স্টাইল

হাসিখুশি লিনু

সাদা–কালো তাঁর প্রিয় রং। ছবি: খালেদ সরকার
সাদা–কালো তাঁর প্রিয় রং। ছবি: খালেদ সরকার

বাংলাদেশের অন্যতম সেরা ক্রীড়াবিদ জোবেরা রহমান লিনু। ১৬ বার জাতীয় টেবিল টেনিস প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়ে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম উঠেছে তাঁর। চুলের ছাঁটে আছে ভিন্নতা। আজ থাকছে তাঁর স্টাইল।

বয়সের সঙ্গে সঙ্গে চেহারায় একটা গাম্ভীর্য ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করতেন সব সময়ই। কিন্তু ঠোঁটের কোণ থেকে কিছুতেই যেন সরাতে পারতেন না হাসিটা। ক্রীড়াবিদ জোবেরা রহমান লিনু বলেন, ‘বয়সটা বেড়েছে ঠিকই কিন্তু জীবনটাকে এখনো উপভোগ করি সেই ছেলেবেলার মতো।

সেটা অবশ্য তাঁর বাসায় ঢোকার কিছুক্ষণ পরই বোঝা গেল যখন লিনুর ভাইয়ের ছেলে আলভী ফিরল স্কুল থেকে। আলভী এসে মা বলে জড়িয়ে ধরতেই দুজনের মধ্যে শুরু হলো খুনসুটি। আলভীকে ছেলের মতো ভালোবাসেন লিনু। আর সে জন্য তাঁকেই মা বলে ডাকে সে।

ঘরের দেয়ালের স্মারকগুলো তাঁর সংগ্রহ করা

এখন আলভীকে নিয়েই কাটান দিনের অনেকটা সময়। সকাল সাতটায় ঘুম ভাঙার পর আলভীকে তৈরি করে স্কুলে পাঠান। এরপর খাবার টেবিলে বসে বাবার সঙ্গে সেরে নেন সংসারের নানা বিষয়ের আলোচনা। খাওয়া শেষে বেশ কিছুটা সময় একা একাই কাটিয়ে দেন খাবার টেবিলে। এ সময় কখনো পত্রিকা পড়েন বা লেখালেখি করেন। কখনো আবার গান শুনতে শুনতে ফেসবুকে বন্ধুদের সঙ্গে চলতে থাকে আড্ডা। বিকেলে বাড়িতে থাকলে ভাইয়ের ছেলেমেয়েদের নিয়ে ছাদে মেতে ওঠেন ক্রিকেট খেলায়। আবার কখনো নিজ হাতে বানান তাদের পছন্দের খাবার।

মাঝেমধ্যে একেবারে নিজের মতো করে সময় কাটাতে ভালোবাসেন লিনু। সন্ধ্যার পর গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়েন লং ড্রাইভে। এ সময় রাস্তার ধারের কোনো রেস্তোরাঁয় হয়তো খেয়ে নেন পছন্দের কোনো খাবার।

ভাইয়ের ছেলে আল​ভীর সঙ্গে সময় কাটে অনেকটাই

বর্তমানে লিনু ব্যস্ত আছেন নাটক লেখার কাজে। এ ছাড়া একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ‘স্পোর্টস অ্যাম্বাসাডর’ হিসেবে কাজ করছেন।
সুযোগ পেলেই ঘুরতে চলে যান দেশের বাইরে। আর সেসব জায়গা থেকে সংগ্রহ করেন মালা, জুতা আর ঘড়ি। বাইরে যখন খেলতে যেতেন তখন অন্য দেশের খেলোয়াড়দের কাছ থেকে সংগ্রহ করতেন কোটপিন। ভালোবাসেন ঘর সাজাতে। পুরোনো দিনের জিনিস বিশেষ করে অ্যান্টিকের প্রতি রয়েছে বিশেষ দুর্বলতা। বিভিন্ন সময় সংগ্রহ করা স্মারক প্লেটগুলো সাজিয়ে রেখেছেন খাবার ঘরের দেয়ালে। ঘর সাজানোর মতো পোশাকেও স্বকীয়তা বজায় রাখার চেষ্টা করেন। নিজের পোশাকের নকশা নিজেই করে থাকেন। এ ক্ষেত্রে সাদা আর কালো তাঁর প্রিয় রং। স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন সালোয়ার-কামিজে।

ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব লিনু

বাসায় বা কাজের প্রয়োজনে জিনস, ফতুয়াও পরে থাকেন। ‘আমি সব সময় মুখশ্রীটাকেই ধারণ করার চেষ্টা করি, মুখোশটাকে নয়। এ ক্ষেত্রে চলতি ট্রেন্ডে নয়, বরং আমার ব্যক্তিত্ব আর চেহারার সঙ্গে মানিয়ে যায় এমন পোশাকই পরে থাকি’—নিজের স্টাইল সম্পর্কে বলেন লিনু।
চুলে বিভিন্ন ধরনের ছাঁট নিয়ে নিরীক্ষা করেন। লিনু বলেন, ‘ছোট চুলের কাট চেহারায় মানিয়ে যাওয়ায় এটা এখন নিজস্ব স্টাইল হয়ে দাঁড়িয়েছে আমার।’
নিজেকে শারীরিকভাবে ফিট রাখার জন্য নিয়মিত ব্যায়াম করেন। যেহেতু খেলাধুলা করতেন, তাই ছোটবেলা থেকেই দুধ, ডিম ও কলা খেতে পছন্দ করেন এই টেবিল টেনিস তারকা। ‘এখনো এত সজীব থাকার এটাই কারণ।’ খাবারদাবারের বেলায় কোনো বাছবিচার না করলেও এখন মাংসটা এড়িয়ে যান।
জীবনের প্রতিটি মুহূর্তকে উপভোগ করতে চেষ্টা করেন। তাই নিজেকে সুস্থ ও সুন্দর রাখতে হলে সব সময় ইতিবাচক চিন্তা করা খুব জরুরি বলে মনে করেন হাসিখুশি, প্রাণোচ্ছল জোবেরা রহমান লিনু।