Thank you for trying Sticky AMP!!

ডায়াবেটিস রোগীর স্নায়বিক সমস্যা

ডায়াবেটিস রোগীর রক্তে অতিরিক্ত মাত্রার গ্লুকোজ স্নায়ুকোষকে দিনের পর দিন ক্ষতিগ্রস্ত করতে থাকে। ছবি: রয়টার্স

ডায়াবেটিস দেহের অন্যান্য কোষকলার মতো স্নায়ুতন্ত্রকেও আক্রান্ত করে। ডায়াবেটিস রোগীর স্নায়বিক সমস্যা বা ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথি কর্মক্ষমতা হরণ করে জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলতে পারে। ডায়াবেটিস রোগীর রক্তে অতিরিক্ত মাত্রার গ্লুকোজ স্নায়ুকোষকে দিনের পর দিন ক্ষতিগ্রস্ত করতে থাকে। স্নায়ুকোষগুলোর সংযোগস্থল নষ্ট হয়, তাদের আবরণ নষ্ট হতে থাকে। সব মিলিয়ে স্নায়বিক উদ্দীপনা সংবহন বাধাগ্রস্ত হয়।

ডায়াবেটিস নিউরোপ্যাথিতে বহুবিধ উপসর্গ দেখা দেয়। যেমন—
১. ব্যথা বা কামড়ানো
২. হাত পা শিরশির করা
৩. হাত বা পায়ে সুচ ফোটানোর মতো অনুভূতি
৪. হাত বা পায়ের তালু জ্বালাপোড়া করা
৫. নিম্নাঙ্গে ব্যথা
৬. ত্বকের অতিরিক্ত সংবেদনশীলতা
৭. হাত ও পায়ের অনুভূতি হ্রাস পাওয়া বা বোধশক্তি কমে যাওয়া
৮. হাত বা পায়ের অনুভূতি কমে যাওয়ার জন্য সহজে কোনো ব্যথা বা সংক্রমণ অনুভব করতে না পারা ও সহজেই ঘা বা পচনের শিকার হওয়া

এসব উপসর্গের কারণে রোগীর জীবনযাপন ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ ছাড়া পায়ের রক্ত চলাচল ব্যাহত হওয়ার কারণে পায়ে কোনো ঘা, সংক্রমণ বা ক্ষত সহজে শুকায় না, ছড়িয়ে পড়তে থাকে, কখনো পায়ের আঙুল বা পুরো পা কেটে বাদ দিতে হয়।
হাত-পায়ের মতোই আমাদের শরীরের অভ্যন্তরের নানা অঙ্গেও বিস্তৃত আছে নানা ধরনের স্নায়ু। যেমন-আমাদের অন্ত্রে, রক্তনালির গায়ে, হৃৎপিণ্ড বা মূত্রথলির গায়ে হাজার হাজার স্নায়ু কাজ করছে। এগুলোও ডায়াবেটিসের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর ফলে আরও বিচিত্র সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেমন: কোষ্ঠকাঠিন্য, হজমশক্তি দুর্বল হয়ে পড়া, প্রস্রাবের ধারণক্ষমতায় সমস্যা, ওঠাবসায় রক্তচাপের আকস্মিক পরিবর্তনের কারণে মাথা ঘুরে ওঠা, যৌনশক্তি হ্রাস ইত্যাদি। একে বলা হয় অটোনমিক নিউরোপ্যাথি। এগুলোও ডায়াবেটিসজনিতœস্নায়বিক দৌর্বল্যের কারণে ঘটে।

ডায়াবেটিস রোগীর স্নায়বিক সমস্যা প্রতিরোধ করতে বা নিম্নতম পর্যায়ে রাখতে হলে প্রথম কাজ হলো রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করা, আর নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া। যদি কারও স্নায়বিক সমস্যার লক্ষণ দেখা দেয়, তবে শুরুতেই চিকিৎসার ব্যবস্থা করা জরুরি। এ ছাড়া পায়ের বিশেষ যত্ন নেওয়া, সঠিক জুতা নির্বাচন, পায়ের যেকোনো সংক্রমণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসা নেওয়া দরকার। ব্যথা ও নানা রকমের বিরক্তিকর অনুভূতি কমাতে বেশ কিছু ওষুধ ব্যবহার করা যায়।

* ডা. শাহজাদা সেলিম, হরমোন ও ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ এবং সহকারী অধ্যাপক, অ্যান্ডোক্রাইনোলজি বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা
E-mail: selimshahjada@gmail.com