Thank you for trying Sticky AMP!!

মন যখন সতেজ থাকে, চেহারায় তার প্রভাব পড়তে বাধ্য

সতেজ থাকবেন তিনটি নিয়ম মানলেই

পুষ্টিসম্পন্ন খাবার গ্রহণ, নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম এবং রূপচর্চা করা— এই তিনটি বিষয় মানলেই সতেজ থাকা সম্ভব

এক বন্ধুর বাবার গল্প করছিলেন রুনা খান। ভদ্রলোক পেশায় চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ। তিনি নাকি সব সময় বলতেন, পেট্রল গাড়িতে মাখলে কাজ হবে? পেট্রল দিতে হবে গাড়ির ভেতর, তবেই না গাড়ি চলবে সুন্দর। কথাটা তাঁর বেশ মনে ধরেছিল। এর পর থেকেই নিজের ত্বকের যত্নে খাবারের প্রতি বিশেষভাবে যত্নশীল হয়ে পড়েন এই অভিনেত্রী। নিয়মিত খাদ্যতালিকায় যুক্ত হয় শাকসবজি, ডিম আর দুধ। প্রতিদিন একমুঠো বাদাম খান। আর সপ্তাহে ভাগ ভাগ করে কোনো দিন খান তোকমা, নাহয় চিয়াবীজ মেশানো পানি। পানি পান করেন প্রচুর। এর মধ্যে ডাবের পানিও থাকে। ভালোবাসেন দেশি ফল। খাবারের তালিকায় দুটি মৌসুমি ফল রাখেন। এই হলো অভিনেত্রী রুনা খানের সব সময় সতেজ ও সুন্দর থাকার রহস্য। তিনি জানান, এ ছাড়া সপ্তাহে পাঁচ থেকে ছয় দিন হাঁটেন নিয়ম করে।

প্রতিদিন হাঁটার অভ্যাস করুন

হাঁটা বা যোগাসনের মতো ব্যায়ামগুলো শুধু শরীরকে ফিট রাখে না, মনকেও প্রফুল্ল রাখতে বিশেষভাবে সাহায্য করে। এ ছাড়া নিয়মিত গান শোনা, সিনেমা দেখা, বই পড়ার মতো বিষয়গুলোও মানসিকভাবে মানুষকে ভালো থাকতে সাহায্য করে। আর মন যখন ভালো থাকে, চেহারায় তার প্রভাব পড়তে বাধ্য, এমনটাই বলেন আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক ও হারমোনি স্পার স্বত্বাধিকারী রাহিমা সুলতানা।

বয়স বেড়েছে, তাই হয়তো ত্বকে ধরেছে একটু টান, শরীরে বেড়েছে মেদ। তার মানে এই নয় যে নিজেকে বুড়ি ভাবতে শুরু করবেন। এখন থেকেই যত্ন নেওয়া শুরু করুন। দেখুন কেমন সতেজ হয়ে উঠছেন আপনি। সুন্দর থাকার নির্দিষ্ট কোনো বয়স নেই। যেকোনো বয়সেই মানুষ সুন্দর থাকতে পারে। এ জন্য সবচেয়ে বেশি যেসব নিয়ম মেনে চলতে হবে, সেগুলো হলো—পুষ্টিসম্পন্ন খাবার গ্রহণ, নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম এবং রূপচর্চা করা। এই তিন বিষয় মেনে চললে বয়স যা–ই হোক না কেন, নিজেকে সুন্দর রাখা সম্ভব। এ বিষয়ে রাহিমা সুলতানার কিছু পরামর্শ অনুসরণ করতে পারেন।

ডাবের পানি পানিশূন্যতা রোধে সহায়তা করবে

প্রতিদিন সকালে পান করতে পারেন ডিটক্স ওয়াটার। কোনো দিন হালকা গরম পানিতে লেবু ও পুদিনাপাতা মিশিয়ে খেতে পারেন। আবার কোনো দিন সকালে আগের রাতে মেথি ভিজিয়ে রাখা পানি পান করতে পারেন। আবার কোনো দিন খেলেন তোকমা পানি। এসব পানীয় শরীরের দূষিত পদার্থ বের করতে সাহায্য করে। তবে খেয়াল রাখবেন, সকালে এসব পানীয় পানের সময় পেট যেন খালি থাকে।

