রোজা প্রায় শেষ। ঈদ আসন্ন। শেষ হয়ে আসছে কেনাকাটা। যদিও এবারের ঈদে ফ্যাশন হাউসগুলোর বিক্রি এখনো আশানুরূপ নয়। তাই তাদের পাশে এবার দাঁড়ালেন জনপ্রিয় মডেল ও অভিনয়শিল্পী সাদিয়া ইসলাম মৌ। সবাইকে অনুরোধ জানালেন, অন্তত একটা পোশাক কিনে এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত সবার প্রতি সহমর্মী হতে।
কথায় বলে, মানুষ যত বেশি মানবিক হবে, পৃথিবী তত বেশি সুন্দর হবে। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের স্থানীয় ফ্যাশনশিল্প খাতের সঙ্গে জড়িত মানুষদের পাশে দাঁড়ালেন জনপ্রিয় মডেল ও অভিনয়শিল্পী সাদিয়া ইসলাম মৌ এবং দেশের মানুষকেও তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানালেন তিনি।
করোনা সংকটে নানাভাবে আক্রান্ত পৃথিবী। শুধু স্বাস্থ্যঝুঁকি নয়, অর্থনৈতিক ঝুঁকিতেও পুরো বিশ্বের মানুষ। লকডাউনের কারণে ক্রমাগত ব্যাহত হচ্ছে মানুষের আয়–রোজগার, যার প্রভাব পড়ছে আমাদের ফ্যাশনশিল্পেও। ফ্যাশন উদ্যোক্তারা দিনাতিপাত করছেন নানা অনিশ্চয়তায়। এর একটি বড় কারণ হচ্ছে, বাংলাদেশের মানুষ প্রধানত পোশাক কেনে উৎসবগুলোতে। আর গত বছর দেশের প্রধান দুটি উৎসব অতিবাহিত করতে হয়েছে কঠিন লকডাউনের মধ্যে। এ কারণে ফ্যাশন উদ্যোক্তারা ছিলেন বিক্রিহীন। যার প্রভাব পড়েছে কারিগর থেকে বিক্রয়কর্মী পর্যন্ত। এ বছর লকডাউন কিছুটা শিথিল হলেও মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে যাওয়ায় পোশাকের বিক্রিও কমেছে। এমন পরিস্থিতিতে মানবিক কারণে হলেও এই শিল্প খাতের মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন জনপ্রিয় মডেল ও অভিনয়শিল্পী সাদিয়া ইসলাম মৌ।
ফ্যাশন হাউস বিশ্বরঙের আহ্বানে সাড়া দিয়ে ২ মিনিট ২০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও বার্তা দিয়েছেন সাদিয়া ইসলাম মৌ। ফ্যাশনশিল্পের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের জন্য সবাইকে সমব্যথী হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি। বিশ্বরঙের কর্ণধার ফ্যাশন ডিজাইনার বিপ্লব সাহার অনুরোধে এর আগে নন্দিত অভিনয়শিল্পী জয়া আহসান ও ফেরদৌসও দেশীয় ফ্যাশনশিল্পের পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ জানান।
ভিডিওর শুরুতেই বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে সাদিয়া ইসলাম মৌ বলেন, ‘এখন আসলে আমরা কেউই ভালো নেই। তবু ভালো থাকার চেষ্টা করতে হবে আমাদের। আর মানুষের প্রতি যতটা সম্ভব মানবতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। আর আসছে ঈদ। আমাদের অনেক বড় একটি উৎসব। কিন্তু গত বছর থেকে আমরা সেভাবে ঈদ উদযাপন করতে পারছি না।’ আর তাই এবারের ঈদে তিনি মানুষ হিসেবে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ জানান। তিনি বিশেষভাবে উল্লেখ করেন বাংলাদেশের দেশীয় পোশাকশিল্পের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের পাশে দাঁড়ানোর কথা। এর মাধ্যম হতে পারে অন্তত একটি দেশীয় পোশাক কেনা।
সঙ্গে সাদিয়া ইসলাম মৌ আরও মনে করিয়ে দেন, ‘পোশাক কেনা মানে এই নয় যে আপনাকে শপিং মলে বা মার্কেটে যেতেই হবে। এখন ঘরে বসেই নিশ্চিন্তে শপিং করা সম্ভব অনলাইনে। আর এভাবে আমরা একই সঙ্গে অনেকগুলো পরিবারের পাশে দাঁড়াতে পারব।’ একটি বিষয়ে তিনি জোর দিয়েই বলেন, ‘একটি পোশাক বিক্রি হলে শুধু উদ্যোক্তা লাভবান হন, তা কিন্তু নয়। আরও অনেকগুলো মানুষের উপার্জন নিশ্চিত হয়।
ফলে তাঁদের পরিবারের জন্যও খাদ্যের ব্যবস্থা হয়। তাই নিজের জন্য বা পরিবারের জন্য ঈদের পোশাক কেনা মানে ফ্যাশনশিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সাহায্য করা।’ করোনার কারণে গত এক বছরে এই খাত থেকে ঝরে পড়েছে অনেক দক্ষ কারিগর ও কারুশিল্পী। তাই দেশের কারুশিল্প ও ঐতিহ্যকে বাঁচাতে সবার সহযোগিতা চান তিনি।
ছবি: বিশ্বরঙ