Thank you for trying Sticky AMP!!

রোবট নিয়েই স্বপ্ন

নিজেদের তৈরি রোবট হাতে বুয়েটের রাকিব রেজা ও চুয়েটের রিনি ঈশান

ছোটবেলা থেকেই বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনি আর রোবটের ভক্ত রিনি ঈশান ও রাকিব রেজা। স্কুল–কলেজ পেরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়েও সেই ধারা অব্যাহত ছিল সমান তালে।
শিক্ষাজীবন শেষ করে বুয়েটের যন্ত্রকৌশল বিভাগের রাকিব রেজা ও চুয়েটের যন্ত্রকৌশল বিভাগের রিনি ঈশান গড়ে তুলেছেন ‘প্ল্যানেটর বাংলাদেশ’ নামের একটি সংগঠন। যার প্রধান নির্বাহী রিনি আর প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা রাকিব। এবারের টেডএক্স ঢাকা ২০১৪ ইভেন্টে তাঁরা রয়েছেন নির্ধারিত বক্তাদের তালিকায়।
২০১০ সালে দ্বিতীয় বর্ষে পড়ার সময় থেকেই রোবট নিয়ে হাতেকলমে কাজ শুরু করেন তাঁরা। ২০১১ সালে আন্তবিশ্ববিদ্যালয় রোবোটিকস প্রতিযোগিতায় ২৪টি দলের মধ্যে রাকিব তৃতীয় ও রিনি চতুর্থ স্থান অধিকার করেন। এরপর রিনি ২০১৩ সালে মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসার রোবট তৈরির প্রতিযোগিতায় অংশ নেন।
‘প্ল্যানেটর বাংলাদেশ’ কেন, জানতে চাইলে রিনি বলেন, ‘যাঁরা রোবট নিয়ে কাজ করতে চান, তাঁদের জন্য আমরা একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে চাই—এমন চিন্তা থেকেই এই সংগঠন।’
চার সদস্যের এই প্রতিষ্ঠানে আরও আছেন হাসানুল ইসলাম ও কায়সার রায়হান।
এখন রোবট তৈরি ও প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ চলছে পুরোদমে। রাকিব জানান, এ পর্যন্ত তাঁরা প্রায় ৭০০ জনকে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। এ তালিকায় সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ তরুণ চাকরিজীবীও আছেন।
প্রতিষ্ঠানটি থেকে এ পর্যন্ত যতগুলো রোবট তৈরি হয়েছে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো টেলি প্রেজেন্স, মানবগাড়ি, ওয়েল্ডিং করতে পারে এমন রোবট। টেলি প্রেজেন্স রোবটের বিষয়টি হলো এটি অফিস, বাসা কিংবা সার্ভিলেন্সের কাজে ব্যবহার করা যাবে। হয়তো বস বাইরে, অফিসে আসতে পারছেন না। তখন এই রোবটের মাধ্যমে তিনি অফিস তদারকি করতে পারবেন। অথবা কোনো কর্মজীবী নারী বাড়ির বাইরে থেকেও নিয়মিত বাসার খোঁজ রাখতে পারবেন। আর মানবগাড়ি রোবট নিজে থেকেই যেকোনো আকার নিতে পারে। এখনই হয়তো সে হাঁটছে, তো পরমুহূর্তেই গাড়ি হয়ে ছুটছে!
সেই সঙ্গে রিনি ও রাকিব ভবিষ্যতে বিনোদন জগতেও রোবট আনার কথা ভাবছেন। হলিউডে যখন জুরাসিক পার্ক কিংবা আয়রনম্যান-এর মতো ছবি হচ্ছে, তখন চেষ্টা করলে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রেও এ ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করা যাবে বলে বিশ্বাস করেন তাঁরা। এ ছাড়া রোবট সার্ভিসিং সেন্টারের কথাও চিন্তা করছেন।
প্রতিষ্ঠানটির অন্যতম সদস্য হাসানুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা চাই আমাদের মতো যাঁরা ভাবেন, চিন্তা করেন, তাঁদের নিয়ে কাজ করতে। বিশেষ করে প্রকৌশলীরা যাতে একটা সুযোগ পান, সেই চেষ্টা করছি।’ তবে যাঁরা প্রকৌশল নিয়ে পড়েননি, অথচ রোবট নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী, তাঁরাও শিখতে পারবেন রোবট তৈরির বিষয়টি। তবে সে জন্য প্রচণ্ড ইচ্ছাশক্তি থাকতে হবে বলে জানালেন রিনি।
প্ল্যানেটর বাংলাদেশের আরেকটি বড় স্বপ্ন রোবট রপ্তানি। এ ছাড়া দেশে সম্প্রতি রোবট তৈরি করে দেওয়ার জন্য চারটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন তাঁরা।
সাধারণ মানুষের হাতের নাগালে রোবটকে এনে দেওয়ার জন্য সেভাবেই এগোচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। প্রশিক্ষণ থেকে প্রাপ্ত অর্থ দিয়ে তাঁরা রোবট নির্মাণের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। সে ক্ষেত্রে প্রাথমিকভাবে প্ল্যাটফর্ম তৈরি হলেও একটু ধীরেই এগোতে হচ্ছে। রাকিব বলেন, রোবোটিক্স বিষয়টি যেহেতু ব্যয়বহুল, তাই এর প্রসারে যদি সরকারি উদ্যোগ কিংবা বেসরকারিভাবে সহযোগিতা থাকে, তবে আরও দ্রুত সামনে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব।