ব্যাচেলর পয়েন্টের কয়জন ব্যাচেলর রইল বাকি

‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’ নাটকের জনপ্রিয় চরিত্র ‘হাবু’ তাঁর ব্যাচেলর-জীবনের অবসান ঘটিয়েছেন। ঢাকার বাড্ডার মেয়ে তুলতুল ইসলামকে বিয়ে করে হাবু চরিত্রের চাষী আলমের সংসারজীবনের অধ্যায় শুরু হয়েছে। এর আগে গত বছরের শেষের দিকে এই নাটকের আরেক জনপ্রিয় চরিত্র ‘কাবিলা’ও তাঁর বিবাহিত জীবন শুরু করেন। এরই মধ্যে বাবাও হয়েছেন তিনি। চাষী আলমের বিয়ের অনুষ্ঠানে মজার ছলে বিনোদন অঙ্গনের একজন বলেই ফেললেন, ‘একে একে সব ব্যাচেলররা তো বিয়ে করে ফেলছে। এরপর তো আর কেউ ব্যাচেলর থাকবে না। ব্যাচেলর পয়েন্টের সব বিবাহিতদের নিয়ে অবশ্য পরিচালক চাইলে এবার “ম্যারেজ লাইফ” নামে একটা নাটক বানিয়েও ফেলতে পারেন।’

‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’–এর শিল্পীরা।
ছবি: ফেসবুক

কয়েক বছর আগে ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’ ধারাবাহিকের প্রচার শুরু হয়। পরিচালক কাজল আরেফিন অমি ঢাকা শহরের ব্যাচেলরদের যাপিত জীবন নিয়ে নির্মাণ করেন এই নাটক। টেলিভিশনের পাশাপাশি ইউটিউবে প্রচারের পর নাটকটি জনপ্রিয়তা পায়। নাটকের প্রতিটি চরিত্রও অনেকের মনে জায়গা করে নেয়। এর মধ্যে ‘কাবিলা’ (জিয়াউল হক পলাশ), ‘হাবু’ (চাষী আলম), ‘পাশা’ (মারজুক রাসেল), ‘বোরহান’ (শরাফ আহমেদ জীবন), ‘শিমুল’ (শিমুল শর্মা), ‘অন্তরা’ (ফারিয়া শাহরিন), ‘নাবিলা’ (সাবিলা নূর), ‘নেহাল’ (তৌসিফ মাহবুব), ‘ইভা’ (পারসা ইভানা) উল্লেখযোগ্য। গত এক বছরের মধ্যে ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’ ধারাবাহিকের কাবিলা, হাবু ও অন্তরা বিয়ের কাজটি সেরে ফেলেছেন।

গতকাল শুক্রবার রাতেই নববধূ তুলতুল ইসলামকে ঘরে তুলেছেন চাষী আলম

কাবিলা নামে পরিচিত পলাশ তাঁর বিয়ের কথা শুরুতে গোপন রাখলেও পরে তা জানিয়ে দেন। পলাশের স্ত্রী তাঁর দূরসম্পর্কের খালাতো বোন নাফিসা রুম্মান মেহনাজের সঙ্গে বিয়ের ছবিও প্রকাশ করেন। গত ডিসেম্বরে পলাশ জানান, মাস চারেক আগে নাফিসাদের মিরপুরের বাসায় দুই পরিবারের কাছের কয়েকজনের উপস্থিতিতে পলাশের সঙ্গে তাঁর বিয়ের কাজ সম্পন্ন হয়। এ বছরের জুন মাসে ছেলেসন্তানের বাবা হয়েছেন, খবরটি নিজে থেকে জানিয়েছেন পলাশ।

জিয়াউল হক পলাশ গত বছরের শেষ দিকে নাফিসা রুম্মান মেহনাজকে বিয়ে করেন

২০০৭ সালে ‘লাক্স-চ্যানেল আই সুপারস্টার’ প্রতিযোগিতায় প্রথম রানারআপ হন ফারিয়া শাহরিন। এরপর নাটক আর বিজ্ঞাপনচিত্রে কাজ করেন। মুঠোফোন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বাংলালিংকের ‘কথা দিলাম’ প্যাকেজের বিজ্ঞাপনচিত্র তাঁর পরিচিতি বাড়িয়ে দেয় অনেক গুণ। অভিনয় করেছেন চলচ্চিত্রেও। তবে ১৬ বছরের অভিনয়জীবনে ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’ ধারাবাহিকে অভিনয় করে যে প্রতিক্রিয়া পেয়েছেন, তা অন্য অনেক নাটকে অভিনয় করে পাননি বলে জানান ফারিয়া।

