
ঢাকে কাঠির বাড়ি পড়েছে বেশ কদিন আগেই। শারদীয় দুর্গাপূজার বিসর্জন হচ্ছে আজ। মণ্ডপে মণ্ডপে তরুণ-তরুণীদের ভিড়। উৎসবের এই সময়ে কেমন সাজপোশাকে বের হচ্ছেন মেয়েরা? এবারের পূজার ফ্যাশনধারাটাই বা কী? সপ্তমী আর অষ্টমীতে (৮ ও ৯ অক্টোবর) ঢাকার কয়েকটি পূজামণ্ডপ ঘুরে তা জানার চেষ্টা হলো।
পূজার দিনগুলোতে দেখা যাচ্ছে, এবার ন্যাচারাল মেকআপই বেশি পছন্দ করছেন তরুণীরা। সিল্ক, কাতান, তসরের পাশাপাশি সুতির পোশাক পরেছেন অনেকে। ভারী গয়নার বদলে হালকা ধাতব, পুঁতি বা অক্সিডাইজড গয়না বেশি চলছে। গরমের কারণে চুলের সাজে দিনের বেলা হাতখোঁপা বেশি দেখা গেছে। রাতে অনেকেই খোলা চুল বা মেসি বেণি করেছেন। এ ছাড়া চুলে রং করার চল দেখা গেছে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে।
ফরাশগঞ্জ পূজামণ্ডপ
পুরান ঢাকায় উর্মিলা
অভিনেত্রী উর্মিলা শ্রাবন্তী কর সপ্তমীর দিন কাটিয়েছেন পুরান ঢাকার ফরাশগঞ্জের একটি শুটিং বাড়িতে। শুটিংয়ের ফাঁকে রাতের বেলা বেরিয়েছিলেন সেখানকার কয়েকটি মণ্ডপে। উর্মিলা বলেন, ‘খুবই ভালো লেগেছে আজ (৮ অক্টোবর) এখানে শুটিং করতে এসে। কারণ, নাটকটা পূজাকেন্দ্রিক। যেহেতু পুরান ঢাকায় শুটিং করব, তাই অতিরিক্ত শাড়ি ও গয়না সঙ্গে রেখেছিলাম। সেটা পরেই সপ্তমীর সন্ধ্যায় বের হলাম।’
পূজা দেখতে লাল পাড়ের সাদা সিল্কের শাড়ি পরেছিলেন এই অভিনেত্রী। সিঁথিতে সিঁদুর আর কপালে লাল টিপ। খোলা চুলের নিচের অংশ কোঁকড়া করে নিয়েছিলেন। শাঁখা পরার সঙ্গে পরেছিলেন সোনার গয়নাও। কাজল আর আইলাইনার দিয়ে ডাগর ডাগর চোখ আর ন্যুড লিপস্টিক দিয়েছিলেন ঠোঁটে। পূজা দেখতে গিয়ে ঢাকের তালে নাচ, শাঁখে ফুঁ, ঘণ্টা বাজানো বা প্রদীপ জ্বালানো—সবটাই করলেন মনের আনন্দে।
কলাবাগান পূজামণ্ডপ
হালকা গয়নায় পূজার বিকেল
সাভার থেকে পূজা দেখতে এসেছিলেন প্রেমা পাল। সপ্তমীর বিকেলে লাল পাড়ের সাদা শাড়িতে সেজে এসেছিলেন কলাবাগান পূজামণ্ডপে। ধাতব ও হালকা গয়না ছিল কানে-হাতে। শাড়ির পাড়ের রং ধরে কপালের টিপ ও ঠোঁট রাঙিয়েছিলেন লালে।
বনানী মাঠের পূজামণ্ডপ
সুতিতেই স্বস্তি
চার কাজিন—অভ্র, সুতপা, রুনা ও রমা মিলে বনানী মাঠে এসেছিলেন সুতি শাড়ি পরে। বাসার কাছেই মণ্ডপ তাই ছিলেন খোলা চুলে। টকটকে লাল শাড়ি পরেছিলেন তিনজন। রুনা পরেছিলেন লাল-সাদায় মেলানো শাড়ি সঙ্গে কোমরে পরেছিলেন রুপার গয়না। চিকন চেনের সঙ্গে ঝোলানো লকেট আর কপালে লাল টিপ—এতেই নজর কাড়লেন অষ্টমীর সকালে।
সিল্ক শাড়িতে অষ্টমী
অষ্টমীর (৯ অক্টোবর) দুপুরে বনানী মাঠের পূজামণ্ডপে গোলাপি সিল্কের শাড়ি পরে এসেছিলেন মনামী বসাক। ইস্টওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী মনামী সঙ্গে মিলিয়ে পরেছিলেন গোলাপি মালা, দুল ও কাচের চুড়ি। ঠোঁট ও কপালের সাজেও গোলাপি রং। ব্লাউজ বেছে নিয়েছিলেন ফিরোজা রঙের তার হাতায় গোলাপি পাইপিং।
ঢাকেশ্বরী মন্দির
কাজলটানা চোখ
দেবী দুর্গার মতো কাজলটানা চোখে অদিতি এসেছিলেন ঢাকেশ্বরী মন্দিরে। তবে চশমা পরায় চোখটা তেমন বোঝা যাচ্ছিল না। কালো লেগিংস দিয়ে গোল ঘেরের লাল টপ পরেছিলেন সপ্তমীতে। তাতে ব্লক প্রিন্টের নকশা, নিচের অংশে হলুদ লেস। অক্সিডাইজড হালকা গয়না পরেছিলেন কানে ও গলায়। এক হাতে শাঁখা আর কপালে লাল টিপ। চুলটা হাতে মুড়িয়ে কাঁটায় গোঁজা। লম্বা চিকন ফিতার ছোট মোবাইল ব্যাগের নকশাও মন্দ নয়। সেলফি তোলার সময় ক্যামেরাবন্দী হলেন তিনি।
কাঠের মালায় পূজার সাজ
সুস্মিতা জোয়ার্দার থাকেন ঢাকার বনানীতে। সপ্তমীর বিকেলে বেরিয়েছিলেন বিশ্বরঙ থেকে কেনা একটা পোশাক পরে। পোশাকের সঙ্গে কয়েক লহরের কাঠের মালা। সঙ্গে জিনসের স্টাইলিশ ব্যাগ। ঢাকেশ্বরী মন্দিরে পূজা দেখতে এসে জানালেন, পূজার কদিন ভিন্ন ভিন্ন সাজপোশাকে ঘুরবেন শহরের এ-মাথা থেকে ও-মাথা।