পাহাড়-দেশে মাছের ঝরনা

বাঘের মুখ এলাকায় শঙ্খ নদীতে আদিবাসী নারী ও শিশু। রান্না, গোসলসহ সব কাজে তো বটেই, এই নদীর পানিই পান করে স্থানীয়রা। ছবি: তরিকুল ইসলাম জেবিন
বাঘের মুখ এলাকায় শঙ্খ নদীতে আদিবাসী নারী ও শিশু। রান্না, গোসলসহ সব কাজে তো বটেই, এই নদীর পানিই পান করে স্থানীয়রা। ছবি: তরিকুল ইসলাম জেবিন

শহর পেরিয়ে আমাদের বাস ঢুকে পড়ল পাহাড়ের রাজ্যে। উঠছি তো উঠছিই। অনেক সময় ধরে একনাগাড়ে ধীরে চলার পর আমরা পাহাড়চূড়ায় চলে এলাম। দেখলাম, আমাদের পথটাই যেন চড়ে বসেছে পাহাড়ের মাথায়। যত দূর চোখ যায় শুধু পাহাড়ের সারি, থরে থরে সাজিয়ে রাখা। কয়েক শ থেকে হাজার ফুট নিচে একটার পর একটা পাহাড়। যেদিকে চোখ যায় সবুজের ঢেউ। বড়-মাঝারি-ছোট পাহাড় সারির মাঝে মাঝে চোখে পড়ে আদিবাসীদের বসতি। সবুজ পটভূমিতে হঠাৎ হঠাৎ একটা-দুটো ন্যাড়া পাহাড় জুম চাষের জন্য প্রস্তুত। এবার পাহাড় থেকে নামার পালা। একেকটা উঁচু পাহাড় থেকে রাস্তা ধরে নামাও রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা। কোথাও পাহাড়ের মাথায় চড়ে, কোথাও চক্রাকারে পাহাড় প্রদক্ষিণ করে নেমে যাচ্ছে আমাদের বাস। এই প্রকৃতিকে তো ফ্রেমে বন্দী করা যাবে না! তবুও বাসের জানালা থেকে হাত বাড়িয়ে ক্যামেরায় ধরে রাখতে চাইছি পাহাড়ের হাতছানি। আমরা যাচ্ছি পাহাড়-দেশের রাজকন্যা এক মাছের ঝরনা দেখতে।

সকালের মিষ্টি রোদে আমাদের বাস চলছে বান্দরবান থেকে থানচির পথে। রাতভর যাত্রায় ঢাকা থেকে বান্দরবান বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছতে পৌঁছতেই সকাল সাড়ে ছয়টা। কেরানীহাট পার হয়ে পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে পথ পেরিয়ে বাস যখন বান্দরবান শহরে প্রবেশ করছিল, তখন কেবল ভোরের আলো ফুটছে। পাহাড়কে একবার ডানে, একবার বাঁয়ে রেখে, কখনো বা দুই পাহাড়ের মধ্য দিয়ে এগিয়ে চলা এই পথ অপলক তাকিয়ে থেকে দেখছি। পাহাড়সারির মাথা ছুঁয়ে থানচির পথে বয়ে চলা এই রাস্তায় কখনো চড়াই, কখনো উতরাই। মেঘলা, নীলাচল পেরিয়ে বাস এসে থামল চিম্বুক পাহাড়ের ওপর। ১০ মিনিটের বিরতি ঘোষণা করে বাস থেকে নেমে পড়লেন সুপারভাইজার ও চালক। এ সুযোগে বাস থেকে নেমে পড়লাম। চিম্বুক বান্দরবান শহরের কাছের সবচেয়ে উঁচু পাহাড়। এর চূড়ায় একটি অবজারভেশন টাওয়ার ও রেস্টরুম আছে জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে। সেখানে সাধারণের জন্যও বসে বিশ্রাম করার ব্যবস্থা আছে। বাসস্ট্যান্ডের পাশেই একটি সেনা চৌকি। সেনাদের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত শপ-কাম-ক্যানটিন। কুয়াশা না থাকলে চিম্বুকের শীর্ষে দাঁড়িয়ে খালি চোখে অনেক দূরের পাহাড় এমনকি সাগর পর্যন্ত চোখে পড়ে।

