>

আজ আন্তর্জাতিক বন্ধু দিবস। গত সংখ্যায় আহ্বান করা হয়েছিল পাঠক ফিচার ‘বন্ধু বন্ধুর জন্য’। ঘোষণায়, বন্ধুর জন্য ফারাজ আইয়াজ হোসেনের প্রাণ দেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছিল। পাঠকদের অসংখ্য লেখা আমরা পেয়েছি। বাছাই করা কিছু লেখা নিয়ে আজকের বন্ধুসভা পাতা। আজ বন্ধু দিবসে বন্ধুসভার পাতাটি উৎসর্গ করা হলো পয়লা জুলাই হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় নিহত ফারাজ আইয়াজ হোসেনকে।
বিপদেই প্রকৃত বন্ধুর পরিচয় মেলে। এমন একজন প্রকৃত বন্ধুর উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হলেন ফারাজ আইয়াজ হোসেন। বন্ধুদের সঙ্গে প্রাণ বিসর্জন দিয়ে প্রকৃত বন্ধুত্বের অনন্য দৃষ্টান্ত হয়ে রইলেন। আমাদের সমাজে মানুষে মানুষে অনেক বন্ধুত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়। গড়ে ওঠে পারস্পরিক প্রীতির বন্ধন। এখনো সমাজে দেখা যায় মিতা পাতা (বন্ধুত্ব) গড়ার রীতি। এক বন্ধু আরেক বন্ধুর আপদে-বিপদে পাশে দাঁড়ায়। বন্ধুত্ব সুলভ হলেও তা রক্ষা করা কঠিন। লোভ, হিংসা, স্বার্থপরতা মানুষে মানুষে বন্ধুত্বের ছেদ ঘটায়। সুসময়ের বন্ধু অনেক পাওয়া যায়। কিন্তু দুঃসময়ের বন্ধু কজন মেলে। দুই বন্ধুর গল্প থেকে আমরা প্রকৃত বন্ধুত্বের পরিচয় পাই। ভালুকের ভয়ে এক বন্ধু নিজ জীবন রক্ষায় অপর বন্ধুকে নিচে রেখে গাছে আরোহণ করে। এখানে প্রকৃত বন্ধুর পরিচয় মেলে? তাই তো বলা হয়, সুসময়ে অনেকেই বন্ধু বটে হয়, অসময়ে হায় হায় কেউ কারও নয়। সমাজের প্রত্যেক মানুষ প্রত্যেকের ওপর নির্ভরশীল। এ নির্ভরশীলতার জন্যই মানুষে মানুষে গড়ে ওঠে প্রীতির বন্ধন। প্রীতি থেকে গড়ে ওঠে বন্ধুত্ব। হীনতা, দীনতা, সংকীর্ণতা, স্বার্থপরতার বিচারে প্রকৃত বন্ধুত্বের বিচার হয় না। নিঃস্বার্থ আত্মিক ও পারস্পরিক প্রীতির বন্ধনে যে বন্ধুত্ব সৃষ্টি হয়, এমন বন্ধুত্বই প্রকৃত বন্ধুত্ব। দুঃখ, বিপদ, লাঞ্ছনা এসব বিরুদ্ধাবস্থাকে মাড়িয়ে যে বন্ধু আরেক বন্ধুর পাশে দাঁড়ায়, সেই তো প্রকৃত বন্ধু। যেমনটি করে দেখিয়ে গেলেন ফারাজ আইয়াজ হোসেন।
মোহনগঞ্জ, নেত্রকোনা