়াল ও প্রাণবন্ত সংগীতে।

‘হায়েস্ট টু লোয়েস্ট’ সিনেমার দৃশ্য। আইএমডিবি

ডেনজেল ওয়াশিংটন এখানে ডেভিড কিং নামের এক মিউজিক ইন্ডাস্ট্রির বড় ব্যবসায়ীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন, যাঁর কিশোর ছেলে অপহরণের শিকার হয়, যদিও পরে জানা যায় যে অপহরণকারী ভুলবশত কিং-এর সহকারীর (জেফ্রি রাইট) ছেলেকে নিয়ে গেছে।

সে অর্থে, আর্থিক সমস্যায় থাকা কিং কি অন্য কারও সন্তানের জন্য টাকা দেবে? এই নৈতিক দ্বিধা স্পাইক লি ফুটিয়ে তুলেছেন। লির সিনেমায় যেমন থাকে, এখানে বর্ণ ও শ্রেণিবৈষম্যকে সামাজিক সমস্যা হিসেবে গভীরভাবে তুলে ধরা হয়েছে।

১৫. ‘ব্রিং হার ব্যাক’
চলতি বছরের আলোচিত অস্ট্রেলিয়ান হরর সিনেমা ‘ব্রিং হার ব্যাক’ শেষ করার পর পরিতৃপ্তির রেশ থেকে যায় অনেকক্ষণ।

‘ব্রিং হার ব্যাক’ সিনেমার দৃশ্য। আইএমডিবি

কয়েক বছর ধরেই আলোচিত অস্ট্রেলিয়ান যমজ ভ্রাতৃদ্বয় ড্যানি ও মাইকেল ফিলিপো। ইউটিউবে হরর ভিডিও বানিয়ে দুনিয়াজুড়ে শোরগোল ফেলে দিয়েছেন। জিতেছেন বহু পুরস্কার। ২০২৩ সালে তাঁরা সুপারন্যাচারাল হরর সিনেমা ‘টক টু মি’ বানিয়ে চমকে দেন। সানড্যান্স উৎসবে প্রিমিয়ারের পর দুনিয়াজুড়ে হইচই পড়ে যায়। দুই বছরের বিরতির পর এবার তাঁরা হাজির ‘ব্রিং হার ব্যাক’ নিয়ে। এটিও যে হরর সিনেমা।

দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার শহরতলি অ্যাডিলেড। আলো–ছায়া বুঝতে পারলেও আইনগতভাবে অন্ধ পাইপার (সোরা ওং) ও তার বড় ভাই অ্যান্ডি (বিলি ব্যারেট) একদিন বাড়ি ফিরে দেখে, তাদের বাবা বাথরুমে পড়ে আছেন কোনো একধরনের খিঁচুনিতে আক্রান্ত হয়ে। মারা গেছেন অনেকক্ষণ আগেই। দুই ভাই–বোন এতিম হয়। বয়সে প্রায় ১৮ ছোঁয়া অ্যান্ডি ঠিক করে, যত দিন না সে পাইপারের অভিভাবকত্ব আইনিভাবে নিতে পারছে, একসঙ্গেই থাকবে।

কিন্তু অ্যান্ডির ১৮ বছর হওয়ার আগপর্যন্ত সরকারি নিয়মে তাদের একজন পালক মা প্রয়োজন। সেই পালক মা লরা (স্যালি হকিন্স)। অভিজ্ঞ শিশু মনোরোগবিশেষজ্ঞ ও সমাজকর্মী। তার বড়, নির্জন বাড়িতে দুই ভাই–বোন হাজির হয়। এরপরই শুরু হয় একের পর এক ঘটনা।

‘ম্যাটেরিয়ালিস্টস’ সিনেমার দৃশ্য। আইএমডিবি

১৬. ‘ম্যাটেরিয়ালিস্টস’
সেলিন সংয়ের এই চলচ্চিত্র আধুনিক যুগে টাকার সঙ্গে ভালোবাসার সম্পর্ককে নতুনভাবে তুলে ধরেছে। ডাকোটা জনসন এক পেশাদার ম্যাচমেকারের চরিত্রে, যিনি নিজের জীবনে দুই পুরুষের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না।

একদিকে ক্রিস ইভানস-সংগ্রামী অভিনেতা; অন্যদিকে পেদ্রো প্যাসকলকে দেখা গেছে এক ধনকুবের চরিত্রে। ২০২৩ সালে এই নির্মাতার সিনেমা ‘পাস্ট লাইভস’ ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়। এবারেরটি ততটা না হলেও মোটাদাগে পছন্দ করেছেন বেশির ভাগ দর্শক-সমালোচক।

