তারকা

কাজের ফাঁকে নায়িকারা

একবার এক ভক্ত এক তারকাকে প্রশ্ন করে বসলেন, ‘আমিও আপনার মতো জনপ্রিয় হতে চাই, কীভাবে হতে পারব?’ সে তারকা উত্তর দিয়েছিলেন, ‘জনপ্রিয় হওয়াটাই আমার পেশা। কাজ শেষে যখন ঘরে ফিরি, তখন কিন্তু আমি সেই সাধারণ একজন মানুষ।’ কাজের ফাঁকে যে সময়টা তাঁরা পান, সেই সময়টা একান্ত নিজের আনন্দের জন্যই কাটান। গত সংখ্যা নায়কদের অবসরের কাজ নিয়ে করা হয়েছিল। এই সংখ্যা নায়িকাদের নিয়ে।

ঐশ্বরিয়া ও তাঁর মেয়ে আরাধ্য
ঐশ্বরিয়া ও তাঁর মেয়ে আরাধ্য

ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন
মাস দুয়েক আগে পোস্ট করা এক ছবিতে গোটা বচ্চন পরিবারকে মালদ্বীপে নৌ-ভ্রমণের ছবিতে দেখা গেছে। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সময়টা যে ভালোই কেটেছে, তা ছবি দেখেই বোঝা যায়। তাঁকে কিছুটা ‘হোমসিক’ বলা চলে। পরিবার, বন্ধুবান্ধবের সঙ্গ সবচেয়ে ভালো লাগে তাঁর। অনেক আগের কথা। শুটিংয়ের জন্য লন্ডনে থাকতে হয়েছিল মাস দশেক। খুব আফসোস করে ঐশ্বরিয়া রাই বলছিলেন, দেশের সেই সবুজ প্রকৃতি ছেড়ে শীতের এই ধূসর সময়গুলো কাটবে কীভাবে! সেই পরিবারের নতুন সদস্য আরাধ্য। তাঁদের প্রথম সন্তান। আরাধ্যর সঙ্গেই এখন সময় কাটছে বেশি। এর বাইরে অবশ্য কিছু কিছু দাতব্য কাজের সঙ্গে জড়িত। লরিয়াল প্যারিসের দূত তিনি। সেই সুবাদে মাঝেমধ্যে ঘুরতে হয় নানা দেশে। কাজের সময়টা বাদ দিলে খুব আনন্দেই থাকেন বলে জানিয়েছিলেন গত কান চলচ্চিত্র উৎসবে গিয়ে। এর বাইরে গোটা পরিবারের সঙ্গে যেকোনো খেলা খুব উপভোগ করেন।

বাচ্চাদের সঙ্গে অ্যাঞ্জেলিনা জোলি

অ্যাঞ্জেলিনা জোলি
ব্র্যাঞ্জেলিনা জুটি মোটামুটি প্রতিজ্ঞা করেই বলেছেন তাঁদের সন্তানের দেখভালের জন্য অভিনয় কমিয়ে দেবেন তাঁরা। দিয়েছেনও তা-ই। এখন তাঁদের ক্যামেরার সামনে কম দেখা যায়, ছয় সন্তানের সামনে বেশি। সুতরাং বলা যায়, সন্তানের সঙ্গেই কাটছে তাঁদের বেশির ভাগ সময়। এর ফাঁকে সময় পেলে বেরিয়ে পড়েন, সবাই একসঙ্গে। বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় এই পরিবারের ছুটি কাটানোর অসংখ্য ছবি আছে। একবার অদ্ভুত এক কথা জানালেন অ্যাঞ্জেলিনা জোলি। ছোটবেলা থেকে নাকি তাঁর মায়ের সঙ্গে ড্যাগার নামের ধারালো অস্ত্র সংগ্রহ করার শখ তাঁর। এখনো সংগ্রহ করেন, এমনকি সন্তানদের মধ্যেও তা ছড়িয়ে দিয়েছেন।

