মনের বাক্স

তোমার কাছে কী অপরাধ করেছি

নূর, আমি জানি, তোমাকে কোনো দিন পাব না। কিন্তু তোমাকে ভুলতেও পারছি না। এটা আমার পক্ষে আর কোনো দিন সম্ভব হবে না। বড্ড বেশি ভালোবেসে ফেলছি তোমাকে। আমি প্রথম দেখেই তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছিলাম। আর আমি তোমাকে ভালোবাসি, সেটা বোঝানোর জন্য তোমার পিছু পিছু তোমার বাসা পর্যন্ত যেতাম। কিন্তু তোমার আব্বু তো তোমাকে সাইকেলে করে প্রাইভেট পড়তে নিয়ে আসত আর নিয়ে যেত। এতে আমার খুব কষ্ট হতো, কারণ আমি তো তোমাকে বেশিক্ষণ দেখতে পাব না, আর পিছু পিছু যেতে পারব না। হঠাৎ একদিন দেখি তুমি একা হাঁটতে হাঁটতে বাসায় যাচ্ছিলে। আমিও আর দেরি না করে তোমার পিছু নিয়েছিলাম। জানো, তখনো কিন্তু আমি তোমার নামটা জানতে পারিনি। তবে নাম জানতে না পারলে কী হবে, আমি তোমার সুন্দর একটি নাম রেখে দিয়েছিলাম। নামটি হচ্ছে মায়া। এভাবে কয়েক দিন যাওয়ার পরে একজনকে দিয়ে তোমার কাছে আমার সবচেয়ে পছন্দের হলুদ গোলাপ ফুল পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু তুমি তা ফেরত পাঠিয়েছিলে। তারপরের দিন তুমি নিজে আমাকে কিছু না বলে তোমার বান্ধবীদের দিয়ে আমাকে অপমানিত করলে। জানো, সেদিন থেকে আমি আর ঘুমাতে পারি না। আচ্ছা, কী অপরাধ করেছিলাম যে আমাকে তুমি অপমানিত করলে। ভালো লাগা, ভালোবাসা তো কোনো অপরাধ নয়। তবে তুমি নিজে কেন আমাকে তোমার কাছে আমাকে অপরাধী বানালে? একটা কথা, তুমি যদি তোমার বান্ধবীদের দিয়ে না বলিয়ে নিজে বলতে, তাহলে আমি কোনো কষ্ট পেতাম না? আমি জানি, তুমি হয়তো এই লেখাটা নাও পড়তে পারো? যদি তুমি পড়ো, তাহলে আমার শুধু একটাই প্রশ্ন থাকল, আমি তোমার কাছে কী অপরাধ করেছি, যে তুমি আমাকে ভালোবাসতে পারবে না? এই কথাগুলো তোমাকে চিঠি লিখে জানাতে সাহস পেলাম না। সে জন্য এই অধুনার মনের বাক্সে লিখে তোমাকে জানাচ্ছি।

ইতি

অপরাধী

চুয়াডাঙ্গা।

অলংকরণ: তুলি

আজও আমি একা!
ছোটবেলায় মাকে হারিয়েছি। মায়ের আদর-ভালোবাসা ছাড়াই একসময় ২৬ বছরের যুবক হয়ে গেলাম (আজ থেকে ১০ বছর আগে)।
তোমার সঙ্গে তখন পরিচিত হতে হয়নি, তুমি পরিচিত মুখ ছিলে। এই পরিচিত মুখই যে একসময় আমার প্রাণের পাখি হয়ে যাবে কখনো ভাবিনি! অনেক চেষ্টা করেও নিজেকে দূরে রাখতে পারিনি। তুমিই কাছে ডেকে ছিলে, তুমিই দূরে ঠেলে দিয়েছ। এতটা আপন করে কেমন করে এতটা পর হয়েছ ভেবে পাই না। কী দরকার ছিল আমাকে ‘ভালোবাসি’ বলার? ভালোবাসা ছাড়া আমার জীবন তো ভালোই কাটছিল।
এখন সব শূন্য! টাকার কাছে একটা তরতাজা জীবনের পরাজয়!
ভালো থেকো, আমার সবটুকু সুখ নিয়ে। আজও ভালোবাসি, বেসে যাব যত দিন তোমার দেওয়া মিথ্যা অঙ্গীকারের একমাত্র সাক্ষী এই চাঁদ পৃথিবীতে আলো ছড়াবে।
সুলতান

সিলেট।

মোবাইলে ভালোবাসা

অধিকাংশ মানুষের ক্ষেত্রেই প্রথম দেখায় ভালোবেসে ফেলে। কিন্তু আমার ক্ষেত্রে হয়েছে একটু আলাদা। প্রথম দেখায় নয়, তোমাকে আমি ভালোবেসে ছিলাম প্রথম মোবাইল ফোনে কথা বলার সময়। তোমার সুমিষ্ট কণ্ঠ আমায় বাধ্য করেছিল তোমাকে না দেখেই ভালোবাসতে। ভালোই চলছিল দিন। হঠাৎ তুমি আমাকে দোষী বানিয়ে আমার কাছ থেকে চলে গেলে। জানি না আমার দোষটা কোথায় ছিল! জানি, খুবই ভালো আছো হয়তো কারও সঙ্গে। তবে যেখানেই থাকো, যার সঙ্গেই থাকো, যে অবস্থাতেই থাকো না কেন, সুখে থাকো। শান্তিতে থাকো।

মেহেদী হাসান

রাজশাহী।

আব্বু তুমি কোথায়?

