
বৈচিত্র্যময় খাবারের জন্য পুরান ঢাকার তুলনা হয় না। খাওয়া শেষে অনেকে মুখে পোরেন মিষ্টি পান। তাতে মসলা থাকে ৪০ থেকে ৫০ রকমের। তবে পুরান ঢাকার এই মিষ্টি পানে বৈচিত্র্য আনতে আগুন জ্বালিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে বেশ কবছর ধরে। এই ‘আগুন পান’ পাওয়া যায় নাজিরাবাজার এলাকায়। দোকানিরা জানান, আগুন পানের চল প্রথম শুরু হয় ভারতের দিল্লিতে। ঢাকায় কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া শিক্ষার্থীরাই এই পানের প্রধান ক্রেতা।
সাধারণ আগুন পানের দাম ৪০ টাকা, আর বিশেষ পানের দাম ৫০ টাকা। শুধু আগুন পান বিক্রি করেই কোনো কোনো দোকানি দিনে আয় করেন দেড় থেকে দুই হাজার টাকা।
কিন্তু পানে আগুন জ্বালিয়ে পরিবেশন কেন? পুরান ঢাকার পানবিক্রেতা জুয়েল বলছিলেন, ‘পানের উপাদানগুলোতে আগুন দিলে উপাদানগুলো ভালোভাবে মিশে যায়। “স্মোকি ফ্লেভার” তৈরি হয়। এই স্বাদ অন্যান্য পান থেকে আলাদা।’
আলাউদ্দিন রোডে আগুন পান বিক্রি হয় জলিলের পানের দোকান ও ইয়াসিন পান বিতানে। ইয়াসিন পান বিতানের বিক্রেতা মো. ইয়াসিন বলেন, ‘শৌখিন মানুষেরাই এই পান খায়। দিনের চেয়ে রাতে এই পান বিক্রি হয় বেশি ।’
আগুনসহ পান মুখে দিলে কেমন লাগে জানতে চাইলে এক ক্রেতা বলেন, ‘পান মুখে দিলেই আগুন নিভে যায়। তখন গরম গরম খাবারের যে স্বাদ পাওয়া যায়, পানেও সে স্বাদ লাগে।’
তবে ঢাকা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ খান আবুল কালাম আজাদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘সাধারণত গ্লিসারিন পার পটাশিয়াম ও পানির মিশ্রণে এ ধরনের আগুন তৈরি হয়। এ উপাদানগুলো বেশি মাত্রায় থাকলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে জ্বলে। কিন্তু পানে এ মাত্রা কম থাকায় লাইটার দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে দিতে হয়। মানুষের শরীরের ভেতরের স্বাভাবিক তাপমাত্রার চেয়ে আগুন পানের তাপ বেশি থাকবে। সে ক্ষেত্রে মুখের ভেতরের কোষগুলো পুড়ে যেতে পারে। নিয়মিত খেলে ক্যানসার হতে পারে খাদ্যনালিতে। কাজেই আগুন পান মুখে দিতে সাবধান।’