২০২১ সালে ধানমন্ডির বাসিন্দা মাহফুজ রায়ানের সঙ্গে ফারিয়া শাহরিনের বাগদান হয়

প্রথম আলোকে তিনি বলেন,‘এত ভালো রেসপন্স, মনে হয় মিডিয়াতে নতুন এসেছি। এ নাটক প্রচারের পর থেকেই যেখানেই যাই, সবাই আমাকে অন্তরা বলে ডাকে। লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগিতার পর আমি অনেক নাটকে অভিনয় করেছি। এ নাটকের মতো রিঅ্যাকশন পাইনি। খুবই সিম্পল গল্প, মানুষ রিলেট করতে পারে।’ ফারিয়ার ফেসবুক পোস্ট বলছে, তিনি গত ৭ জুলাই বিয়ে করেছেন। তবে তাঁর বর কে, সে বিষয়ে তিনি কিছুই লিখেননি। তবে ২০২১ সালে ধানমন্ডির বাসিন্দা মাহফুজ রায়ানের সঙ্গে তাঁর বাগ্‌দানের খবর প্রকাশিত হয়। একটি কুরিয়ার সার্ভিস প্রতিষ্ঠানে কর্মরত রায়ানের সঙ্গে চার বছর প্রেমের সম্পর্কের পর বাগ্‌দানের সিদ্ধান্ত নেন ফারিয়া। দুই পরিবারের সম্মতিতে তাঁদের বাগ্‌দান সম্পন্ন হয়। অবশ্য বাগ্‌দানের পর দুজনকে একসঙ্গে কোথাও দেখা যায়নি। এমনকি গত ৭ জুলাই ফেসবুকে বিয়েসংক্রান্ত পোস্ট দিলেও বরের সঙ্গে কোনো ধরনের স্থিরচিত্র পোস্ট করেননি।

এদিকে গতকাল শুক্রবার দুই পরিবারের ঘনিষ্ঠজনদের নিয়ে ঢাকার একটি কমিউনিটি সেন্টারে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেছেন হাবু চরিত্রের চাষী আলম। তার আগের দিন রাতে দুজনের গায়েহলুদ অনুষ্ঠান হয়েছে। পারিবারিকভাবে বিয়ে হলেও মেয়ের সঙ্গে চাষীর পরিচয় প্রায় ছয় মাস আগে, উত্তরায়। হঠাৎই এই পরিচয়। মেয়েটি তাঁর অভিনয়ের ভক্ত ছিলেন। পরিচয়ের কিছুদিন পর থেকে দুজনের মধ্যে কথাবার্তা শুরু। মাঝেমধ্যে দেখাসাক্ষাৎও চলে। একটা পর্যায়ে চাষীর পরিবারের অন্য সদস্যরা মেয়েটিকে দেখেন। তাঁদের পছন্দ হয়।

‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’ নাটকের সহশিল্পীদের সঙ্গে পরিচালক কাজল আরেফিন অমি (মাঝে)

নাবিলা চরিত্রের সাবিলা নূর প্রেম করে বিয়ে করেছেন নেহাল সুনন্দ তাহেরকে। ২০১৯ সালে তাঁরা বিয়ে করেন। ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’ ধারাবাহিকের আরেক চরিত্র নেহাল চরিত্রের তৌসিফ মাহবুবের মাধ্যমে সাবিলার সঙ্গে তাঁর বরের পরিচয় হয়। আজ শনিবার দুপুরে ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’ ধারাবাহিকের পরিচালক কাজল আরেফিন অমির সঙ্গে কথা হয়।

আলাপ প্রসঙ্গে তাঁর কাছে যখন বলা হলো, একে একে সব ব্যাচেলর তো বিয়ে করে ফেলছে। আর কে কে বাকি আছে? মজার ছলে উত্তর দিলেন পরিচালক। বললেন, ‘সত্যিই সব ব্যাচেলর বিয়ে করে ফেলছে। বলতে গেলে এখন তো দেখছি জাতীয় ব্যাচেলর মারজুক ভাই (পাশা চরিত্রের মারজুক রাসেল) ছাড়া আর কেউ নাই। শিমুল আর ইভা—ওরা তো এখনো ছোট, ওদের সময় লাগবে। তবে জাতীয় ব্যাচেলরকে বিবাহিত বানাতে গেলে জাতীয় নারী লাগবে। এই নারী খুঁজে পেতে খবর হয়ে যাবে। খুবই ডিফিকাল্ট ব্যাপার।’