Thank you for trying Sticky AMP!!

২০১৮ সালের সেরা পাঁচ বই

বিল গেটস
মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস দারুণ পড়ুয়া। বছরজুড়েই বই পড়েন, পাঠের অভিজ্ঞতা লেখেন নিজের ওয়েবসাইটে। আর বছর শেষে নিজের পড়া প্রিয় বইয়ের একটি তালিকাও দেন। এ বছরের তালিকায় থাকা পাঁচটি বইয়ের সারাংশ বলেছেন এই মার্কিন ব্যবসায়ী। জানিয়েছেন ভালো লাগার কারণগুলোও।


আপনার স্বভাব যদি হয় আমার মতো, তাহলে আপনিও ছুটির দিনগুলোতে বই দিতে বা পেতে ভালোবাসেন। দুর্দান্ত একটি বই উপহার হিসেবে অতুলনীয়: চিন্তার খোরাক জোগায় এবং খুব সহজে শেষও করা যায় (ব্যাটারি বা অন্য কোনো কিছুর সাহায্য ছাড়াই)। এ ছাড়া আমার মনে হয়, জীবনযাপনের জন্য কিছু বই তো সবাই পড়ে দেখতে পারেন। বছর শেষে যখন বইয়ের তালিকা করি, তখন সাধারণত ভাবি না যে উপহার হিসেবে সেগুলো ভালো হবে কি না। কিন্তু এ বছরের বইগুলো উপহার হিসেবে দুর্দান্ত। এবারের তালিকায় প্রায় সব বিষয়ের বই-ই আছে। মেডিটেশনের পথনির্দেশনা থেকে শুরু করে স্বচালিত অস্ত্র সম্পর্কে গভীর বিশ্লেষণ, আরও আছে একসময়ের সম্ভাবনাময় প্রতিষ্ঠানের ধসে পড়ার রোমাঞ্চকর কাহিনি। মোটকথা, সবার জন্য কিছু না কিছু আছেই। বন্ধু-স্বজনের জন্য অব্যর্থ কোনো উপহারের খোঁজে থাকলে এই বইগুলো আপনাকে হতাশ করবে না।

 ১. এডুকেটেড

লেখক: তারা ওয়েস্টওভার

১৭ বছর বয়সে ঘর ছাড়ার আগ পর্যন্ত তারা নামের তরুণীটি কখনো স্কুল বা চিকিৎসকের কাছে যাননি। মরমনদের (একটি ধর্মীয় গোষ্ঠী) ঘরে বেড়ে ওঠা এই তরুণীর গল্পের সঙ্গে যে নিজেকে মেলাতে পারব, তা কখনোই ভাবিনি। কিন্তু তারা দুর্দান্ত লেখক। তাঁর ভীষণ কঠিন শৈশবের কাহিনি পড়ার সময় সেখানে আমি আমার নিজের জীবনের প্রতিফলন দেখতে পেয়েছি। কোনো কিছু শেখার জন্য মুখিয়ে থাকা এই তরুণীর স্মৃতিকথাটি মেলিন্ডা ও আমার খুব ভালো লেগেছে। তারার জ্ঞানতৃষ্ণা এতটাই প্রবল ছিল যে শেষ পর্যন্ত তিনি কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেছেন।

 ২. আর্মি অব নান

লেখক: পল শার

ছুটির দিনগুলোতে স্বচালিত অস্ত্রের মতো একটি বিষয়ে মন টানে না। তবে যুদ্ধবিগ্রহে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বিষয়টি চিন্তা-উদ্দীপক, ফলে দূরে ঠেলে দেওয়াও কঠিন। ভয়াবহ রকমের জটিল এক বিষয় এটি। কিন্তু শার সবকিছু খুব পরিষ্কারভাবে ব্যাখ্যা করেছেন। সহজ করে তুলে ধরেছেন মেশিনচালিত যুদ্ধের খুঁটিনাটি। এতে অবশ্য বিস্মিত হওয়ারও কিছু নেই। কারণ, পল শার এ বিষয়ে পণ্ডিত। যুক্তরাষ্ট্র সরকারের স্বচালিত অস্ত্রনীতির রূপরেখা তৈরিতে সহযোগিতা করেছিলেন তিনি।

 ৩. ব্যাড ব্লাড

লেখক: জন ক্যারেরু

একাধিক বন্ধু এই বই পড়তে বলেছিল। থেরানোস (মার্কিন তরুণী এলিজাবেথ হোমসের প্রতিষ্ঠিত স্বাস্থ্য-প্রযুক্তিবিষয়ক প্রতিষ্ঠান। রক্ত পরীক্ষা করার অভিনব এক যন্ত্র উদ্ভাবনের দাবি করে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার আয় করেছিল। পরে সব ভুয়া প্রমাণিত হয়।) নামের একটি প্রতিষ্ঠানের উত্থান ও পতনের হাঁড়ির খবর দিয়েছেন ক্যারেরু (ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল–এর সাংবাদিক, তাঁর ধারাবাহিক প্রতিবেদনেই থেরানোসের কেলেঙ্কারি উন্মোচিত হয়)। যতটা আশা করেছিলাম, তার থেকেও ভয়াবহ এই গল্প। বইটি পড়তে শুরু করার পর থামাথামির কথা ভাবতে পারিনি। কেলেঙ্কারির আদ্যোপান্ত, করপোরেট চক্রান্ত, ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদ প্রতিবেদন হওয়া, পারিবারিক সম্পর্কের ভাঙন এবং একসময় প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার দামের একটি প্রতিষ্ঠানের ধস—সব আছে এই বইয়ে।

 ৪. টোয়েন্টি ওয়ান লেসনস অব দ্য টোয়েন্টি ফার্স্ট সেঞ্চুরি

লেখক: ইউভাল নোয়াহ হারারি

হারারির সমস্ত লেখার বিশাল ভক্ত আমি এবং তাঁর সাম্প্রতিক এই বইও ব্যতিক্রম নয়। তাঁর স্যাপিয়েন্স এবং হোমো ডিউস বই দুটি অতীত ও ভবিষ্যৎ তুলে ধরেছিল। এই বই পুরোপুরি বর্তমান নিয়ে। ২০১৮ সাল যদি আপনাকে পৃথিবীর বর্তমান অবস্থায় বিহ্বল করে ফেলে যায়, তাহলে এই বইয়ের ২১টি পাঠ আপনাকে সাহায্য করবে।

 ৫. দ্য হেডস্পেস গাইড টু মেডিটেশন অ্যান্ড মাইন্ডফুলনেস

লেখক: অ্যান্ডি পুডিকম্ব

আমি নিশ্চিত, আমার বয়স ২৫ হলে এই বই ছুঁয়েও দেখতাম না। কিন্তু ইদানীং মেলিন্ডা ও আমি মেডিটেশন শুরু করেছি। বইটি শুরু হয়েছে পুডিকম্বের ব্যক্তিগত যাত্রা থেকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী থেকে তিনি বৌদ্ধ সন্ন্যাসী হলেন। তারপর বলেছেন ‘কীভাবে মেডিটেশন করবেন’—তাঁর ভাষ্যকার হওয়ার গল্প। সবকিছুতে একাগ্র হতে চাইলে এই বই আপনার জন্য হতে পারে চমৎকার সূচনা।

ইংরেজি থেকে অনুবাদ:

মাহফুজ রহমান

সূত্র: গেটস নোটস ডটকম