সেলিম হায়দার
সেলিম হায়দার

৬৯ বছরের জীবনে ৫১ বছর কেটেছে গিটারের সঙ্গে, মারা গেলেন সেলিম হায়দার

ক্যানসার আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন দেশের নন্দিত গিটারিস্ট সেলিম হায়দার (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে তিনি ঢাকার মগবাজারের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৯ বছর। প্রথম আলোকে খবরটি নিশ্চিত করেছেন ফিডব্যাক ব্যান্ডের সদস্য ফোয়াদ নাসের। সেলিম হায়দারও এই ব্যান্ডের প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদের একজন।

সেলিম হায়দারের ৬৯ বছরের জীবনের ৫১ বছর কেটেছে গিটারের সঙ্গে। দেশের প্রখ্যাত বেশিরভাগ শিল্পীর সঙ্গে বাজিয়েছেন তিনি। মাসখানেক আগে সেলিম হায়দার প্রোস্টেট ক্যানসারে আক্রান্ত হন। এরপর নিয়মিত চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে ছিলেন। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে সম্প্রতি তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত ৩১ অক্টোবর হাসপাতালে ভর্তি করা হয় সেলিম হায়দারকে। ২৪ নভেম্বর হাসপাতাল থেকে বাসায় ফেরেন তিনি। ২৭ নভেম্বর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে আবার হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

সেলিম হায়দার

ফোয়াদ নাসের জানিয়েছেন, আজ শুক্রবার বাদ জুমা ঢাকার হাতিরপুল এলাকার পুকুরপাড় জামে মসজিদে সেলিম হায়দারের জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর তাঁকে আজিমপুর কবরস্থানে সমাহিত করা হবে।

সেলিম হায়দার মূলত লিড গিটারিস্ট। তবে বেজ ও রিদম গিটার, অ্যাকুস্টিক ড্রামস এবং কিবোর্ডেও ছিলেন পারদর্শী। তিনি ফিডব্যাক প্রতিষ্ঠার বাইরেও দেশের বেশির ভাগ শিল্পীর সঙ্গেই গিটার বাজিয়েছেন। সেলিম হায়দারের সংগীত পরিচালনায় দুটি জনপ্রিয় গানের মধ্যে রয়েছে ফিডব্যাকের ‘এইদিন চিরদিন রবে’ ও ‘ঐ দূর থেকে দূরে’।

সেলিম হায়দারের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন সংগীতাঙ্গনের অনেকে। সংগীতশিল্পী রুনা লায়লা শোক প্রকাশ করে লিখেছেন, ‘আজ বাংলাদেশ একজন অত্যন্ত প্রতিভাবান শিল্পীকে হারাল। সেলিম হায়দার গত তিরিশ বছরেরও বেশি সময় ধরে আমার সঙ্গে বাজিয়েছেন। আমরা একসঙ্গে প্রায় পুরো পৃথিবী ভ্রমণ করেছি, অসংখ্য কনসার্ট করেছি—অগণিত স্মৃতি জড়িয়ে আছে আমাদের সংগীতে। তিনি আমার দলের অবিচ্ছেদ্য একজন সদস্য ছিলেন—প্রতিটি সুর, প্রতিটি গান তাঁর ছিল মুখস্থ, আর কাজে অপরিসীম নিবেদিতপ্রাণ ছিলেন। জানতাম, তিনি অসুস্থ। নিয়মিত খোঁজ নিতাম। মন থেকে আশা করতাম, প্রার্থনা করতাম—তিনি সুস্থ হয়ে আবার আমার কনসার্টে বাজাবেন। কিন্তু তা আর হলো না… সেলিম হায়দারকে আমি খুব তাড়াতাড়ি হারালাম। তাঁর চলে যাওয়ায় আমি হতবাক, মর্মাহত। এই আকস্মিক বিদায়ের কোনো সান্ত্বনা খুঁজে পাচ্ছি না।’