বিড়ালছানা

আমি তখন তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র। আমাদের বাসায় পাঁচটা বিড়াল ছিল। একটা মা বিড়াল এবং তার চারটা ছানা। আমার মা বিড়াল সহ্য করতে পারেন না। কিন্তু বিড়ালগুলো এত আদরপ্রিয় যে তাদের ওপর তিনি খুব বেশি কঠোরও হতে পারেন না। আমি যেমন দুষ্ট প্রকৃতির ছিলাম, বিড়ালের বাচ্চাগুলোও তাই। আমাদের দুষ্টুমি দেখে আমার মা এবং বিড়াল মা দুজনেই উদাস চোখে আমাদের দিকে তাকিয়ে থাকত। বিড়াল নিয়ে খেলা করতাম সারা দিন। তাই আমার বড় বোন টিপ্পনী কেটে বলত, আমার শরীর থেকে নাকি বিড়াল বিড়াল গন্ধ বের হয়।
আমার বাইরে বেরোনো নিষেধ ছিল। কারণ আমার মায়ের ধারণা ছিল, বাইরে ছেলেধরা ওত পেতে আছে। আমি বাইরে বেরোলেই আমাকে ধরে নিয়ে যাবে। সর্বোপরি আমার বুদ্ধির প্রতি মায়ের কোনো আস্থাই ছিল না। তাই ঘরে বসে আমার সময় কাটত বিড়ালগুলোর সঙ্গে। আমি এক একটা বাচ্চাকে কোলে নিতাম আর আকাশের দিকে ছুড়ে দিতাম। তারাও সুপারহিরোর মতো ঠিকঠাক নিচে ল্যান্ড করত। আমার কেন জানি মনে হতো, মা বিড়ালটাও আমাকে স্নেহ করত। একদিন সে মুখে করে একটা মরা ইঁদুর নিয়ে এসেছিল। তার ভাবভঙ্গিতে মনে হলো, ইঁদুরটা সে আমার জন্য এনেছে। হয়তো তার স্বল্প বুদ্ধিতে ধারণা হয়েছিল,
এই উপহার পেয়ে আমি খুশি হব।
রিয়াজুল আলম
খুলনা।