ভালো থাকুন

সমস্যাটি গুরুতর নয়, বিব্রতকর

বয়স্ক পুরুষদের ঘন ঘন প্রস্রাব লাগা, প্রস্রাবের গতি কমে যাওয়া, কখনো হঠাৎ আটকে যাওয়া—এ ধরনের বিরক্তিকর ও বিব্রতকর সমস্যার পেছনে রয়েছে প্রস্টেট গ্রন্থির বৃদ্ধি। একে বলা হয় বিনাইন প্রস্টেট এনলার্জমেন্ট বা বিইপি। বয়সের সঙ্গে প্রস্টেট গ্রন্থির স্ফীতি ঘটে। পঞ্চাশোর্ধ পুরুষের এটি একটি সাধারণ সমস্যা। বলা হয় যে পুরুষ হরমোন টেস্টোস্টেরন শুষে নেওয়ার কারণেই প্রস্টেট গ্রন্থির এই অনাকাঙ্ক্ষিত বৃদ্ধি। আর এই স্ফীতির কারণে মূত্রপথ সরু হয়ে যায়, চাপ পড়ে মূত্রথিল ও এর আশপাশের স্নায়ুর ওপরও। এ কারণে দেখা দেয় নানা সমস্যা।
প্রস্টেটের জন্য যত সমস্যা
-ঘন ঘন প্রস্রাবের বেগ হওয়া, বিশেষ করে রাতে -প্রস্রাব আটকে রাখতে সমস্যা -কখনো টয়লেটে গিয়ে প্রস্রাব শুরু করতেই সমস্যা, গতি কমে আসা বা হঠাৎ মাঝখানে আটকে যাওয়া -প্রস্রাব করার পর অসম্পূর্ণ মনে হওয়া -অনিচ্ছাকৃত প্রস্রাব ফোঁটায় ফোঁটায় বের হয়ে যাওয়া -কখনো প্রস্রাবের সঙ্গে রক্তও যেতে পারে। হতে পারে সংক্রমণ।
কী করবেন
চিকিৎসক উপসর্গ বিবেচনা করে পরীক্ষার মাধ্যমে প্রস্টেটের আকার-আকৃতি ইত্যাদি বুঝতে পারেন। তারপর কিছু রুটিন পরীক্ষা যেমন: প্রস্রাবে সংক্রমণ আছে কি না, কিডনির কার্যকারিতা দেখার জন্য রক্তে ইউরিয়া ও ক্রিয়েটিনিন পরীক্ষা করা হয়। প্রস্টেট ও এর আশপাশের অংশ, মূত্রথলির ধারণক্ষমতা বা প্রস্রাব জমে আছে কি না ইত্যাদি দেখার জন্য একটি আলট্রাসনোগ্রাম করা হয়। প্রস্টেটের এই বৃদ্ধি ক্যানসারজনিত কি না, তা নির্ণয় করার জন্য প্রস্টেট স্পেসিফিক এন্টিজেন, প্রয়োজনে মূত্রনািলর এন্ডোস্কোপি, বায়োপসি ইত্যাদিও করা লাগতে পারে। এসব ফলাফলের ওপর ভিত্তির করে চিকিৎসক ব্যবস্থাপত্র দেন।
চিকিৎসা কী
অনেক সময় চিকিৎসার প্রয়োজন নেই। কেবল বছরে একবার সবকিছু যাচাই করে নিতে হবে অর্থাৎ চিকিৎসকের নজরদারিতে থাকতে হবে। তবে যাঁদের মূত্রনািল সংকুচিত হতে শুরু করেছে তাঁদের অস্ত্রোপচার দরকার হতে পারে। কখনো কখনো চিকিৎসক মূত্রের গতি বাড়ানো ও মূত্রথলি যথাযথভাবে শূন্য করার কিছু ওষুধও দিয়ে থাকেন।
আপনার করণীয়
বিইপি গুরুতর কোনো রোগ নয়, তবে বিব্রতকর সমস্যা তৈরি করে। এ ক্ষেত্রে আপনি নিজের জীবনাচরণে কিছু পরিবর্তন আনতে পারেন। সন্ধ্যার পর কম পানি পান করুন, চা, কফি, অ্যালকোহল ইত্যাদি এ সময় এড়িয়ে চলুন। উষ্ণ ঘরে শোবার চেষ্টা করুন। মূত্রথলির ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য কিছু ব্যায়াম করতে পারেন। ওজন কমান। কিছু ওষুধ এ সমস্যাগুলো বাড়িয়ে দিতে পারে, তাই যেকোনো ওষুধ সেবন করার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন ও তাঁকে বিষয়টি জানান।
সার্জারি বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল|