Thank you for trying Sticky AMP!!

জাগো বাহে কোনঠে সবায়

>
সৈয়দ শামসুল হকের বুড়িগ্রামের বাড়ি

বছরে দুই-একবার জন্মভূমির মায়ার টানে বাড়িতে ফিরে আসতেন আর পুরো বাড়ি ও শহর ঘুরে স্মৃতি হাতড়ে বেড়াতেন
কুড়িগ্রাম পুরোনো শহরে থানাপাড়ার মোড়ে আধা পাকা টিনের চালাটি যে কেউ দেখলে বুঝে নেবে এটা একটা পুরোনো বাড়ি। আর এই বাড়িতেই দেশবরেণ্য সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হকের জন্ম, শৈশব ও কৈশোরে বেড়ে ওঠা। এই বাড়িতেই লেখার উন্মেষ ঘটে সৈয়দ শামসুল হকের। বাড়ির কাঁঠাল কাঠের দরজা-জানালা আর জানালার পাশে বৃক্ষরাজি যেন তাঁর অনেক সাহিত্যকর্মের সঙ্গী হয়ে আছে। বর্তমানে বাড়িতে তাঁর ছোট ভাই অ্যাডভোকেট সৈয়দ আজিজুল হক পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন।

সৈয়দ শামসুল হক (১৯৩৫–২০১৬)

স্থানীয় মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, একসময় (স্বাধীনতার আগে) সৈয়দ শামসুল হকের বাবা ডা. সৈয়দ সিদ্দিক হুসাইন বাড়িটি নির্মাণ করেন। তিনি কলকাতায় থাকতে তৎকালীন কংগ্রেস নেতা কাজী এমদাদুল হকের সহায়তায় কুড়িগ্রামে এসে জায়গাটা কিনে ১৯২৯ সালে বাড়িটি নির্মাণ করেন। তিনি পেশায় হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক ছিলেন। তাঁর পেশার কারণে অনেকে দূরদূরান্ত থেকে চিকিত্সার আশায় বাড়িটিতে ভিড় জমাত। অনেকটা বিনা পয়সায় তিনি চিকিত্সাসেবা দিতেন। একসময় বাড়ির সামনেই গড়ে তোলেন ‘দি হোমিও রইচি মেডিকেল কলেজ’। বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লোকজন আসত কলেজে সেবাশিক্ষা অন্বেষণে। স্বাধীনতার পরও, আশির দশক পর্যন্ত কলেজটি থাকলেও একসময় তা বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তী সময়ে কলেজের জায়গাটিতে গড়ে ওঠে বেশ কিছু দোকানপাট।
বাড়িটির প্রবেশমুখে গেটফুল, ভেতরে হালকা বাগানের সমন্বয়, পাশের বৃক্ষরাজি এবং শহুরে রাস্তা, গলি ও ধরলা নদীর সঙ্গে সৈয়দ শামসুল হকের অনেক স্মৃতি বিজড়িত। তাই বছরে দুই-একবার জন্মভূমির মায়ার টানে বাড়িতে ফিরে আসতেন আর পুরো বাড়ি ও শহর ঘুরে স্মৃতি হাতড়ে বেড়াতেন। মৃত্যুর কয়েক মাস আগেও এসে বাড়িতে ঘুরে গেছেন। ২০১৪ সালে স্বাধীনতার ৪০ বছর পূর্তিতে নাগরিক কমিটি ও প্রেসক্লাব যৌথভাবে পৌরসভার মাঠে তাঁকে নাগরিক সংবর্ধনা দেয়।
দেশবরেণ্য সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হকের সেই আধা পাকা টিনের বাড়িতে তাঁর ব্যবহৃত বেতের চেয়ার, দুধ বা পানি খাওয়ার ঘটি, আলমারিসহ বিভিন্ন জিনিস থাকলেও তা যথার্থ সংরক্ষণ না করায় সেগুলো প্রায় নষ্ট হওয়ার উপক্রম।