গর্ভধারণের প্রথম ২০ সপ্তাহে জলবসন্ত হলে ৩ থেকে ৪ শতাংশ ক্ষেত্রে গর্ভপাত, শিশুর চোখ, মস্তিষ্ক ও হাত-পায়ের জন্মগত ত্রুটির ঝুঁকি রয়েছে।

চিকেন পক্স বা জলবসন্ত ভাইরাসজনিত একটি সংক্রমণ। ভ্যারিসেলা জোস্টার ভাইরাসের কারণে এ রোগ হয়। সাধারণত শীত ও বসন্তকালে এর প্রাদুর্ভাব বেশি দেখা যায়।
সংক্রমণের ওপর নির্ভর করে জলবসন্তের উপসর্গ সাধারণত ৫ থেকে ১০ দিন স্থায়ী হয়। আক্রান্ত ব্যক্তির দেহে ছোট ছোট ফোসকার মতো উঠে তা সারা দেহে, বিশেষ করে বুক, পেট ও মুখে ছড়ায়। এগুলো বেশ চুলকায়, সঙ্গে জ্বর, হাত-পায়ে ব্যথা ও শারীরিক দুর্বলতা দেখা দেয়। শরীরে ফোসকা দেখা দেওয়ার দুই দিন আগে থেকে সাত দিন পর্যন্ত সংক্রমণ একজন থেকে অন্যজনে ছড়ানোর আশঙ্কা বেশি।
গর্ভধারণের প্রথম ২০ সপ্তাহে জলবসন্ত হলে ৩ থেকে ৪ শতাংশ ক্ষেত্রে গর্ভপাত, শিশুর চোখ, মস্তিষ্ক ও হাত-পায়ের জন্মগত ত্রুটির ঝুঁকি রয়েছে। প্রসবের পাঁচ দিনের মধ্যে মা আক্রান্ত হলে নবজাতকের আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। গর্ভাবস্থায় মায়েদের ক্ষেত্রে সংক্রমণের তীব্রতা বেশি হলে তা থেকে অন্যান্য জটিলতা, যেমন নিউমোনিয়া, হেপাটাইটিস, মস্তিষ্কের প্রদাহ, চামড়ায় ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণ এমনকি মায়ের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা, জ্বরের জন্য প্যারাসিটামল এবং চুলকানি কমাতে অ্যান্টিহিস্টামিন–জাতীয় ওষুধ সেবন, চামড়ায় সংক্রমণ বেশি হলে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ক্রিম বা ক্ষেত্রবিশেষে অ্যান্টিবায়োটিক সেবন, নিয়মিত গোসল করা, নখ দিয়ে ফোসকা খোঁটা বা উঠিয়ে না ফেলা, সংক্রমণ রোধে আলাদা ঘর ও বিছানার ব্যবহার, প্রতিদিন অন্তত দুই বেলা কাপড় বদলানো ও সুতির ঢিলেঢালা পোশাক পরতে হবে।
তীব্র জ্বর ও গায়ে ব্যথা, বুকব্যথা বা শ্বাসকষ্ট, মাথাব্যথা, বমি, সারা গায়ে অতিমাত্রায় ফোসকা বা র্যাশ অথবা যোনিপথে রক্তপাত হলে।
একবার আক্রান্ত হলে পরবর্তী সময়ে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা প্রায় নেই। যদি নিশ্চিত হওয়া যায়, আগেই জলবসন্ত হয়েছে, তবে গর্ভাবস্থায় ঘাবড়ে যাওয়ার কোনো কারণ নেই। নিশ্চিত না হতে পারলে টিকা নেওয়া যেতে পারে। খেয়াল রাখতে হবে, টিকা নেওয়ার তিন মাসের মধ্যে গর্ভধারণ করা যাবে না।