গবেষণায় দেখা গেছে, ৪০–৫৪ বছর বয়সী নারীরা ৩ গুণ বেশি আক্রান্ত হয়েছেন পুরুষদের তুলনায়
গবেষণায় দেখা গেছে, ৪০–৫৪ বছর বয়সী নারীরা ৩ গুণ বেশি আক্রান্ত হয়েছেন পুরুষদের তুলনায়

কীভাবে বুঝবেন, আপনি লং কোভিডে ভুগছেন

লং কোভিড মানে কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার দীর্ঘদিন পরও কিছু উপসর্গে ভোগা। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে যদি অটোইমিউন রেসপন্স ট্রিগার্ড হয়, তাহলে এসব উপসর্গ দেখা দিতে থাকে। গবেষণা ও জরিপ থেকে জানা গেছে, কোভিড হওয়ার কয়েক বছর পর পর্যন্ত কারও কারও কিছু উপসর্গ দেখা যাচ্ছে।

কাদের ঝুঁকি বেশি

  • যেসব নারীর গুরুতর বা তীব্র কোভিডে সংক্রমণ হয়েছিল।

  • ৬৫ বছরের বেশি বয়সীদের।

  • যাঁদের হৃদ্‌রোগ, ফুসফুসের সমস্যা, ডায়াবেটিস ছিল ও টিকা নেননি।

কীভাবে বুঝবেন

লং কোভিড শনাক্তের জন্য কোনো টেস্ট নেই, লক্ষণ দেখেই বুঝতে হবে। নারী ও পুরুষের মধ্যে লং কোভিডের লক্ষণে ভিন্নতা পাওয়া গেছে। নারীদের লক্ষণগুলোর মধ্যে চুল পড়ে যাওয়া, পরিপাকতন্ত্রের সমস্যা, চোখের শুষ্কতা, ঘ্রাণ ও স্বাদ কমে যাওয়া ইত্যাদি অন্যতম। পুরুষদের ক্ষেত্রে এসব সমস্যা প্রকট নয়, তবে তাঁদের ক্ষেত্রে যৌন সমস্যাই প্রধান।

সাধারণত যেসব লক্ষণ নারী–পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রেই আছে, সেসব হলো চিন্তা করার বা একাগ্রতায় সমস্যা, ভুলে যাওয়ার প্রবণতা, মাথাব্যথা, হাত–পা কাঁপা, নাড়ির গতি বেড়ে যাওয়া, দাঁড়ালে মাথা ঘোরা। কোভিডের অব্যবহিত পরে বা অনেক দিন পর থেকে অনেকেই এসব লক্ষণে হয়তো ভুগছেন।

যেসব নারীর লং কোভিড হয়েছে বা যাঁদের কোনো ভাইরাল ইনফেকশনের পর অটোইমিউন ডিজিজ হয়েছে, তাঁদের মধ্যে একধরনের জিনগত পরিবর্তনও লক্ষ করা গেছে।

গবেষণায় দেখা গেছে, ১৮-৩৯ বছরের নারীদের লং কোভিডের ঝুঁকি ১ দশমিক শূন্য ৪ গুণ। সব বয়সী নারীদের ঝুঁকি পুরুষদের চেয়ে ১-৫ গুণ। মেনোপজের পর ঝুঁকি ১ দশমিক ৪৫ গুণ। দেখা গেছে, ৪০–৫৪ বছর বয়সী নারীরা ৩ গুণ বেশি আক্রান্ত হয়েছেন পুরুষদের তুলনায়। মেনোপজে যেহেতু এস্ট্রোজেন হরমোনের অভাব থাকে, সে জন্য এই ঝুঁকি বেশি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

আরেক গবেষণায় দেখা গেছে, পুরুষদের চেয়ে নারীদের লং কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি ৩১ শতাংশ বেশি। যেহেতু লং কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার সঙ্গে হরমোনের একটা প্রভাব থাকতে পারে, তাই হরমোন রিপ্লেসমেন্ট করলে হয়তো উপকার মিলতে পারে। কারও কারও ক্ষেত্রে খুব স্বল্প পরিমাণ টেস্টোস্টেরন দিয়েও এ ধরনের লং কোভিডের উপসর্গ বা অটোইমিউন ডিজিজ প্রতিরোধ করা যায় কি না, তা নিয়ে ভাবা হচ্ছে। তবে এ বিষয়ে আরও গবেষণা প্রয়োজন।

চিকিৎসা কী

  • লক্ষণ অনুযায়ী মাথাব্যথা, কাশি, দুশ্চিন্তা, বিষণ্নতার ওষুধ গ্রহণ।

  • স্টেলেট গ্যাংলিয়ন ব্লক।

  • ফিজিওথেরাপি।

  • শ্বাসকষ্ট থাকলে পালমোনারি রিহ্যাবিলিটেশন।

  • মানসিক সমস্যার জন্য কাউন্সেলিং।