এই তো সেদিন ছোট খোকা হাঁটছে তার বাবার হাত ধরে। নানা অজানা জিনিসের কৌতূহল নিয়ে প্রশ্নের পর প্রশ্ন করছে বাবাকে। বাবাও সাজিয়ে বলছে খোকার বোঝার মতো করে। সন্ধ্যা বেলায় বাবা যখন ঘরে ফিরত, হাসিতে যেন মুক্ত ঝরত খোকার, আকাশের চাঁদ যেন তার হাতের মুঠোয়।

বাবার পেটে ফুঁ দিয়ে বাঁশি আর ঢোল বাজানো ছিল দুই ভাইয়ে মজার খেলা। এভাবেই বাড়তে থাকে বাবা-ছেলের বন্ধুত্ব।

যখন আমি সপ্তম শ্রেণির ছাত্র, আব্বু আমাকে নিয়ে যায় একটি কাপড়ের দোকানে আর আমার জীবনে প্রথম আন্ডারওয়্যার সূচনা হয় আব্বুর পছন্দ দিয়ে। সেকি লজ্জাকর আর বাঁধভাঙা লুকিয়ে হাসার মুহূর্ত। এ বিষয়ে আব্বু নিজেই কিছু কথা বলে। একদিন রাতে আব্বুর সঙ্গে হাঁটছিলাম, হঠাৎ আব্বু আমার বিয়ের নিয়ে কথা বলতে থাকে। আমি বুঝে উঠতে পারছিলাম না আব্বু এ কথাগুলো কেন বলছে—আমি তো মাত্র ১৩-১৪ বছরের বালক। মন দিয়ে শুনছিলাম আর অল্প শব্দে হ্যাঁ সূচক উত্তর দিচ্ছিলাম। তখন বুঝতে পারিনি আব্বু কথাগুলো কেন বলছিল। হয়তো আব্বু জানত, তার যাওয়ার সময় হয়েছে আর কখনো হবে না ছেলেকে নিয়ে দেখা স্বপ্নপূরণ! ২০০৮ সালের ফেব্রুয়ারির ৭ তারিখে বৃহস্পতিবার ভোর আটটায় সড়কপথে দুর্ঘটনায় মারা যায় আব্বু।

দেখতে দেখতে পার হয়ে যায় ৮ বছর ২১ দিন। আজও তোমাকে অনেক মনে পড়ে তোমাকে। আব্বু ডাকি না কত দিন হয়ে গেল! জানো আব্বু, কেউ যখন তাদের বাবাদের আব্বু বলে ডাকে, আমারও খুব ডাকতে ইচ্ছা করে, তোমার সেই আদর পেতে ইচ্ছা করে। মাঝেমধ্যে মনে হতো, তুমি আছ—সত্যি বলছি আব্বু, মনে হতো তুমি হারিয়ে যাওনি। ভাবতাম, বাইরে গেছ, আবার ফিরে আসবে। কিন্তু তোমাকে আর দেখি না, আব্বু বলে মন ভরে ডাকতেও পারি না। হয়তো তুমি হতে আমার সবচেয়ে ভালো বন্ধু। আব্বু তুমি কোথায়!

শরিফুলইসলাম

ফেনী।

নিজেকে বড় একা লাগে

আজকে কেন জানি নিজেকে বড় একা একা লাগে। মনে হয়, কোথায় যেন হারিয়ে যাচ্ছি আমি। নিজেকে আত্মকেন্দ্রিক মনে হয়। তুমি যখন আমার জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে ছিলে, আমার কি মনে হতো জানো, মনে হতো, তোমাকে আমি অনেক জনম জনম অপেক্ষার পরে পেয়েছি। আমি আর তোমাকে হারাতে চাই না। তুমি আমার জীবনে এনে দিয়েছ পরিপূর্ণতা। কিন্তু আমার কেন জানি ভয় হয়, যদি সবকিছু শেষ হয়ে যায়। আমার মানে সব সময় একটা ভয় কাজ করে, আর সেটা হলো তোমাকে হারানোর ভয়। তোমার কাছে আমার একটাই মিনতি, যদি কোনো দিন ভুল হয়, আমাকে ছেড়ে চলে যেয়ো না। কারণ, আমি তোমাকে ছাড়া ভালো থাকতে পারব না। অনেক অনেক ভালোবাসি তোমাকে।

মো. আসিফ

কুষ্টিয়া।

কথাগুলো বলা হয় না...

বাবা, আপনাকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসি। মা, তোমাকে আমার সবচেয়ে বেশি দরকার।

বোন, তোর জন্য কোনো ফিলিংস নেই, তবে তুই শ্বশুরবাড়ি গেলে কীভাবে যে একা থাকব জানি না।

মো. কাওসার হোসেন

সাভার, ঢাকা

মনের বাক্স

প্রিয় পাঠক

আপনার মনের না-বলা যেকোনো কথা বা স্বীকারোক্তি বলে ফেলুন অধুনার

মনের বাক্স বিভাগে। ফেসবুক, ই-মেইল বা চিঠি লিখে জানাতে পারেন মনের কথা।

লেখা পাঠানোর ঠিকানা:

অধুনা, প্রথম আলো, সিএ ভবন, ১০০ কাজী নজরুল ইসলাম অ্যাভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫। ই-মেইল: adhuna@prothom-alo.info ফেসবুক: facebook.com/adhuna.PA খামের ওপর ও -মেইলের subject-এ লিখুনমনের বাক্স