অর্থ সম্পর্কের ক্ষেত্রে কতটা প্রভাব ফেলে, তা নিয়ে নির্মাতা সংয়ের বাস্তবমুখী, ন্যায়পরায়ণ দৃষ্টিভঙ্গি থাকলেও তিনি কখনো প্রেমকে নিয়ে কুণ্ঠিত হননি। সেটারই প্রতিফল ঘটেছে পর্দায়।

১৭. ‘দ্য ব্যালেড অব ওয়েলেস আইল্যান্ড’
ব্রিটিশ কমেডি, যেখানে এক লটারিজয়ী তাঁর প্রিয় ফোক ব্যান্ডকে আবার একত্র করতে চান। টম বাসডেন, টিম কি ও ক্যারি মালিগান অভিনীত ছবিটি আবেগ, নস্টালজিয়া আর হাস্যরসে ভরপুর। জেমস গ্রিফিতের সিনেমাটি চলতি বছরের জানুয়ারিতে সানড্যান্স উৎসবে প্রিমিয়ারের পর ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়।

১৮. ‘লারকার’
সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে ভক্তি থেকে অন্ধভক্তি, সেখান থেকে বিপজ্জনক আসক্তি—এই মনস্তাত্ত্বিক থ্রিলার সেই সম্পর্ককে চমৎকারভাবে বিশ্লেষণ করেছে। একজন দোকানকর্মী হঠাৎ এক পপস্টারের ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন আর তারপরই শুরু হয় ভয়ংকর পরিণতি। এ ছবিও সানড্যান্সের প্রিমিয়ারের পর আলোচনায় আসে। অ্যালেক্স রাসেল পরিচালিত এ সিনেমায় অভিনয় করেছেন থিওডোর পেলেরিন ও আচি মেডেকোয়ে।

‘কম্প্যানিয়ন’ সিনেমার দৃশ্য। আইএমডিবি

১৯. ‘কম্প্যানিয়ন’
আপনার পার্টনারের মধ্যে কোনো ঝুট-ঝামেলা নেই। সে আপনার সব কথা শোনে, ঝগড়া করে না, আর যখন ইচ্ছা তাকে ‘মিউট’ করে রাখা যায়। স্বপ্নের মতো লাগছে?

সিনেমাটি আপনাকে এই স্বপ্ন দেখাবে, আর তারপর এমন দুঃস্বপ্ন দেবে যে আপনি আপনার সাধারণ, ঝগড়াটে পার্টনারকেই জড়িয়ে ধরতে চাইবেন! গল্পটা শুরু হয় খুবই সাধারণ এক দম্পতি আইরিস আর জশকে নিয়ে। বন্ধুদের সঙ্গে এক নির্জন কেবিনে ছুটি কাটাতে যায় তারা।

‘সিনার্স’ সিনেমার দৃশ্য। আইএমডিবি

২০. ‘সিনার্স’
রায়ান কুগলারের নতুন চলচ্চিত্র, যেখানে মাইকেল বি জর্ডান অভিনয় করেছেন যুগল চরিত্রে। ১৯৩২ সালের মিসিসিপিকে পটভূমি করে এটি একদিকে যুগান্তকারী ভ্যাম্পায়ার ফিল্ম, অন্যদিকে বর্ণবাদ, পরিবার, কুসংস্কার আর ব্লুজ সংগীতের আখ্যান। চলতি বছরের অন্যতম আলোচিত এই হরর সিনেমায় বাণিজ্যিকভাবেও সফল হয়েছে। ১০০ মিলিয়ন ডলার বাজেটের সিনেমাটি বক্স অফিস থেকে ৩৬৭ মিলিয়ন ডলার আয় করেছে।

২১. ‘আর্ট ফর এভরিবডি’
শিল্পী টমাস কিনকেডের জীবন ও ক্যারিয়ার ঘিরে নির্মিত এই তথ্যচিত্রে উঠে এসেছে ‘শিল্প’ বলতে কী বোঝায় সেই বিতর্ক। একজন ধর্মভীরু পারিবারিক মানুষ হিসেবে নিজের ইমেজ ধরে রাখলেও তথ্যচিত্রটিতে কিনকেডের অন্ধকার দিকও উঠে এসেছে।