বাস থেকে নেমেই দেখি ঘাসের ওপর ঝরা পলাশের ছবি আঁকা। আমাদের বাসটি দাঁড়িয়ে পাতাহীন লাল ফুলে ছাওয়া একটা পলাশ গাছের নিচে। ক্যালেন্ডারের পাতায় কখনো কখনো এমন সাজানো পলাশের ছবি চোখে পড়লেও ইট-কাঠ-পাথরের ঢাকায় তা তো বিরলই বটে। পাহাড়ি বাতাস এমনিতেই কখনো ভুলতে দিচ্ছিল না এখন বসন্ত চলছে, তার ওপর ফাগুনের আগুন-পলাশ! আমরা যেন নতুন করে আক্রান্ত হলাম, ফাগুন হাওয়ায় হাওয়ায় উড়াল দিলাম পাহাড়-দেশের রাজকন্যার খোঁজে।

আমরা থানচি এসে পৌঁছলাম। শঙ্খ নদীর এপারে বিশাল এলাকাজুড়ে ক্যান্টনমেন্ট আর ওপারে উপজেলা প্রশাসন, হাসপাতাল ও বাজার। আগে সেতু ছিল না। নদীর ওপারে বাস যেত না। বর্ষাকালে পাহাড়ি ঢল নামলে বা সাঙ্গুতে স্রোত বেশি থাকলে নদী পারাপার অসম্ভব ছিল। এখন থানচি উপজেলা সদর পর্যন্ত গাড়ি যাতায়াত করে। এরপর আর পাকা সড়ক নেই এ উপজেলায়। কিছু ইট বিছানো এবং কিছু কাঁচা পথ আছে, যেখানে কদাচিৎ গাড়ি চলাচল করে। পাহাড়-দেশের বাকি অংশ একেবারেই দুর্গম। থানচিতে বিদ্যুৎ নেই। ভরসা সৌর বিদ্যুৎ আর জেনারেটর। সাম্প্রতিককালে মুঠোফোন অপারেটর টেলিটক ও রবির নেটওয়ার্ক পাওয়া যায় থানচি ও এর আশপাশের এলাকায়। অন্য কোনো মোবাইল অপারেটরের নেটওয়ার্কও নেই। বাস থেকে নেমেই আমরা ছুটলাম বাজারে আয়েশ করে এক কাপ চা পানের উদ্দেশ্যে। আমরা মানে আমরা দুজন। আমি আর যার প্ররোচনায় পাহাড়ের রাজকন্যাকে দেখতে আসা—তরিকুল ইসলাম জেবিন। একসময় একই প্রতিষ্ঠানে সহকর্মী থাকলেও এখন দুজন দুই বেসরকারি টেলিভিশনে কাজ করি।

থানচির সরকারি কর্মকর্তা সেলিম রেজার সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছিল আগেই। তাঁর সঙ্গে দেখা করলাম। অত্যন্ত আন্তরিকভাবে

থানচি নৌকাঘাট। এখান থেকে দক্ষিণ দিকের পাহাড়ি জনপদে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম শঙ্খ নদীর পাড়ে এই থানচি বাজার। ছবি: তরিকুল ইসলাম জেবিন

