অস্ট্রেলিয়ার ভিডিও স্ট্রিমিং বাজার আগামী ছয় বছরে রেকর্ড পরিমাণ বৃদ্ধি পেতে যাচ্ছে। মিডিয়া পার্টনার্স এশিয়ার (এমপিএ) সাম্প্রতিক গবেষণা প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ২০৩০ সাল নাগাদ দেশটির ভিডিওশিল্পের আয় দাঁড়াবে ১২ দশমিক ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকা। বর্তমানে এই বাজারের ৬২ শতাংশই দখল করে আছে অনলাইন স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মগুলো।
গবেষণা তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে অস্ট্রেলিয়ার মোবাইল ও কানেক্টেড টিভি ব্যবহারকারীরা মোট ৭ দশমিক ১ বিলিয়ন মিনিট ভিডিও কনটেন্ট স্ট্রিম করেছেন। এর মধ্যে এককভাবে সবচেয়ে বেশি ৩৩ শতাংশ দখল করে আছে গুগলের মালিকানাধীন ইউটিউব। বৈশ্বিক স্ট্রিমিং জায়ান্ট নেটফ্লিক্স রয়েছে চতুর্থ স্থানে। দেশীয় প্রতিষ্ঠান ফক্সটেল ও নাইন এন্টারটেইনমেন্ট যথাক্রমে দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান ধরে রেখেছে।
ভ্যারাইটির এক প্রতিবেদনে জানা গেছে, ২০১৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত এই খাতের বার্ষিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৫ দশমিক ৬ শতাংশ। এই সময়কালে অনলাইন ভিডিওর বাজার অংশীদারত্ব ৩২ থেকে বেড়ে ৬২ শতাংশে পৌঁছেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, অস্ট্রেলিয়ার ৮২ শতাংশ পরিবারে কানেক্টেড টিভির উপস্থিতি এবং উচ্চগতির ইন্টারনেট–সুবিধা এই প্রবৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করছে।
কথা হয় সিডনিতে ফক্সটেল গ্রুপের সফটওয়্যার কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্সের প্রধান নির্বাহী বাংলাদেশি যুবক ইফতেখারুল আলমের সঙ্গে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘স্ট্রিমিং এখন শুধু বিনোদনের মাধ্যম নয়, এটি অস্ট্রেলিয়ানদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রার অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। আগামী দিনগুলোতে আরও উন্নত প্রযুক্তির সম্প্রসারণ এই বাজারকে আরও গতিশীল করবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি যে ধীরে ধীরে বয়স্ক দর্শকেরাও এই পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নিচ্ছেন এবং অন ডিমান্ড কনটেন্ট দেখার সুবিধায় অভ্যস্ত হয়ে পড়ছেন, ফলে তাঁরা ঐতিহ্যবাহী আইপি বা স্যাটেলাইট টিভি থেকে সরে আসছেন। স্ট্রিমিং এখন শুধু সিনেমা বা টিভি সিরিজের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই, খেলাধুলার হাইলাইটস, স্পোর্টস শো ও লাইফস্টাইল প্রোগ্রামগুলোও দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। ফক্সটেলে আমরা এই পরিবর্তনশীল দর্শক চাহিদা পূরণে আমাদের স্ট্রিমিং পরিষেবাগুলোকে ক্রমাগত উন্নত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যাতে সব ধরনের দর্শকই উচ্চমানের সুবিধাজনক বিনোদন উপভোগ করতে পারেন।’
ভ্যারাইটিকে মিডিয়া পার্টনার্স এশিয়ার (এমপিএ) নির্বাহী পরিচালক বিবেক কৌতোর ভাষ্যে, ‘অস্ট্রেলিয়ার বাজার বিশ্লেষণে আমরা দেখতে পেয়েছি যে গ্লোবাল প্ল্যাটফর্মগুলো তাদের বিশাল ব্যবহারকারীকে ভিত্তি করে বিজ্ঞাপনভিত্তিক মডেলের মাধ্যমে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। তবে স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের প্রিমিয়াম স্পোর্টস কনটেন্ট এবং স্থানীয় প্রোগ্রামিংয়ের মাধ্যমে টিকে আছে।’
যদিও বাজার দ্রুত বাড়ছে, কিন্তু অর্থনৈতিক মন্দা এবং ভোক্তা খরচ কমে যাওয়ার মতো বিষয়গুলো এই প্রবৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।