
২০১৪ সালে সুইজারল্যান্ডের বিশ্বখ্যাত ঘড়ি নির্মাতা পাটেক ফিলিপ ঘড়িটি বাজারে আনে। প্রতিষ্ঠানটির মতে, গ্র্যান্ডমাস্টার চাইম সিরিজের ঘড়িটি এখন পর্যন্ত তাদের তৈরি সবচেয়ে জটিল নকশার ঘড়ি। যার কাঠামো তৈরি করা হয়েছে ইস্পাত দিয়ে, ঘড়িটির কাঁটাগুলো সোনা দিয়ে তৈরি, আছে বছর নির্দেশক অংশ, অ্যালিগেটরের (এক প্রজাতির কুমির) চামড়া, হাত দিয়ে নিখুঁতভাবে সেলাই করা ফিতা। ঘড়িটির বিশেষত্ব হিসেবে আছে ডায়ালের ওপর লেখা ‘একমাত্র’। ২০১৯ সালে ক্রিস্টি’স নিলামঘরে ঘড়িটির দাম উঠেছিল প্রায় ২৬৩ কোটি টাকা।
হলিউডের চলচ্চিত্র দ্য কালার অব মানির জন্য সেরা অভিনেতার অস্কার পুরস্কার পেয়েছিলেন অভিনেতা পল নিউম্যান। তিনি একসময় রোলেক্স ডেটোনা ৬২৩৯ মডেলের ঘড়িটি নিয়মিত পরতেন। তাই ২০১৭ সালে লন্ডনের ফিলিপস নিলামঘরে যখন ঘড়িটি নিলামে উঠল, ১২ মিনিট দর–কষাকষির পর প্রায় ১৫০ কোটি টাকায় বিক্রি হয়েছিল।
পারপেচুয়াল ক্যালেন্ডার ক্রোনোগ্রাফ (বহু বছরের বর্ষপঞ্জি) পদ্ধতি ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছিল পাটেক ফিলিপ ১৫১৮। ১৯৪০ থেকে ১৯৫০ সালের মধ্যে এ ধরনের ঘড়ি তৈরি হয়েছিল মাত্র ২৮১টি। যার মধ্যে চারটি তৈরি হয়েছিল সম্পূর্ণ ইস্পাত দিয়ে, নিখুঁতভাবে। এ ধরনের ঘড়ি সংগ্রাহকদের কাছে বেশ কাঙ্ক্ষিত। ২০১৬ সালে লন্ডনের ফিলিপস নিলামঘরে প্রায় ৯৪ কোটি টাকায় বিক্রি হয় ঘড়িটি।
২০১৯ সালে প্রায় ৭৬ কোটি টাকায় ক্রিস্টি’স নিলামঘরে ঘড়িটি বিক্রি হয়। এই টু-ক্রাউন হাতঘড়িটি আঠারো ক্যারেট সোনা দিয়ে তৈরি গোলাপি ও সোনালি রংয়ের। মিলানভিত্তিক বিলাসী পণ্যসামগ্রীর বিক্রেতা গোব্বির জন্য বিশেষভাবে তৈরি করা হয়েছিল। ঘড়িটির বিশেষত্ব হচ্ছে, একই সঙ্গে রয়েছে বিখ্যাত দুই ব্র্যান্ড—পাটেক ফিলিপ ও গোব্বির লোগো। তাই সংগ্রাহকদের জন্য এ ঘড়ির নিলামে ওঠার ঘটনা ছিল অপ্রত্যাশিত।
সোথবি’স নিলামঘরে ২০১৪ সালে প্রায় ২০৩ কোটি টাকায় বিক্রি হয়েছিল ঘড়িটি। মার্কিন ব্যাংকার হেনরি গ্রেভস ও তাঁর বন্ধু ১৯২৫ সালে এই পকেট ঘড়িটি তৈরির দায়িত্ব দেন পাটেক ফিলিপকে। পাটেক ফিলিপের দাবি, ডিজিটাল প্রযুক্তি আসার আগে তৈরি ঘড়িগুলোর মধ্যে এটিই সবচেয়ে জটিল নকশার ঘড়ি। এটি তৈরিতে ব্যবহৃত হয়েছিল ১৮ ক্যারেট সোনা, ৪৩০টি স্ক্রু, ১১০ চাকা এবং ৭০টি রত্নখচিত পাথর।
ফিন্যান্সিয়াল টাইমস ও টাইম ম্যাগাজিন অবলম্বনে