খোঁজ খবর

ননস্টিক হাঁড়ি-পাতিল

রান্নার কাজটি সহজ করতে বাজারে এখন নানা জিনিসপত্র। ননস্টিক হাঁড়ি-কড়াই এগুলোর অন্যতম। রান্না চাপিয়ে দিয়ে খুন্তি হাতে নিয়ে, চোখ বড় বড় করে দাঁড়িয়ে থাকার দায়িত্ব কিছুটা কমে যায় ননস্টিক ব্যবহারের ক্ষেত্রে। রান্নার সময় খাবার যেন পাত্রের সঙ্গে লেগে না যায়, সে জন্য ননস্টিক প্যানে ব্যবহার করা হয় অ্যালুমিনিয়াম, সিলিকন ও বিশেষ ধরনের লোহার উপাদান। এর ওপরে দেওয়া হয় পিটিএফইয়ের (পলিটেট্রাফ্লুওরিথাইলিন) আস্তর। তবে ঠিকঠাক যত্ন না নিলে ননস্টিকের বাসনকোসন নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

বাজারে ননস্টিকের বিভিন্ন তৈজসপত্র পাওয়া যাচ্ছে। ফ্রাইপ্যান, কড়াই আছে দুই ধরনের—ঢাকনাসহ ও ঢাকনা ছাড়া। রুটি ভাজার তাওয়া, দোসা করার তাওয়া, প্রেশার কুকার, রাইস কুকার, কারি কুকার ইত্যাদিও আছে ননস্টিক উপাদানের।

বাজারে আরএফএল টপার, কিয়াম, হ্যাম্পো ইত্যাদি ব্র্যান্ডের ননস্টিক হাঁড়ি-পাতিল পাওয়া যায়। আরএফএলের শাখা রায়ের বাজার ব্যবস্থাপক আলমগীর হোসেন বলেন, ঈদ সামনে রেখে অনেকেই ননস্টিকের তৈজসপত্র কিনছেন। আরএফএলের নানা আকারের তৈজসপত্র রয়েছে। একটু যত্ন করে ব্যবহার করলে অনেক বছর ভালো থাকবে। গরম থাকা অবস্থায় ননস্টিকের তৈজস পানিতে ভেজানো উচিত নয়। চুলায় বেশি আঁচে দীর্ঘ সময় ননস্টিকের প্যান বা হাঁড়ি রেখে দেওয়া যাবে না। ননস্টিকের হাঁড়ির নিচে আগুনটা মধ্যম আঁচেই রাখুন।

৩৮৫ টাকা থেকে ১৬০০ টাকার মধ্যে আরএফএলের বিভিন্ন আকারের ননস্টিকের তৈজসপত্র পাওয়া যায়। ১৮, ২০, ২৪ ও ২৮ সেন্টিমিটার আকারের তৈজসপত্র আছে। ঢাকনাসহ ২৬ সেন্টিমিটার ফ্রাইপ্যানের দাম ১০১৫ টাকা, ঢাকনা ছাড়া ৯৩০ টাকা।

এ ছাড়া বাজারে অন্যান্য ব্র্যান্ডের ফ্রাইপ্যানের আকার ২২ থেকে ৩৬ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে। ২২ সেন্টিমিটারের দাম ১৫০০, ২৪ সেন্টিমিটার ১৫৫০ ও ২৬ সেন্টিমিটার ১৬০০ টাকা। ২৮ সেন্টিমিটার ১৬৫০, ৩০ সেন্টিমিটার ১৭০০, ৩২ সেন্টিমিটার ১৭৫০, ৩৪ সেন্টিমিটার ১৮০০ ও ৩৬ সেন্টিমিটার আকারের প্যানের দাম ১৮৫০ টাকায়।

সসপ্যান পাওয়া যাবে ১ থেকে ১০ নম্বর অনুযায়ী। সসপ্যান ঢাকনাসহ দাম পড়বে ৬০০ থেকে ৩৫০০ টাকার মধ্যে। একসঙ্গে সেট নিলে পাওয়া যাবে ৭০০০ টাকার মধ্যে। ননস্টিক প্রেশার কুকারের দাম পড়বে ২ হাজার টাকা।

পাওয়া যাবে

আরএফএল বেস্ট বাই, রাজধানীর নিউমার্কেট, মৌচাক, গুলশান-১ নম্বর মার্কেট, বায়তুল মোকাররম মার্কেটসহ বিভিন্ন বাজারে।

সতর্কতা

ননস্টিক যেকোনো কিছু ব্যবহারে কিছুটা সতর্ক হতে হবে। সাধারণ হাঁড়ির মতো ব্যবহার করা যাবে না। এতে এর ব্যবহার যোগ্যতা টিকে থাকবে।

রন্ধনবিদ কল্পনা রহমান বলেন, ‘ননস্টিক পাত্রে রান্নার সময় তুলনামূলক কম তেল লাগে। তেল কম দিলেও এতে তলায় লেগে যাওয়ার ভয় থাকে না। তবে ননস্টিকের ওপরে একটি আবরণ থাকে, যা যত্নের অভাবে খুব তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়ে যায়।’

ননস্টিকের তৈজসপত্র দীর্ঘদিন ভালো রাখতে তিনি দিয়েছেন নানা পরামর্শ—

l   তারজালি দিয়ে ননস্টিকের বাসন পরিষ্কার করা যাবে না। এতে ওপরের আবরণ উঠে যাবে। ফোম বা কাপড়ের মাজুনি ব্যবহার করুন।

l   ক্ষারযুক্ত সাবান, বালু, ছাই ইত্যাদি দিয়ে পরিষ্কার করা নিষিদ্ধ। তরল সাবান দিয়ে পরিষ্কার করুন।

l   লোহা বা অ্যালুমিনিয়াম কিংবা অন্য কোনো ধাতব চামচ ব্যবহার করা যাবে না। এতে ননস্টিকে দাগ পড়ে যায়। কাঠ বা প্লাস্টিকের চামচ ব্যবহার করুন রান্নার সময়।

l দীর্ঘদিন ব্যবহারের ফলে ননস্টিক বাসনে দাগ পড়ে যায়। এ দাগ দূর করার জন্য অল্প পানির সঙ্গে সিরকা মিশিয়ে চুলার মৃদু আঁচে কয়েক মিনিট নাড়লে দাগ উঠে যাবে।