স্তন ক্যানসার নিয়ে ভুল ধারণা

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

স্তন ক্যানসার জয় করতে হলে শুধু সচেতনতা নয়, স্তন ক্যানসার নিয়ে আমাদের মধ্যে থাকা সব গোপনীয়তা, লজ্জা, ভয় ও মনের মধ্যে দীর্ঘদিনের পুষিয়ে রাখা বিভিন্ন ভুল ধারণা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। তাহলে স্তন ক্যানসারকে সহজে, সবাইকে সঙ্গে নিয়ে জয় করা সম্ভব। তাহলে স্বাভাবিক জীবন ফিরে পাবেন হাজারো জীবন।

ভুল ধারণা
অনেক ভুল ধারণা রয়েছে স্তন ক্যানসার নিয়ে, যেগুলো ঠিক চিকিৎসা থেকে আপনাকে যোজন যোজন মাইল দূরে সরিয়ে রাখে। ভুল ধারণার কয়েকটি—

* স্তন ক্যানসার ছোঁয়াচে।

* শুধুই বংশগত।

* স্তনে ব্যথা মানেই ক্যানসার।

* শুধু বেশি বয়সী নারীর স্তন ক্যানসার হয়, অল্প বয়সীদের হয় না।

* গর্ভবতী মায়ের স্তন ক্যানসার হয় না।

* পুরুষদের কখনোই স্তন ক্যানসার হয় না।

* স্তন ক্যানসার হলেই নারী আর মা হতে পারবেন না।

* স্তন ক্যানসার মানেই নারীর সবকিছু শেষ হয়ে যায়, তাঁর আর কোনো মূল্য নেই। তাঁকে নিয়ে সংসার করা যাবে না, সে সবকিছুর ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে।

* ধূমপান, মদ বা অ্যালকোহলের সঙ্গে স্তন ক্যানসারের সম্পর্ক নেই।

* স্তন ক্যানসার মানেই মৃত্যু নিশ্চিত।

* যেকোনো অবস্থাতেই স্তন ক্যানসারের অপারেশন সম্ভব বা অপারেশন না করে শুধু ওষুধ দিয়ে স্তন ক্যানসার সম্পূর্ণ ভালো করা যায়।

* অপারেশনের পর আর কোনো চিকিৎসা নেওয়ার প্রয়োজন নেই, এমনকি অপারেশনের পর পুরো স্তন পরীক্ষা করার প্রয়োজন নেই।

* কেমোথেরাপি শুধু অপারেশনের পর দেওয়া হয় এবং এটা খুব কষ্টদায়ক চিকিৎসা পদ্ধতি। অনেকে মনে করে স্তন ক্যানসারে কেমোথেরাপির প্রয়োজন নেই এবং কেমো মানেই বিষ, যার অনেক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, ফলে চুল পড়ে যায় এং চুল আর কখনোই গজায় না। আবার কেউ মনে করেন শেষ চিকিৎসাই হলো কেমোথরাপি।

* রেডিওথেরাপি মানে বৈদ্যুতিক শক, যা সারা শরীরে দেওয়া হয় এবং খুব পীড়াদায়ক। ক্যানসারের চিকিৎসা হিসেবে কেমোথেরাপি বা রেডিওথেরাপি দেওয়ার সময় বা পরে রোগীকে ছোঁয়া যাবে না , তাহলে তারও ক্যানসার হবে।

* স্তন ক্যানসারের চিকিৎসা দেশে সম্ভব নয়।

ওপরের সব কটিই ভুল ধারণামাত্র। প্রাথমিক পর্যায়ে স্তন ক্যানসার ধরা পড়লে পুরোপুরি নিরাময় সম্ভব। দেশেই উপযুক্ত চিকিৎসা রয়েছে। ভুল ধারণাগুলো জানুন এবং অন্যকে জানান। জেগে উঠুন, সব ভুল ধারণা মন থেকে ঝেড়ে ডাস্টবিনে ফেলে দিন। সবাই মিলে কাঁধে কাঁধ মিলে এই ক্যানসারকে জয় করি।

সহযোগী অধ্যাপক (সার্জিক্যাল অনকোলোজি),
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা