Thank you for trying Sticky AMP!!

ভালোবাসার অণুগল্প গল্প ১

>

‘ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে হিরো আয়োজন করেছিল হিরো ভালোবাসার অণুগল্প। সহযোগিতায় ছিল প্রথম আলো। তিনটি গল্প শুরু করে দিয়েছিলাম আমরা আর শেষ করেছেন অংশগ্রহণকারীরা। আপনাদের কাছ থেকে আমরা হাজারেরও বেশি অসাধারণ কিছু গল্প পেয়েছি। এই গল্পগুলো থেকে সেরা তিনটি গল্প বেছে নিয়েছেন আনিসুল হক।’

হ্যালো...হ্যালো...হ্যালো...
কী হলো...
শুনতে পাচ্ছ না তুমি?
ওরা আজ আমাকে দেখতে আসবে... অনেক কষ্ট করে নীতার ফোন থেকে ফোন করছি
কী হলো...
শুনতে পাচ্ছ না... তুমি...
কিছু একটা তো বলো...

...শুভ চুপ করে আছে।
ওপাশ থেকে মিম অসহায়ের মতো কাঁদতে থাকে।
...হঠাৎ জোরে ব্রেক কষায় বর্তমানে ফিরে এল শুভ।
কত দিন আগের কথা! অথচ এখনো মনের ভেতর মিমের সেই করুণ আকুতি স্পষ্ট শুনতে পায় সে।
পাত্রপক্ষ মিমকে দেখতে আসবে আর পছন্দ করবে না, এমনটা কখনোই হবে না। আগেও কয়েকজন দেখে পছন্দ করে গেছে কিন্তু মা-বাবার সম্মতি ছিল না বলে বিচলিত হতে হয়নি। এবারের কথা ভিন্ন। এই পাত্র মিমের মা-বাবার পছন্দের। সুতরাং এবার ভয় পাওয়ার উপযুক্ত কারণ রয়েছে।

শুভ-মিমের ভালোবাসায় উদ্দামতা ছিল, বাস্তবতাও ছিল। তাদের পাঁচ বছরের ভালোবাসাবাসির জীবনে শুভ মিমকে একবার আর মিম শুভকে একবার বাড়ি ছেড়ে পালাবার প্রস্তাব দিয়েছিল।
শুভ বলেছিল কয়েক দিন আগে।
মিম গম্ভীর স্বরে বলেছিল, ‘৫ বছরের ভালোবাসার জন্য আমাকে ২৩ বছরের ভালোবাসার মানুষগুলোকে ছেড়ে যেতে বলছ?’
-‘তুমিও বলেছিলে একদিন, মনে আছে?’
-‘আছে। সেই উদ্দাম ভালোবাসা আর যুক্তিহীন আবেগের সময় আমরা পেরিয়ে এসেছি।’
শুভ জানে মিম সবকিছু ভেবেই কথাটা বলেছে। সে থাকে মেসে। বউ নিয়ে উঠবে কোথায়? নেই কোনো চাকরি। টিউশনির টাকায় বিয়ে? শুনলে সবাই পাগল বলবে। নিজেরই চলা মুশকিল, সেখানে আবার বিয়ে!

সিঙ্গাপুরে আরও দুদিন থাকার কথা ছিল। হঠাৎই ফিরে আসার টিকিট কাটল শুভ। স্ত্রী-পরিবারকে কিছু জানাল না। এয়ারপোর্টে চেক-আউট করে বের হতে একটা বেজে গেল। বাসায় গাড়ির জন্য বলেনি। গাড়ি এখন মেয়েকে নিয়ে স্কুলে। উবার ডাকল শুভ।
আজ চোদ্দই ফেব্রুয়ারি, ভালোবাসা দিবস। সেদিনও তা-ই ছিল। তবে তখনো এই দিবস অতটা জনপ্রিয় হয়নি। ফাগুনের আগুনলাগা বিকেলে মিমকে দেখতে আসবে ‘সুপাত্র’, যার তুলনায় শুভ পাত্র হিসেবে ‘কু’ না হলেও যথেষ্ট ‘সু’ নয়।

এত দিন পর পুরোনো স্মৃতি মনে পড়ায় শুভ কিছুটা ভাবাবেগে ডুবেছিল। উবার চলে এসেছে তাঁর স্ত্রীর স্কুলে। ক্লাস শেষ, পরিচিত দারোয়ান, সরাসরি টিচার্স রুমে গেল সে।

‘হ্যালো ভ্যালেন্টাইন!’
‘তুমি!’ শুভর স্ত্রী চমকে উঠল।
‘ইয়েস, ওয়ান অ্যান্ড অনলি।’
সাথে আনা ফুলগুলো বাড়িয়ে ধরল শুভ।
হাসিমুখে হাত বাড়িয়ে ফুল নয়, ফুলওয়ালার হাতটা ধরল মিম।
যে হাত ধরে ২০ বছর আগের এক সন্ধ্যায় অনিশ্চিতের পথে পা বাড়িয়েছিল তারা একসাথে।