নিজের শরীর থেকে সুরভি ছড়াতে কে না ভালোবাসে! কোথায় কখন কীভাবে কোন পারফিউম লাগাবেন, তা নিয়ে রয়েছে বিস্তর গবেষণা। এর বাইরেও রয়েছে বেশ কিছু কৌশল। জায়গা ও কায়দা ভুল হলে যতই পারফিউম লাগান না কেন, বেশিক্ষণ টিকবে না।
কীভাবে বুঝবেন কোন পারফিউমটা আপনার উপযোগী
সুগন্ধির সর্বশেষ উপাদান কি জানেন? আপনার শরীরের নিজস্ব ঘ্রাণ। এ জন্যই অন্য কারও দেহে যে পারফিউম ভালো লাগে, আপনার শরীরে লাগানোর পর সেটা আর ভালো না-ও লাগতে পারে। এমনকি সে আপনার মা কিংবা বোন হলেও। কেননা, আমাদের প্রত্যেকের শরীরই আলাদা আলাদা রসায়নে তৈরি। আর এ কারণেই প্রত্যেকের আঙুলের ছাপ আর হাতের লেখার মতো শরীরের ঘ্রাণও আলাদা। পারফিউম আর আপনার শরীরের নিজের ঘ্রাণ মিলে যে ঘ্রাণটি তৈরি হয়, সেটিই অন্যদের নাকে গিয়ে পৌঁছায়। তাই যেকোনো পারফিউম কেনার পর সেটি কবজিতে লাগিয়ে ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। তারপর দেখুন, ঘ্রাণটি আপনার কেমন লাগছে!
কোথায় পারফিউম লাগাবেন
সুগন্ধি লাগানোর জন্য শরীরের কিছু ‘পালস পয়েন্ট’ আছে। বগল, ঘাড়, কবজি এগুলোই সবচেয়ে কমন। এর বাইরে শরীরের কিছু জায়গা আছে, সেখানে হয়তো আপনি কখনো পারফিউম দেওয়ার কথা ভাবেননি। কিন্তু সেই জায়গাগুলো সৌরভ ধরে রাখে অনেকক্ষণ। যেমন কলার বোন, হাঁটুর পেছনের অংশ, কানের ওপরের অংশ, পায়ের গোড়ালি, নাভি, নারীদের ক্লিভেজ, চুল।
তবে চুলে সরাসরি পারফিউম স্প্রে করা যাবে না। কেননা, কমবেশি সব পারফিউমেই অ্যালকোহল থাকে। আর সেটা চুলকে শুষ্ক করে দেয়। আপনি পারফিউম দুই হাতের তালুতে স্প্রে করুন। তারপর দুই হাতে তালি দিন। এতে অ্যালকোহল বাতাসে মিশে যাবে। তারপর সেই হাতে চুলে বিলি কাটুন। চুলে পৌঁছে গিয়ে আটকে থাকবে সুরভি। চুলে পারফিউম লাগানোর আরেকটি সহজ উপায় আছে। চিরুনিতে পারফিউম স্প্রে করুন। ২০ সেকেন্ড অপেক্ষা করুন। এবার চিরুনি দিয়ে চুলটা আঁচড়ে নিন।
কখন পারফিউম লাগাবেন
দিনে আর রাতে দুই ধরনের পারফিউম ব্যবহার করা হয়। দিনে সাধারণত একটু ভারি বা তীব্র আর রাতে হালকা মেজাজের পারফিউম লাগানো হয়। গোসলের পরে শরীরের রোমকূপগুলো খুলে যায়। তাই তখন পারফিউম দিলে সেটি রোমকূপের ভেতরে পৌঁছে দীর্ঘস্থায়িত্ব পায়। আর পারফিউম দেওয়ার আগে ও পরে আপনি যদি ময়েশ্চারাইজার বা ক্রিম ব্যবহার করেন, তাতেও পারফিউম নিজের ভেতর টেনে নেয় ত্বক। ফলে অনেক্ষণ ধরে সৌরভ ছড়ানো যায়। অনেকেই শুধু শরীরের ওপরের অংশে পারফিউম লাগান। কিন্তু শরীরের নিচের দিকের অংশে সুগন্ধি স্প্রে করলে স্থায়িত্ব বেশি হয়। কেননা, নিচের পালস পয়েন্টগুলো থেকে গন্ধটা ধীরে ধীরে ওপরের দিকে উঠে আসে।
যে কাজগুলো করা যাবে না
অতিরিক্ত সুগন্ধি মাখার অভ্যাস থাকলে এখনই বাদ দিন। এতে অ্যালকোহলের প্রভাবে আপনার ত্বক স্বাভাবিকতা হারিয়ে শুষ্ক হয়ে যাবে। দ্বিতীয়ত, আপনার সুগন্ধির ঝাঁজ অন্যের বিরক্তির কারণ হতে পারে। সে রকম হলে তা আপনার ব্যক্তিত্বের জন্য ক্ষতিকর। পারফিউমের কড়া গন্ধে ভ্রু কুঁচকে যাওয়ার অভিজ্ঞতা আমাদের প্রায়ই হয়। পারফিউম ঘরে থাকতেই লাগিয়ে নিন। এতে আপনার ঘরে আলাদা করে এয়ার ফ্রেশনার দেওয়ার দরকার পড়বে না। আপনি বের হয়ে যাওয়ার অনেকক্ষণ পর্যন্ত ঘরে থাকবে সেই সৌরভ। তবে কাপড়ে সুগন্ধি লাগাবেন না। এতে সুগন্ধি দ্রুত বাতাসে মিশে যাবে। আর কাপড়েও দাগ পড়তে পারে।