সুস্থ থাকতে প্রত্যেকের উচিত শরীরের আদর্শ ওজন সম্পর্কে জানা, তা ধরে রাখার চেষ্টা করা। অনেক সময় ওজন মাপার বিভিন্ন যন্ত্রে ভিন্ন ভিন্ন মাপ আসে, তাতে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়। আবার অনেকে ঘন ঘন ওজন মাপতে গিয়ে হতাশায় ভোগেন।

ওজন মাপার আদর্শ ও সঠিক সময় হলো সকালবেলা। ঘুম থেকে ওঠার পর টয়লেট সেরে কোনো নাশতা বা চা-পানীয় না খেয়ে ওজন মাপা। এ সময় শরীর সবচেয়ে হালকা থাকে। সপ্তাহে কিংবা মাসে এক দিন সকালবেলা ওজন মাপুন।
একটি নির্দিষ্ট যন্ত্রে ওজন মাপা ভালো। কারণ, একেক যন্ত্রে একেক রকম ওজন দেখাতে পারে। তাতে অনেকেই বিভ্রান্তিতে পড়েন। যন্ত্রের কাঁটা সঠিক জায়গায় আছে কি না, লক্ষ করুন। কাঁটা এদিক-ওদিক হয়ে গেলে মাপ বিভিন্ন রকম হবে। আবার যন্ত্রটিও অনেক দিন ব্যবহার করার পর নষ্ট হয়ে যেতে পারে। বেশি পুরোনো হলে বা উল্টে-পাল্টা পরিমাপ দিলে পরিবর্তন করুন। ভালো ব্র্যান্ডের যন্ত্র কিনতে চেষ্টা করুন। শরীরের ওজন মাপার যন্ত্রে ভারী জিনিস মাপলে তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়।
কার কত ওজন হওয়া উচিত, তার সূচক হলো বিএমআই বা বডি ম্যাস ইনডেক্স। বিএমআই মাপার জন্য উচ্চতা জানতে হবে। উচ্চতা মিটারে আর ওজন কিলোগ্রামে (কেজি) মাপতে হবে। এবার এই ওজনকে উচ্চতার বর্গ দিয়ে ভাগ করলেই পেয়ে যাবেন বিএমআই। একজন পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তির স্বাভাবিক বিএমআই হলো ১৮ দশমিক ৫ থেকে ২৪ দশমিক ৯। বিএমআই ২৫ থেকে ২৯ দশমিক ৯ হলে আপনি ওভারওয়েট বা ওজনাধিক্যে ভুগছেন। আর বিএমআই ৩০-এর ওপর মানে ওবেসিটি বা স্থূলতায় আক্রান্ত। আবার বিএমআই ১৮ দশমিক ৫-এর নিচে হলে আপনি আন্ডারওয়েট। মুঠোফোন বা ইন্টারনেটে বিএমআই পরিমাপক অ্যাপ থাকে। এতে আপনার উচ্চতা (মিটার) আর ওজন (কিলোগ্রাম) দিলে বিএমআই হিসাব করে বের করে দেয়।
আগের ওজনের চেয়ে ৬ মাস থেকে ১ বছর সময়ের মধ্যে ৫ শতাংশ ওজন কমে যাওয়া বা পরিবর্তিত হওয়া খারাপ। কারও ওজন যদি ৭২ কেজি হয় আর ৬ মাসের মধ্যে যদি কোনো চেষ্টা ছাড়াই ৩ কেজি ৬০০ গ্রাম ওজন কমে যায়, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। যাঁরা ওজন কমানোর চেষ্টা করছেন বা ডায়েট কন্ট্রোল ও ব্যায়াম করছেন, তাঁদের জন্যও সপ্তাহে ৫০০ গ্রাম থেকে ১ কেজি ওজন কমানোর লক্ষ্য রাখা ভালো, এর বেশি নয়।
যন্ত্রটি কার্পেট, ম্যাট বা মেঝেতে সমান জায়গায় রাখুন।
ভারী জামাকাপড় খুলে রাখুন। মুঠোফোন, মানিব্যাগ, ভ্যানিটি ব্যাগ বা ফাইল সরিয়ে রাখুন।
জুতা পরে ওজন মাপবেন না।
পেট ভরে খেয়েই বা অনেক পানি বা তরল পান করার পরপর ওজন মাপবেন না।
ব্যায়ামের পরপরও ওজন মাপবেন না।
নারীরা পিরিয়ডের সময় বাদ দিয়ে ওজন মাপুন।
যাঁরা ওজন কমানোর চেষ্টা করছেন, তাঁরা ওজন মেপে একটা চার্ট তৈরি করুন।
অনেক যন্ত্র পাউন্ডে ওজন দেখায়। পাউন্ডকে কিলোগ্রামে রূপান্তর করতে প্রাপ্ত ওজনকে ০.৪৫ দিয়ে গুণ করতে হবে।