
প্রায় দুই দশক আগে রেকর্ড করা একটি গান। কিন্তু প্রকাশের জন্য যে শ্রমসাধ্য ভিডিও চিত্র প্রয়োজন, তা করা হয়ে ওঠেনি। অবশেষে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) হাত ধরে সেই গানটি আলোর মুখ দেখল। তিনি চিত্রনায়িকা শাবনূরের ছোট বোন কাজী জাসিকা জারিন ঝুমুর। সিডনিপ্রবাসী ঝুমুর সম্প্রতি তাঁর ইউটিউব চ্যানেলে ‘বাবা’ শিরোনামের এই মৌলিক গানটি প্রকাশ করেছেন।
গানটির একটি বিশেষ প্রেক্ষাপট রয়েছে—মুক্তিযুদ্ধ। গানটি এমন এক কন্যাশিশুর গল্প বলে, যার জন্ম হয়েছিল একাত্তর সালে, ঠিক সেই দিন, যেদিন তার বাবা মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হন। বাবার জন্য কন্যার এই হাহাকার আর গর্বই ফুটে উঠেছে গানে। ২০০৫ সালে রেকর্ড করা এই গানের কথা, সুর ও সংগীত জে কে মজলিশের।
কিন্তু এত বছর পর এই গানের এমন অভিনব প্রকাশ কেন? সিডনিতে প্রথম আলোর সঙ্গে আলাপে ঝুমুর জানান, পুরোটাই বড় বোন শাবনূরের উৎসাহে। তবে এবার প্রথাগত ভিডিও চিত্রের পথে হাঁটেননি তিনি। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্য নিয়েছেন।
ঝুমুর বলেন, ‘একটি পূর্ণদৈর্ঘ্য গানের ভিডিও চিত্র নির্মাণ ভীষণ শ্রমসাধ্য ও ব্যয়বহুল। আমি চেয়েছিলাম প্রতি মাসে একটি গান প্রকাশের যে পরিকল্পনা ছিল, তাতে যেন কোনো বাধা না আসে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এখন বিশ্বজুড়ে সমাদৃত। তাই ভাবলাম, কেন এই প্রযুক্তি ব্যবহার করছি না?’
ঝুমুর জানান, গানটির এই দৃষ্টিনন্দন ভিডিও চিত্রটি তৈরি করেছেন ভারতের একজন শিল্পী। ঝুমুর বলেন, ‘তাকে আমি গানের প্রেক্ষাপট, অর্থাৎ একাত্তর সাল ও একজন শহীদ মুক্তিযোদ্ধার কন্যার আবেগ বোঝানোর চেষ্টা করেছি। তিনি বিষয়টি নিয়ে পড়াশোনা করে এটি নির্মাণ করেছেন। আমি খুবই আনন্দিত যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে গল্পটা সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তোলা সম্ভব হয়েছে।’
ঝুমুরের এই গানে ফেরা এবং নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারের চেষ্টার পেছনেও রয়েছে শাবনূরের নিরন্তর অনুপ্রেরণা। ছোট বোনের গান নিয়ে শাবনূর প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি তো ওকে (ঝুমুর) প্রথম থেকেই জোর করে গানে এনেছি। ওর মধ্যে যে প্রতিভা, আমি চাইতাম মানুষ সেটা জানুক। আমি ওকে সব সময় বলি, তোর শখের বশে হলেও গানটা করা উচিত।’
বড় বোনের সেই উৎসাহেই ঝুমুর এখন নিয়মিত গান প্রকাশ করছেন তাঁর ‘ঝুমুর মেলোডি’ চ্যানেলে। ‘বাবা’ গানটি সেই যাত্রারই নতুন সংযোজন।