দীপিকা পাড়ুকোন

দীপিকা পাড়ুকোন
প্রতিবছর হিট সব ছবি উপহার দেওয়া যেন দীপিকার অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। তিনি কাজ করেও যাচ্ছেন নিরলস। তারপরও কিছুটা সময় অন্তত বিশ্রামের জন্য তাঁর দরকার। তবে কাজ না থাকলে বাবার কাছে চলে যান বলে এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন দীপিকা। এমনকি কাজের চাপ বেশি থাকলেও মাঝেমধ্যেই বাবাকে দেখতে যান। এ ছাড়া একসময় ব্যাডমিন্টনকে পেশা হিসেবে নিয়েছিলেন, এখন সে সময় পান না। কিন্তু নেশাটা থেকে গেছে।

ক্রিস্টেন স্টুয়ার্ট

ক্রিস্টেন স্টুয়ার্ট
বেশ কম বয়সেই অভিনয়ে ক্যারিয়ার শুরু করেন ক্রিস্টেন স্টুয়ার্ট। এ নিয়ে নাকি কিছুটা আক্ষেপও করেছেন। নিজের পছন্দ-অপছন্দ-প্রতিভা জানার আগেই অভিনয়ে জড়িয়ে পড়েন। এ জন্য দীর্ঘদিন অভিনয় থেকে দূরে থাকার ঘোষণা দিয়েছিলেন শুধু নিজের আনন্দের জায়গাটা খুঁজে বের করার জন্য। শেষ পর্যন্ত অবশ্য অভিনয় ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেননি। তবে অন্যান্য সময়টা ‘অন্য রকমের’ শিল্পের সঙ্গে কাটাবেন বলেছিলেন। ঘর যেখানে হৃদয় সেখানে বলে যে কথা আছে, তা কিন্তু ক্রিস্টেনের জন্য শতভাগ সত্যি। সময় পেলেই ছুটে যান বাবা-মায়ের কাছে। সময়টা তখন ভালোই কাটে তাঁর। তবে সেই হৃদয়টা মাঝেমধ্যে অন্য কাউকে দিয়ে বসেন। টোয়ালাইট সিরিজে অভিনয়ের পর রবার্ট প্যাটিনসনের সঙ্গে দেখা যেত। এখন অবশ্য লুকোচুরি চলছে, নিশ্চিত করে বলা মুশকিল।

ক্যামেরন ডিয়াজ

ক্যামেরন ডিয়াজ
একবার ঘোষণা দিয়ে বসলেন, আগামী এক বছর কোনো কাজ নয়। সময়টা শুধুই নিজের জন্য। তা-ই করলেন। সেবার বলেছিলেন, ‘নিজেকে খুব ভালোবাসি আমি, এমনকি ভালোবাসা জিনিসটাও ভালোবাসি আমি।’ বোঝা গেল, একা একা নিজের সঙ্গে সময় কাটানো তাঁর খুব পছন্দের। সেই ১৯৯৪ সালে শুরু, এখন পর্যন্ত এমন কোনো বছর নেই যে বছরে ক্যামেরন ডিয়াজ অভিনীত অন্তত একটি চলচ্চিত্র প্রকাশ হয়নি। অবসরটা তাই কমই পান। যা পান, তা নিজের জন্য যে রাখবেন, সেটাই স্বাভাবিক। তাই বলে স্থবির জীবন কিন্তু ক্যামেরনের পছন্দ না। ‘যখন কাজ থেকে ছুটি পাই, তখন সময়টা বাইরে কাটাই। স্নো-বোর্ডিং এ ক্ষেত্রে চমৎকার কাজ দেয়—পর্বতচূড়া থেকে ভূমি না ছুঁয়ে নেমে আসার যে গতি তা আমাকে সব সময় রোমাঞ্চিত করে’—অনেকটা রোমাঞ্চিত হয়েই বলেছিলেন গ্যাংস অব নিউইয়র্ক তারকা।

সূত্র: দ্য রিচেস্ট, ভ্যানিটি ফেয়ার, টাইমস অব ইন্ডিয়া।