মনকে প্রফুল্ল রাখুন

নিয়মিত খাবারে ভাত ও আমিষজাতীয় খাবারের পরিমাণ কমিয়ে দেওয়ার পরামর্শ দিলেন রাহিমা সুলতানা। বদলে শাকসবজি ও ফলের পরিমাণ বাড়িয়ে দিন। একটা নির্দিষ্ট বয়সের পর শরীরে খুব বেশি আমিষের চাহিদা থাকে না। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কমে আসে হজমশক্তি। আমিষ এই হজমপ্রক্রিয়াকে আরও বাধাগ্রস্ত করে। যে কারণে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে খাবারে আমিষের পরিমাণ কমিয়ে দেওয়া ভালো। প্রতিদিন সকাল ও রাতে ২ টেবিল চামচ টক দই খাওয়ার চেষ্টা করুন। কারণ, টক দইয়ে থাকা প্রোবায়োটিকস হজমপ্রক্রিয়ার গতি বাড়ায়। টক দইয়ে আরও আছে ক্যালসিয়াম ও মিনারেল, যা শরীরের জন্য বেশ উপকারী। সবচেয়ে ভালো হয় যদি এই টক দই বাড়িতে বানিয়ে নেন। বাইরের টক দইয়ে প্রিজারভেটিভ থাকে, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর।

বয়স বাড়তে থাকলে ঘুমের পরিমাণ কমে আসে। এ জন্য ঘুমানোর আগে এক গ্লাস দুধ খেয়ে নিতে পারেন। ভালো ঘুম হতে সাহায্য করে দুধ। ভালো ঘুমের ফলে ত্বক পুনর্গঠনের প্রক্রিয়া ভালো হয়। এটি ত্বকের টক্সিক পদার্থ বের করে দিতে সাহায্য করে।

রূপচর্চায় ব্যবহার করুন প্রাকৃতিক উপকরণ

একটা নির্দিষ্ট সময়ের পর ত্বক আর্দ্রতা হারাতে শুরু করে। এ জন্য প্রচুর পানি পান করা খুব জরুরি। কারণ, পানি ভেতর থেকে ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে।

এসব তো গেল ভেতরটাকে কীভাবে সুন্দর রাখবেন, তার কথা। তবে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যেহেতু ত্বক তার স্বাভাবিক আর্দ্রতা হারায়, তাই ত্বক সতেজ রাখার জন্য বাইরে থেকেও কিছু ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। ত্বকে ডিপ ময়েশ্চারাইজিং করা এ সময় খুব জরুরি। সমপরিমাণ নারকেল তেল, গোলাপজল ও গ্লিসারিন মিশিয়ে সারা রাত ত্বকে মেখে রাখুন। নারকেল তেল ত্বকের যত্নে বেশ উপকারী। এমনটা অবশ্য রুনা খানও বলেছেন। ঘুমানোর আগে ত্বকের যত্নে তিনি শুধু নারকেল তেলই ব্যবহার করে থাকেন। কারও ত্বক যদি তৈলাক্ত হয়, তাহলে এই মিশ্রণে নারকেল তেলের পরিমাণ কমিয়ে দেওয়ার পরামর্শ দেন রাহিমা সুলতানা।

বাদাম রাখুন খাবার তালিকায়

বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ত্বকের প্রধান শত্রু হয়ে দাঁড়ায় বলিরেখা। এ জন্য টোনার ব্যবহারের পরামর্শ দেন রাহিমা। বাড়িতেই বানাতে পারেন এটি। ২ টেবিল চামচ টক দই, ১ টেবিল চামচ গুঁড়া দুধ, আধা চা–চামচ মধু এবং পাঁচটি জাফরানের রেণু একসঙ্গে মিশিয়ে নিন। এটি ক্রিমের মতো হবে। সারা রাত ত্বকে মেখে রাখুন। সকালে ঘুম থেকে উঠে পরিবর্তনটা নিজেই টের পাবেন।