২২. ‘ওয়ারফেয়ার’
অ্যালেক্স গারল্যান্ড ও রে মেনডোজার যৌথ নির্মাণে তৈরি হয়েছে যুদ্ধনির্ভর ড্রামা সিনেমাটি। যুক্তরাষ্ট্রের নেভি সিলস ও আল-কায়েদার মধ্যে এক যুদ্ধের পটভূমিতে তৈরি ছবিটি দর্শককে একেবারে যুদ্ধক্ষেত্রের ভেতরে নিয়ে যায়। কোনো প্রেক্ষাপট বা রাজনৈতিক বক্তব্য নয়, এখানে শুধু যুদ্ধের ভয়াবহতা, যন্ত্রণার আর্তনাদ আর টিকে থাকার লড়াই দেখানো হয়েছে।

‘হোলি কাউ’ সিনেমার দৃশ্য। আইএমডিবি

২৩. ‘হোলি কাউ’
লেখক-পরিচালক লুইজ কুরভোয়াজিয়ের সহজ-সরল অথচ মোহময় অভিষেক ছবিতে জুরা অঞ্চলের এক তরুণকে বোনের দায়িত্ব নিতে হয়, একই সঙ্গে চিজ তৈরির প্রতিযোগিতায় জয়ের স্বপ্নও দেখতে হয়। লুইজ কুরভোয়াজিয়ের–এর প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য ছবি ‘হোলি কাউ’। ফরাসি গ্রামাঞ্চলের দুগ্ধখামারের পটভূমিতে গড়ে ওঠা এই প্রাণবন্ত বেড়ে-ওঠার গল্প দেখায়, কীভাবে মানুষ একে অন্যের পাশে সত্যিকার অর্থে দাঁড়াতে পারে।

ক্লেমঁ ফাভো, লুনা গারেতের অভিনয় মিলিয়ে সাধারণ হয়েও অনেক অর্থেই অসাধারণ এক সিনেমা এটি।

২৪.‘ওয়ালেস অ্যান্ড গ্রোমিট: ভেনজেন্স মোস্ট ফাউল’
চলতি বছরের অন্যতম আলোচিত অ্যানিমেশন সিনেমা। ছবির গল্প শুরু হয় যখন নির্বোধ কিন্তু উদ্ভাবনী মনোভাবের ওয়ালেস এমন এক ‘স্মার্ট’ গ্নোম (যা প্রকৃতপক্ষে একটি ছোট গার্ডেন রোবট) তৈরি করেন, যা নিজের বুদ্ধি বিকাশ করতে শুরু করে।

সেই গ্নোম থেকে বিপজ্জনক পরিকল্পনার সূত্রপাত ঘটে এবং দেখা যায় যে, অতীতের এক প্রতিশোধপরায়ণ চরিত্র—ফিথার্স ম্যাকগ্রো (একচিলতে পেঙ্গুইন) আবারও ফিরে এসেছে। এই পরিস্থিতি থেকেই ওয়ালেসকে বাঁচাতে গ্রমিটকে লড়াই করতে হয় ভয়ংকর শক্তির সঙ্গে, নতুবা ওয়ালেস আর কখনো উদ্ভাবন করতে পারবে না। ছবির পরিচালক নিক পার্ক ও মার্লিন ক্রসিংহাম।

‘অন বিকামিং আ গিনি ফাউল’–এর দৃশ্য। আইএমডিবি

২৫. ‘অন বিকামিং আ গিনি ফাউল’
ছবিটি শুরু হয় এমন এক রাতে, যখন সুয়েলানামের এক তরুণী খালি রাস্তায় গাড়ি চালিয়ে ফিরছিলেন, হ্যালোইন‑ধরনের পার্টি থেকে। পথের মাঝখানে তিনি দেখতে পান তাঁর কাকুর মৃতদেহ। এর পর থেকেই শুরু হয় ধীর গতির গল্প—যেখানে পরিবারের লোকেরা শোকের অনুষ্ঠানে ভিড় করে এবং একে একে গোপন সত্যগুলো সামনে আসে।

সুয়েলার নিজের অনুভূতি, ঘৃণা, পরিবারের চাপ ও ট্রমা—এসব একসঙ্গে ধরা পড়ে সিনেমায়। গিনি ফাউল হলো আফ্রিকান একটি পাখি, যেটি সতর্ক সংকেত দিলে অন্য প্রাণীরা বিপদের আগেই সতর্ক থাকে। সিনেমার শিরোনামটিও একই রূপক দিয়ে পরিবার ও সমাজের সেই ‘নীরব সতর্কতা’ বোঝাতে ব্যবহার হয়েছে। রুনগানো নিয়নি পরিচালিত সিনেমাটি গত বছরের কান উৎসবে আঁ সাত্রে রিগা বিভাগে মনোনীয় হয়েছিল।

জাম্বিয়ার সিনেমাটির প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন সুসান চার্ডি।