দিনবদলের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের আচার-আচরণ, রুচি কিংবা অভ্যাস পাল্টে যায়। ভোজ্যতেলের ব্যবহারের ক্ষেত্রেও সেটা বিদ্যমান। বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্যসচেতন মানুষ নানাভাবে চেষ্টা করে স্বাস্থ্যকর খাদ্যপণ্য সংগ্রহ করতে। বাংলাদেশের মানুষও এর বাইরে নয়। অন্যান্য উপকরণের পাশাপাশি তেলের ব্যাপারেও সবার সচেতনতা লক্ষণীয়।
বলার অপেক্ষা রাখে না, শর্ষের তেলের জায়গা একসময় নিয়ে নেয় সয়াবিন তেল। আবার প্রয়োজনের তাগিদে সেই সয়াবিন তেলকে ক্রমশ সরিয়ে দিচ্ছে রাইস ব্রান অয়েল। এই যে গ্রহণ আর বর্জনের প্রক্রিয়া, এর মূলে কিন্তু ঘুরেফিরে আসে সেই স্বাস্থ্যসচেতনতার বিষয়। এ ক্ষেত্রে বলার অপেক্ষা রাখে না, বাজারে অনেক ব্র্যান্ডের রাইস ব্রান অয়েলের ভিড়ে স্বাস্থ্যসচেতন বাঙালি ঠিকই বেছে নিচ্ছে। ভরসা রাখছে ফরচুন ফর্টিফায়েড এডিবল রাইস ব্রান অয়েলে।
স্বাভাবিক তাপে সয়াবিন তেল ব্যবহারে তেমন ক্ষতি না হলেও ভাজাপোড়ায় ব্যবহারের সময় তেলটি দীর্ঘ সময় ধরে চড়া তাপে গরম করলে এর মধ্যে থাকা ‘আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড’ রূপান্তরিত হয় ‘ট্রান্স ফ্যাটি অ্যাসিডে’। এটি শরীরে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করতে পারে। অন্যদিকে রাইস ব্রান অয়েলের ‘ফ্যাটি অ্যাসিড কম্পাউন্ড’ শরীরের জন্য বেশ উপকারী। বিশেষত এ তেলের ঔষধি গুণ শরীর সুস্থ রাখে। এই তেল রক্তনালি পরিষ্কার করে এবং পুষ্টির ভারসাম্য বজায় রাখে। শুধু তা-ই নয়, রাইস ব্রান অয়েল মরণব্যাধি ক্যানসার প্রতিরোধেও সহায়তা করে।
গবেষণায় দেখা গেছে, নার্ভাস সিস্টেমকে আরও কার্যকর করে তোলে রাইস ব্রান অয়েল। ফলে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, যা দেহে ক্ষতিকর কোলেস্টেরল তৈরি হওয়া নিয়ন্ত্রণ করে। তাই কোনো উপলক্ষ কিংবা দাওয়াতে বিশেষ খাবারের পাশাপাশি ভাজি, ভর্তা, আচার ও চাটনিতেও আজকাল এ তেলের ব্যবহার লক্ষণীয়। আর বিকেলের নাশতাকে আরও মুখরোচক করে তুলতে এর যেন কোনো বিকল্প নেই।
মজার বিষয় হলো, রাইস ব্র্যান অয়েল তৈরি হয় ধানের তুষ থেকে, যা একসময় ব্যবহৃত হতো জ্বালানি আর গোখাদ্য হিসেবে। প্রযুক্তির উৎকর্ষের কল্যাণে এখন তা নিংড়ে তেল বের করা হচ্ছে। বাজারে বেশ কয়েকটি ব্র্যান্ডের রাইস ব্র্যান অয়েল রয়েছে; এর মধ্যে ফরচুন ফর্টিফায়েড এডিবল রাইস ব্র্যান অয়েল একটি। এই তেলে নির্ধারিত মাত্রায় রয়েছে গামা ওরাইজেনল; যা প্রতি ১০০ গ্রামে আছে ১০০০ মিলিগ্রাম। এই মাত্রায় গামা ওরাইজেনল না থাকলে সেই রাইস ব্রান অয়েলের কার্যকারিতা থাকে না।
উল্লেখ্য, গামা ওরাইজেনল ভালো কোরেলেস্টেরল বাড়ায় এবং খারাপ কোলেস্টেরল কমায়। এমনকি শরীরে কোলেস্টেরল উৎপন্ন হতে দেয় না। এজন্যই নিঃসন্দেহে ভরসা করা যায় ফরচুন ফর্টিফায়েড এডিবল রাইস ব্র্যান অয়েলের উপর। কারণ গুণগত মান বজায় রাখার ক্ষেত্রে ফরচুন আপোষহীন। কাঁচামাল সংগ্রহ থেকে সংরক্ষণ এবং তেল উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের প্রতিটি ধাপেই থাকে তীক্ষ্ণ নজরাদরীর ব্যবস্থা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গবেষণা অনুসারে, রাইস ব্রান অয়েল সিরাম কোলেস্টেরল কমাতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে এবং এতে বিদ্যমান উপকারী উপাদান রক্তের টিজির পরিমাণ কমানোতে বেশ কার্যকর। পাশাপাশি হার্টের আর্টারিতে চর্বি জমতে না দেওয়ার কাজটিও সুনিপুণভাবে করে থাকে।
