আজ ৫ জুন—বিশ্ব পরিবেশ দিবস। পরিবেশ বাঁচাতে দেশের নানা প্রান্ত থেকে নিজেদের মতো করে কাজ করছেন অনেক তরুণ। পড়ুন তেমন একজনের কথা।

শরীয়তপুরের পদ্মাপাড়ে বেড়ে উঠেছেন সবুজ আহমেদ। শৈশব থেকেই দেখেছেন নদীভাঙনের কারণে পদ্মার পাড়ঘেঁষা কাঁচিকাটা ইউনিয়নের মানুষের সীমাহীন দুর্ভোগ। এই দুর্ভোগই পরিবেশ নিয়ে সবুজকে ভাবতে উদ্বুব্ধ করেছে। নদীভাঙনের কবল থেকে জনজীবন রক্ষার তাগিদ থেকেই ‘ইয়ং সেন্টিমেন্ট ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ’ সংগঠনের যাত্রা শুরু করেন তিনি।
এখন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে মার্কেটিং বিভাগে পড়ছেন সবুজ। নিজ গ্রামের মানুষের জন্য কিছু করার তাগিদ কিন্তু তাঁর হারিয়ে যায়নি। বিশ্ববিদ্যালয়জীবনের শুরুর দিকে শরীয়তপুরে পরিবেশ নিয়ে কার্যক্রম শুরু করেন, যা ইতিমধ্যে শরীয়তপুরের গণ্ডি পেরিয়ে ফরিদপুর, মাদারীপুর, নারায়ণগঞ্জ এবং খুলনায়ও বিস্তৃত হয়েছে। ১৫০ জন স্বেচ্ছাসেবীর মাধ্যমে এখন সংগঠনের কার্যক্রম চলছে।
২০১৯ সালে যাত্রা শুরু করা সবুজ আহমেদের এই সংগঠন জীববৈচিত্র্য রক্ষায় গাছের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে সচেতনতা তৈরিতে কাজ করে যাচ্ছে। শরীয়তপুর ও ফরিদপুর জেলায় তাঁরা রোপণ করেছেন প্রায় পাঁচ হাজার গাছ। খুলনার মতো উপকূলীয় জেলায় প্রাকৃতিক দুর্যোগ নিয়ে দলটির সচেতনতামূলক বিভিন্ন কর্মসূচি আছে। মাদারীপুর, ফরিদপুর ও নারায়ণগঞ্জে পরিবেশ দূষণ নিয়ে জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো তাঁদের কাজের অংশ। জলবায়ু পরিবর্তনের ব্যাপারে সাধারণ জনগণকে ধারণা দেওয়ার জন্য ‘ক্লাইমেট স্ট্রাইক’-এর মতো কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছেন নিয়মিত।
এত সব কার্যক্রমের ফল কিছুটা হলেও পেয়েছে সবুজ ও তাঁর দল। বলছিলেন, ‘পরিবেশ সচেতনতা নিয়ে নানামুখী কার্যক্রমের ফলে আমরা দেখেছি, মানুষ নিজের বাড়িতে ভেষজ গাছসহ অন্যান্য গাছ রোপণ করছে। বজ্রপাত থেকে রক্ষা পেতে তালগাছ লাগাচ্ছে। এ ধরনের খবর আমাদের আনন্দ দেয়।’
সংগঠনের কার্যক্রম সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে চান সবুজ আহমেদ। বললেন, ‘দেশের প্রতিটি জেলায় স্কুল ও কলেজ পর্যায়ের ক্যাম্পেইন করে পরিবেশ নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আরও বেশি সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা আমাদের আছে। এই ক্যাম্পেইনের ফলে একসময় ওরা হয়তো জলবায়ু নিয়ে সচেতন হবে, পরিবেশ দূষণ রোধে সোচ্চার হবে।’