আমাদের অভ্যর্থনা জানালেন এবং আমাদের ভ্রমণ পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করে সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দিলেন। সেলিম ভাই জানালেন, থানচি থেকে রেমাক্রি পৌঁছাতে তিন ঘণ্টা সময় লাগবে। নৌকা রিজার্ভ করে আজই যাওয়া সম্ভব। আসা-যাওয়ার খরচ পড়বে ৪-৫ হাজার টাকা। আর যদি স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে যাত্রীবাহী নিয়মিত নৌকায় যাই, তাতে খরচ পড়বে হাজার-বারো শ টাকা। তবে আজ আর এমন কোনো যাত্রীবাহী নৌকা যাবে না, অপেক্ষা করতে হবে আগামীকাল সকাল পর্যন্ত। একদিকে আর্থিক সাশ্রয়, অন্যদিকে স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে যাওয়ার সুযোগ থাকায় আমরা পরদিন সকাল পর্যন্ত থানচিতে থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম।

খানিকটা বিশ্রাম নিয়ে বিকেলে রেস্টহাউস থেকে বেরিয়ে পড়লাম আমরা। লোকজনের কাছে জেনে নিয়ে হাঁটা শুরু করলাম থানচির খ্রিষ্টান মিশনের দিকে। কিছু দূর এগোতেই মূল রাস্তা থেকে লাল ইট বিছানো একটা রাস্তা উঠে গেছে উঁচু পাহাড়ের দিকে। থানচি থেকে বোর্ডিংপাড়া যাওয়ার রাস্তা এটা। রাস্তাই আমাদের চুম্বকের মতো টেনে নিয়ে গেল। ছোট্ট পাহাড়টার চূড়ায় উঠে দেখলাম পাহাড় টপকে আরও সামনে এগিয়ে গেছে এই রাস্তা। একের পর এক পাহাড়ে উঠছি-নামছি, আর এভাবেই উঠে যাচ্ছি আগের চেয়ে বেশি উচ্চতায়। পাহাড়ের তীব্র আকর্ষণে আমরা এগিয়ে চলেছি। কখন যে ইটের রাস্তা শেষ করে কাঁচা পথ ধরেছি, বুঝতেই পারিনি। পথের দুধারে পরিচিত-অপরিচিত অসংখ্য গাছগাছালি। মাঝে মাঝে পলাশের রঙে আগুনের ঝলকানি। আছে আরও কিছু নাম না জানা বুনো ফুলও। হাঁটছি, দেখছি, ছবি তুলছি। একসময় ক্লান্ত হয়ে একটা ফাঁকা ছাউনিতে বসে পড়লাম। ছাউনির একদিকে আমবাগান আর অন্যদিকে জুম চাষের জন্য প্রস্তুত ন্যাড়া পাহাড়। কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেওয়ার পর সম্বিত ফিরল আমাদের। আমরা পথ হারিয়েছি!

সূর্য তখন পশ্চিম আকাশে ডুবুডুবু। যে পথে এসেছি, সে পথে ফিরতে রাত হয়ে যাবে। তাই বিকল্প পথ খুঁজে পেতে হবে। কিছুক্ষণের মধ্যেই একজন আদিবাসীর দেখা পেলাম। ইনি আরও দূরের পাহাড়ে ফিরে যাচ্ছেন থানচি থেকে বাজার সেরে। তিনি জানালেন, সামনের একটি মেঠোপথ চলে গেছে মুরংদের চাইয়ানপাড়ায়। সেখান থেকে কিছুক্ষণ হাঁটলেই আমরা মিশনের রাস্তায় উঠে যেতে পারব। উনি আশ্বস্ত করলেন অন্ধকার নামার আগেই সেখানে পৌঁছানো যাবে। আমরা হাঁটা শুরু করলাম। একে তো সরু একজনের হাঁটা পথ, তার ওপর খাড়া পাহাড় থেকে নেমে আবার একইভাবে পরের পাহাড়ে উঠে গেছে তা। অত্যন্ত সাবধানে পথ চলতে হচ্ছে। কষ্ট হলেও তা গোপন রেখে স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করলাম। কিন্তু আমার সঙ্গীর অবস্থা নাজুক। বারবার পিছিয়ে পড়ছেন, আবার মনের জোরে এগিয়ে আসছেন। কয়েকটি পাহাড় ডিঙিয়ে চোখে পড়ল মুরংপাড়া। আরও আধা কিলোমিটারের মতো দূরত্ব। কিন্তু এ তো আকাশপথের দূরত্ব! পাহাড়ি পথে তা কয়েকগুণ। আমরা ততক্ষণে অনেকটাই হাঁপিয়ে গেছি। হঠাৎই পাহাড়ের নিচে একটি ঝিরিতে এসে পৌঁছলাম। ঝিরিপথে অসংখ্য ছোট-বড় পাথর ছড়ানো-ছিটানো। এর মধ্যে স্বচ্ছ পানি মৃদু স্রোতে বয়ে চলছে। আমরা একটি বড় পাথরে বসে কয়েক মিনিট বিশ্রাম নিয়ে ঠান্ডা পানিতে গা মুছে পানি খেয়ে কিছুটা ধাতস্থ হলাম। গোধূলির শেষ আলোয় চেষ্টা চালালাম ঝিরির সৌন্দর্য ফ্রেমবন্দী করতে। ঝিরির পাশেই একটু ওপরে মুরংপাড়া।

