মনের ভাব প্রকাশ করার উদ্দেশ্যে যেসব ধ্বনিসমষ্টি ব্যবহৃত হয়, তাকেই ভাষা বলে। প্রেমের ক্ষেত্রে মনের ভাব প্রকাশে প্রেমিকারাও কিছু ধ্বনিসমষ্টির ব্যবহার করেন, যা প্রেমিকের বুঝে উঠতে সময় লাগে। দেশের আপামর প্রেমিক সমাজের উপকারে প্রেমিকাদের বহুল ব্যবহৃত সেসব ধ্বনিসমষ্টির রহস্য উদ্ঘাটন করতে এগিয়ে এসেছে একটু থামুন

ফেসবুক কিংবা ফোনে কথা বলার একপর্যায়ে আপনার প্রেমিকা বলল, ‘আমি ঘুমাব।’ সুবোধ প্রেমিকের মতো তাঁর কথা শুনে ‘হ্যাঁ’ বলেছেন তো মরেছেন। এমন কোনো ধ্বনিসমষ্টি আপনার কানে আসার সঙ্গে সঙ্গেই ভাবুন বিগত ১০ মিনিটে কী কী কথা বলেছেন। ইতিহাস বলে, এই ১০ মিনিটের কোনো একটা কথা তাঁর মনঃপূত হয়নি। কিছু খুঁজে না পেলে আপনার জন্য আরও বিপদ! শেষ ১০ দিনে আপনি এমন কোনো কাজ করেছেন যা আপনার প্রেমিকার অপছন্দের। বিষয়টা মনে পড়লে তাঁকে বোঝাতে শুরু করুন। দুর্ভাগ্যবশত এখানেও নিজ কৃতকর্মের ভুল না পেলে টাইমমেশিনে চড়ে বসুন। গত ১০ মাসে আপনি এমন কোনো কাজ করেছেন যা হয়তো আপনার প্রেমিকার মনে পড়েছে। এবার বসে পড়ুন নিজের ভুল স্বীকার করার ১০১ পদ্ধতি নিয়ে। ‘সরি’ বলুন, সরির ওপর ওষুধ নাই!
আপনার পরিচিত, পূর্বপরিচিত অথবা ফেসবুকে পরিচিত এশা, দিশা, রিশার বাসা ধানমন্ডি নয়, সে মিরপুরে থাকে। আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে এই উত্তর দিয়ে বিপদ ডেকে আনবেন না। দিশার বাসা ধানমন্ডি নাকি মিরপুর, এটা আপনার প্রেমিকা জানতে চাননি। এই ধ্বনিসমষ্টির ভাবানুবাদ হলো, ‘তোমার ফ্রেন্ড দিশার সাথে তোমার দেখা হয়? তার খোঁজ রাখো তুমি?’ সুতরাং প্রশ্ন শুনেই উত্তর নয়, উত্তরের পরে থাকবে বিস্ময়!
এই কথার উত্তরে ‘হ্যাঁ’ বলার প্রশ্নই আসে না। আবার এমন পরিস্থিতিতে প্রেমিকাকে মিথ্যা প্রমাণ করে ‘না’ বলা যাবে না। হ্যাঁ বা না-এর মাঝামাঝি একটা কথা দিয়ে শুরু করে আপনি ভাবতে থাকুন। নিশ্চয়ই আপনি তাঁর ফেসবুক মেসেজ সিন করার এক মিনিট পর রিপ্লাই দিয়েছেন অথবা ফোনে কথা বলার সময় প্রতি-উত্তরে কেবল হ্যাঁ/ হুম বলে গেছেন। অতএব এমন কেয়ারিং কথা শুনে খুশিতে লাফিয়ে উঠবেন না, ভুল খুঁজে বের করুন এবং সমাধান করুন।
একটু ধৈর্য ধরুন। প্রথমবারের মতো প্রেমিকার মুখে নিজের প্রশংসা শুনে খুশিতে গদগদ হয়ে উঠবেন না। চুপচাপ নিজের ফেসবুকে ঢুকে দেখে নিন, আপনার প্রোফাইল পিকচারে লাভ রিঅ্যাকশন দিয়েছেন কে বা কারা। অথবা কমেন্টে আপনার ছবির প্রশংসা করেছেন কোন মহীয়সী? এমন কিছু হলেই দেরি না করে এক্ষুনি আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট সাময়িক বন্ধ করে রাখুন।
সামনাসামনি এ ধরনের বাক্য শোনামাত্র আশপাশে তাকিয়ে সময় নষ্ট করবেন না। ‘সরি’ বলে এ যাত্রায় বেঁচে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকলে স্বীকার করুন কিছুক্ষণ আগে আপনি তাঁর অপছন্দের কাজটি করে এসেছেন এবং এই ধূমপান নিয়ে এর আগে আপনাকে অসংখ্যবার সতর্ক করা হয়েছিল। বেঁচে যাওয়া নিয়ে সংশয় থাকলে দেরি না করে এক্ষুনি চলে যান নিকটস্থ চুইংগাম বা মিনারেল ওয়াটারের দোকানে, সঙ্গে মনে মনে শপথ করুন, আর কখনো এই বোকামি করবেন না। মনে রাখবেন, ধূমপান যেকোনো সম্পর্কের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর!
ঝগড়া-পরবর্তী এই বাক্যটি দ্বারা আপনাকে তাঁর অসুস্থতা বোঝানো হয়নি। ঝগড়ায় হেরে গিয়ে চুপচাপ বসে থেকে সাধু সাজার বৃথা চেষ্টা করছেন আপনি। এতক্ষণেও আপনি নিজের দোষ স্বীকার করেননি, সরি বলেননি। আপনার অসীম সাহস দেখে প্রেমিকার সুস্থ মাথাটা ব্যথা করবেই। পেইন কিলার নয়, আপনার ভুল স্বীকারই হতে পারে তাঁর সুস্থতার একমাত্র ওষুধ।