এ ক্ষেত্রে চোখ বন্ধ করে ভরসা করা যায় ফরচুন ফর্টিফায়েড এডিবল অয়েলের ওপর। কারণ, এই তেলের গুণগত মান বজায় থাকে এবং এতে রয়েছে নির্ধারিত মাত্রায় গামা ওরাইজেনল। এ জন্য ফরচুন ফর্টিফায়েড এডিবল রাইস ব্রান অয়েলকে হার্ট–ফ্রেন্ডলি অয়েলও বলা হয়।
জেনে রাখা প্রয়োজন, রাইস ব্রান অয়েল প্রস্তুত করার সময় এটিকে বিশেষ প্রক্রিয়ায় শোধন করা আবশ্যক। নয়তো তা শরীরে নানাবিধ ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। গবেষণালব্ধ তথ্য অনুসারে, বিভিন্ন ব্র্যান্ডের রাইস ব্রান অয়েলের মধ্যে এর গুরুত্বপূর্ণ কতগুলো উপাদানের অস্তিত্ব পাওয়াই যায়নি। কোনোটিতে আবার পাওয়া গেলেও নির্ধারিত পরিমাণের চেয়ে অনেক কম। কারণ, এ–জাতীয় ব্র্যান্ডগুলো রাইস ব্রান অয়েল তৈরিতে নিম্নমানের উপাদান ব্যবহারের পাশাপাশি এর সঙ্গে অন্য তেলও মিশিয়ে বাজারজাত করছে। কেউ কেউ পণ্যের লেবেলে মিথ্যা তথ্য দিয়ে গ্রাহকদের ঠকাচ্ছে।
তাই রাইস ব্রান অয়েলের গুণগত মান যাচাই এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের (বিএআরসি) পুষ্টি ইউনিট ‘কন্টামিনেশন অ্যান্ড অ্যাডাল্টারেশন অব ফুড অ্যান্ড ফুড প্রোডাক্টস, প্রসেস, চেইন অ্যান্ড মলিফিকেশন’ শীর্ষক এক গবেষণা প্রকল্প পরিচালনা করছে। যার আওতায় দেশের বাজারে পাওয়া সব ব্র্যান্ডের রাইস ব্রান অয়েলের নমুনা সংগ্রহ করে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ল্যাবরেটরি এসজিএস বাংলাদেশ কর্তৃক তেলের গুণগত মান যাচাই করে দেখা হয়। এর মাধ্যমে রাইস ব্রান অয়েলের গুণগত মান সম্পর্কে সহজেই নিশ্চিত হওয়া যায়। এই মান পরীক্ষায় সাফল্যের সঙ্গেই উতরে গেছে ফরচুন ফর্টিফায়েড এডিবল রাইস ব্রান অয়েল। কারণ, এই তেলের গুণগত মান বজায় থাকছে এতে প্রয়োজনীয় উপাদানের নির্ধারিত মাত্রায় উপস্থিতিতে। ফলে ফরচুন ফর্টিফায়েড এডিবল রাইস ব্রান অয়েলকে বেছে নেওয়া যায় কোনো দ্বিধা না করেই।
অনেকেই স্বাদ ও স্বাস্থ্যকে একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করে থাকে। অবশ্য এর পেছনে রয়েছে প্রচলিত কিছু স্বাস্থ্যতথ্য, অনেকের কাছে তা বিশেষ গ্রহণযোগ্যতা পায় না। এর প্রধান কারণ হলো ভোজনরসিক বাঙালি আর যা-ই করুক না কেন, খাবারে স্বাদের বিষয়টিতে ছাড় দিতে নারাজ। অথচ স্বাদ ও সুস্বাস্থ্যের যে চমৎকার একটি সমন্বয় সাধন করা যেতে পারে, সে ব্যাপারে অনেকের খেয়াল থাকে না। এ ক্ষেত্রে ফরচুন ফর্টিফায়েড এডিবল রাইস ব্রান অয়েল হতে পারে রান্নার একটি নির্ভরযোগ্য বন্ধু।
সাধারণ মানুষের কাছে বিশেষ এই তেলের চাহিদা বৃদ্ধির মূল কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে এর দীর্ঘমেয়াদি ব্যবহার উপযোগিতা। কারণ, এটি উচ্চ তাপমাত্রায় স্থিতিশীল। তা ছাড়া এতে বিদ্যমান বিভিন্ন ফ্যাটি অ্যাসিডের স্বাস্থ্যকর সমন্বয় এর গুণগত মান বজায় রেখে স্বাদ ও গন্ধকে অপরিবর্তিত রাখতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। শুধু তা-ই নয়, এ–জাতীয় তেলে অন্যান্য ভোজ্যতেলের তুলনায় আঠালো ভাব কম থাকায় এর গ্রহণযোগ্যতাও বেশি এবং পরিমাণে কম লাগে বলে স্বাস্থ্যের জন্যও উপকারী।
একথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে গুণগত মান বিচারে রাইস ব্রান অয়েল অন্যান্য ভোজ্যতেল থেকে আলাদা। তবে আজকাল সবাই সেরার মধ্যেও সেরাটি বেছে নিতে বেশি আগ্রহী। আর তা শনাক্ত করার উপায়ও বেশ সহজলভ্য। তাই স্বাদ ও স্বাস্থ্যের সেরা সমন্বয় বলতেই যে নামটি শুরুতে ভাবনায় আসে তা হলো, ফরচুন ফর্টিফায়েড এডিবল রাইস ব্রান অয়েল।