সন্ধ্যা নেমেছে কেবল। মুরংপাড়ায় সন্ধ্যা বাতির প্রস্তুতি বাড়িতে বাড়িতে। মুরং নারী-পুরুষ-শিশুদের বৈকালিক জটলা আমাদের দেখে নতুন রূপ নিল। পাশেই শুকর হাঁটছে। একটি কুকুর আমাদের দেখে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করল। একজন বৃদ্ধ মুরং কুকুরকে নিবৃত্ত করে আমাদের দিকে হাত বাড়িয়ে দিলেন। মুখে বললেন, ‘পয্যতক, পয্যতক’। আমরা হ্যাঁ-সূচক জবাব দিলাম। আরও কিছু জিজ্ঞাসা করলেন তার নিজস্ব ভাষায় যার বিন্দু-বিসর্গ আমরা জানি না! অনেক নারী ও শিশু হাসতে লাগল আমাদের দেখে। হয়তো এ রকম পথ হারিয়ে যাওয়া ‘পয্যতক’ তারা অনেক দেখেছে। মুরংপাড়ায় বাংলা বোঝার মতো

জীবিকার জন্য লাকড়ি জোগাড় করেছেন তিনি। দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়ে এই বৃদ্ধকে একাই বয়ে নিয়ে যেতে হবে এই লাকড়ি। ছবি: তরিকুল ইসলাম জেবিন

কাউকে পেলাম না। মিশন শব্দটি শুনে তারা হাত দিয়ে পথ দেখিয়ে দিলেন। সে পথ ধরে মুরংপাড়া থেকে বেরোতেই দেখি একজন লুঙ্গি-শার্ট পরা বাঙালি। জানালেন, লাকড়ি নিতে এখানে এসেছেন তিনি। লাকড়ির বোঝা নিয়ে এখনই ফিরবেন থানচি বাজারে। তিনি আমাদের পৌঁছে দেবেন। আমরা তাঁর পিছু পিছু হাঁটতে লাগলাম ঝিরিপথ ধরে। ঝিরির পথে পানিতে পা ডুবিয়ে হাঁটলাম অনেক দূর। একসময় সড়কে উঠলাম। রাত আটটায় থানচি বাজারের কাছে আসতেই দেখলাম কয়েকজন লোকসহ আমাদের লোকাল গার্ডিয়ান সেলিম ভাই দাঁড়িয়ে আছেন। জানালেন, উনি আমাদের অনেক খোঁজাখুঁজি করেছেন, মিশন পর্যন্তও গেছেন আমাদের খোঁজে। কোথাও না পেয়ে খুবই টেনশনে ছিলেন। বিপদের আশঙ্কা করছিলেন। আমরা দুঃখপ্রকাশ করলাম ঠিকই কিন্তু সত্যি কথা পাহাড়ে নির্জনতার অনুভূতি ছাড়া আমাদের কিন্তু কোনো ভয় করেনি।

