যে কারণে মাত্র ২৬ বছর বয়সে আত্মহত্যা করলেন জনপ্রিয় এই মডেল
মাত্র ২৬ বছর বয়সে আত্মহত্যা করলেন ভারতের জনপ্রিয় মডেল ও ইনফ্লুয়েন্সার স্যান র্যাচেল। এই অকালমৃত্যু আবারও মনে করিয়ে দেয়, অনলাইনের দুনিয়ায় আমরা যা দেখি, তার সবটাই সত্য নয়।
জীবনযাপন ডেস্ক
ভারতের ফ্যাশন দুনিয়ার জনপ্রিয় মডেল স্যান র্যাচেল ১৩ জুলাই ভোরে দক্ষিণ ভারতের পুদুচেরিতে নিজের বাসায় আত্মহত্যা করেন। একাধিক হাসপাতালে নিয়ে গিয়েও বাঁচানো যায়নি তাঁকে। স্যানের আসল নাম শঙ্কর প্রিয়া গান্ধী।গায়ের রঙের কারণে মডেলিং ইন্ডাস্ট্রিতে তিনি ‘ব্ল্যাক বিউটি’ নামেও পরিচিত ছিলেন।২০১৯ সালে ‘মিস ডার্ক কুইন তামিল নাড়ু’র মুকুট উঠেছিল ২০ বছর বয়সী স্যান র্যাচেলের মাথায়। এর পর থেকেই মূলত মডেলিং হয়ে যায় তাঁর পেশা।২০২১ সালে হাজারো সুন্দরীকে পেছনে ফেলে স্যানের মাথায় ওঠে মিস পুদুচেরির মুকুট। এর পর থেকেই জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মডেলিংয়ে ডাক পেতে থাকেন।ফ্রান্স, জার্মানি, দক্ষিণ আফ্রিকা, যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশে ফ্যাশন উৎসব ও মডেলিংয়ে তিনি ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। নিজের একটা মডেলিং একাডেমিও ছিল স্যানের।
বিজ্ঞাপন
ফ্যাশন দুনিয়ার তথাকথিত ‘বিউটি স্ট্যান্ডার্ড’কে চ্যালেঞ্জ করে নিজের আলাদা পরিচিতি গড়ে তুলেছিলেন স্যান। ‘ই-টাইমস’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘আমি বর্ণবৈষম্যহীন একটা পৃথিবী চাই, যেখানে গায়ের রং কারও স্বপ্নপূরণের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াবে না।’তবে ‘বর্ণবৈষম্যের কারণেই’ দুই বছর ধরে কোনো কাজ পাচ্ছিলেন না স্যান! তীব্র আর্থিক সংকটে পড়েছিলেন। কিছুদিন আগে নিজের স্বর্ণালংকারও বিক্রি করেছিলেন।২০২৪ সালের জুনে দক্ষিণ ভারতীয় ফ্যাশন ডিজাইনার সত্যকে বিয়ে করেছিলেন স্যান। তবে সংসারজীবনে অশান্তি লেগেই ছিল।স্যান স্বামীকে না জানিয়ে তাঁর স্বামীর বন্ধুর কাছ থেকে সাত লাখ রুপি ধার করে নিজের বিয়েতে খরচ করেন। স্বামীকে জানিয়েছিলেন, সেই অর্থ তাঁর বাবা দিয়েছেন বিয়েতে খরচের জন্য। বিয়ের পর স্বামী সত্য জেনে যাওয়ার পর থেকেই মূলত দাম্পত্য অশান্তির সূত্রপাত।
বিজ্ঞাপন
কিছুদিন আগে বাবার কাছে এসেছিলেন। নিজের আর্থিক সমস্যার কথা জানিয়েছিলেন বাবাকে। অনুরোধ করেছিলেন স্বামীর বন্ধুর সেই ঋণ শোধ করে দিতে। তবে বাবা কোনো সাহায্য করতে পারবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন।মূলত এরপরই আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন বেশ কিছু জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পদকজয়ী এই মডেল।এর আগে ৫ জুন বাবার বাড়িতে এসেও ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন স্যান। সেবার হাসপাতালে দুই দিন ভর্তি থেকে প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলেন।মৃত্যুর আগে সুইসাইড নোট লিখে রেখে গেছেন। সেখানে বাবা, স্বামী ও শাশুড়ির প্রতি অভিযোগ আর অভিমানও আছে। তবে নিজের মৃত্যুর জন্য কাউকে দায়ী করেননি স্যান।