আগের ও পরের ছবিতে বাঁধন
আগের ও পরের ছবিতে বাঁধন

বাঁধনের ১৭ কেজি ওজন কমানোর পেছনের গল্প

অভিনয়শিল্পী ও মডেল আজমেরী হক বাঁধন হঠাৎ খেয়াল করেন, তাঁর ওজন বেড়ে ৭৮ কেজিতে গিয়ে ঠেকেছে। ওজন বাড়ার কারণে চিন্তা বাড়ে। এরপর সিদ্ধান্ত নেন, ওজন আর বাড়তে দেওয়া যাবে না। এটাকে নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। শুরু হয় মিশন। সেই মিশনে মোটামুটি সফল হয়েছেন বাঁধন। তবে সময় লেগেছে ছয় মাস। এই ছয় মাসের পরিশ্রমে বাঁধনের ওজন এখন ৬১ কেজি। এতে বেশ ফুরফুরে মেজাজে আছেন এই অভিনয়শিল্পী।

মাশরুর সিদ্দিকী ও আজমেরী হক বাঁধনের সংসারে একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। কয়েক বছর আগে তাঁদের মধ্যকার বৈবাহিক সম্পর্কের বিচ্ছেদ ঘটে। এরপর বাঁধন তাঁর মেয়েকে নিয়ে মিরপুরে তাঁর বাবার বাড়িতে বসবাস শুরু করেন।

আজমেরী হক বাঁধন

রোববার দুপুরে বাঁধন জানালেন, মাঝে চার বছর একটি প্রেমের সম্পর্কে ছিলেন তিনি। ২০২৪ সালের শুরুতে সেই প্রেমের সম্পর্কটা ভেঙে যায়। এরপর সে বছরের আগস্টে ছাত্র–জনতার আন্দোলনে বাঁধনকে বেশ সোচ্চার দেখা যায়। প্রেমের সম্পর্কে ভাঙন এবং জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে দেশের সার্বিক পরিস্থিতিতে বাঁধন মানসিকভাবে হতাশ হয়ে পড়েন। ওই সময়টায় তাঁর ওজন বাড়তে থাকে।

আজমেরী হক বাঁধন

সেই সময়ের কথা মনে করে বাঁধন বললেন, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর এবং দেশের সার্বিক পরিস্থিতি ও আমার ব্রেকআপ—সব মিলিয়ে অন্য রকম একটা জীবন। আমার আবার ওভার ইটিং ডিজঅর্ডার আছে। যখন খাই, প্রচুর খাই। এই প্রচুর খাওয়ার কারণে ওজন বাড়তে থাকল। প্রায় ১৭ কেজি ওজন বেড়ে যায়। অনেক দিন ধরেই বাড়ছিল, কিন্তু কমাতে পারছিলাম না। খেয়েই যাচ্ছিলাম। হঠাৎ মনে হলো যে আসলে ওজনটা নিয়ন্ত্রণে রাখা উচিত। কারণ, কাজও ছিল না। সামনের নির্বাচনের পর কয়েকটা কাজের ব্যাপারে কথাবার্তা হচ্ছে, যেগুলোর প্রস্তুতি নেওয়ারও একটা ব্যাপার আছে। তাই ওজন কমানোটা খুবই জরুরি হয়ে পড়েছে।’

আজমেরী হক বাঁধন

বাঁধন জানালেন, প্রায় ছয় মাসে ১৭ কেজি ওজন কমিয়েছেন। এই সময়টায় চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিয়েছেন। নিয়ম মেনে ব্যায়ামও করছেন। বাঁধন বললেন, ‘আমাকে এক্সারসাইজ করতে হয়েছে। খাবার নিয়ন্ত্রণে আনতে হয়েছে। আমি ভেবেছিলাম, ৪০ বছরের পর ওজন কমানো খুব কষ্ট হয়ে যাবে—যেহেতু এখন আমার ৪৩, তাই এই ভয়টাও কাজ করছিল। তারপরও কমাতে পেরেছি।’

আজমেরী হক বাঁধন

বাঁধন জানালেন, দুটি কাজ শেষ হয়ে আছে। আগামী বছরে এই দুটি কাজ দর্শকের কাছে পৌঁছাবে। বললেন, ‘নির্বাচনের পর সিনেমার কাজ শুরু করব। দুটো কাজ নিয়ে কথাবার্তা চলছে। সময়মতো আমি জানাব।’

আজমেরী হক বাঁধন

ঢাকার মিরপুরে মা-বাবার সঙ্গে থাকেন বাঁধন। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে বিয়ে নিয়ে তেমন কথা হয় না। কেউ তাঁকে বিয়ে নিয়ে কোনো বাড়তি চাপ দেন না। এ ক্ষেত্রে তাঁর পুরো স্বাধীনতা রয়েছে। তবে বাঁধন মাঝে একবার প্রথম আলোকে বলেছিলেন, যদি মনের মতো জীবনসঙ্গী পান, মনে হয় পথচলাটা একসঙ্গে চলতে পারে, এমন ছেলে পেলে তাহলে হয়তো সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। মনের মতো জীবনসঙ্গী খুঁজছেন। বাঁধন বললেন, ‘বিয়ের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। কিন্তু এখনো জানি না, কীভাবে বিয়েটা হবে। কারণ, বিয়ে নিয়ে আমার এত ট্রমা কাজ করে, বিয়েটা আমার জন্য কতটা সুখকর হবে।’

আজমেরী হক বাঁধন।

বিয়ে নিয়ে ট্রমা কাজ করলেও জীবনের সুন্দর সময় পার করছেন বলে জানালেন বাঁধন। প্রেমের সম্পর্কে আছেন এমনটাও শোনা যাচ্ছে। বললেন, ‘আমি এখন জীবনের সবচেয়ে সুন্দর একটা সময় কাটাচ্ছি। কাজ, জীবন ও আমার সন্তান নিয়ে—একটা সুন্দর সময় কাটাচ্ছি। আমার মা–বাবার সঙ্গে সম্পর্ক, আমার ভাইদের সঙ্গে সম্পর্ক—অনেক সুন্দর। আমি সেটা খুবই উপভোগ করছি। প্রেম সুন্দর। আমি প্রেমের সম্পর্কে থাকতে চাই। মাত্র তো প্রেমে পড়লাম, এখন এই সম্পর্ককে যত্ন করতে হবে। খুব শিগগির প্রেমের বিষয়টি প্রকাশ্যে আনব।’