রেমাক্রির যাত্রীবাহী নৌকা আসবে পরদিন সকাল ১০টায়। সে নৌকায় রেমাক্রি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য মং চিং যাবেন আমাদের সঙ্গে। কিন্তু আমাদের মনে হলো, এত দেরি করে গেলে আমরা আর ওইদিন নাফাখুম যেতে পারব না। তাই পরদিন ভোর সাতটায় আমরা নদীর ঘাটে গেলাম রেমাক্রির নৌকার খোঁজে। রেমাক্রির যাত্রীবাহী নৌকা নেই। অন্য কয়েকটি নৌকা থাকলেও তারা শুধু রিজার্ভ যেতেই আগ্রহী। তবে ঘাটে আছেন রুবেল নামের এক বেলুনের ফেরিওয়ালা, বাঁশ আনতে যাওয়া চার ব্যবসায়ী। এঁরা রেমাক্রি পেরিয়ে আরও সামনে যাবেন। তাঁরাও একটি নৌকা জোগাড়ের চেষ্টা করছেন। আমরা সহযাত্রী হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলাম। ঘণ্টা খানেকের চেষ্টায় একটি নৌকা ঠিক হলো। বিজিবি ক্যাম্পে আমাদের নাম-ঠিকানা ও মাঝি আলমগীরের নাম লিখে দিয়ে আমরা নৌকায় চেপে বসলাম। সেলিম ভাই আমাদের থানচি থেকেই বিদায় জানালেন। তিনি তিন্দু ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মং প্রু অং মারমার উদ্দেশে আমাদের হাতে একটি চিঠি দিয়ে দিলেন। চিঠিতে আমাদের থাকা ও গাইড জোগাড় করে দেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে। এছাড়া মং চিং মেম্বারও জানালেন রেমাক্রি বাজারে তাঁর ব্যবস্থাপনায়ও আমরা থাকতে পারব। তার ছেলে উ সি নো ওখানে দাঁতের চিকিৎসক এবং একই সঙ্গে পারিবারিক ব্যবসা দেখাশোনা করেন। পর্যটকদের থাকা-খাওয়া ও গাইড সহায়তা দেয়া দুপরিবারেরই ব্যবসা।থানচি থেকে নৌকা ছাড়ার পর আমরা সব সহযাত্রীর সঙ্গে পরিচিত হলাম। মোদক এলাকার দুই আদিবাসী তরুণ-তরুণী মিলিয়ে যাত্রী মোট আটজন। কিছুক্ষণ চলার পর নৌকার তলায় পাথরে ঘষা লাগার শব্দ হলো। মাঝি আলমগীর জানালেন, নৌকা ফুটো হয়ে গেছে। বাঁশ ব্যবসায়ীদের একজনকে নিয়ে আলমগীর থানচি ফিরে গেলেন অন্য নৌকা আনতে। আমরা নদীর পাড়ে অপেক্ষা করতে লাগলাম। আদিবাসী দুই কিশোরী নদীতে পোনা মাছ ধরছিল। একজন দীপা থানচি, হাইস্কুলে নবম শ্রেণীতে পড়ে, ক্লাসের রোল নম্বর ৩। অন্যজন দারিদ্র্যের কারণে স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। ওদের সঙ্গে আছে ৩/৪ বছরের দুটি শিশুও। নদীর পাড়ে কাপড় আর কাঠি দিয়ে একটা আচ্ছাদন বানিয়ে বাচ্চাগুলোকে ছায়ায় বসিয়ে রেখে ওরা মাছ ধরছে। ওদের মাছ ধরাটা দারুণ। একটা বাটিতে ভাত রেখে বাটিটা মশারির কাপড় দিয়ে বেঁধে রাখা, কাপড়ের মাঝখানে ছোট্ট একটা ফুটো। মাছ খাবার খেতে ভেতরে ঢুকলে আর বের হতে পারে না। মাছ ধরার 

বাকি অংশ পড়তে ক্লিক করুন