সিআরপিএস বা কমপ্লেক্স রিজিওনাল পেইন সিনড্রোম একটি দীর্ঘমেয়াদি ব্যথা, সাধারণত হাত বা পায়ে আঘাত, প্লাস্টার বা সার্জারির পর এই ব্যথা দেখা দেয়
সিআরপিএস বা কমপ্লেক্স রিজিওনাল পেইন সিনড্রোম একটি দীর্ঘমেয়াদি ব্যথা, সাধারণত হাত বা পায়ে আঘাত, প্লাস্টার বা সার্জারির পর এই ব্যথা দেখা দেয়

সিআরপিএস বা দীর্ঘমেয়াদি ব্যথা কেন হয়, লক্ষণ ও করণীয়

সিআরপিএস বা কমপ্লেক্স রিজিওনাল পেইন সিনড্রোম একটি দীর্ঘমেয়াদি ব্যথা। সাধারণত হাত বা পায়ে আঘাত, প্লাস্টার বা সার্জারির পর এই ব্যথা দেখা দেয়।

কেন হয় ব্যথা

এই ব্যথা হওয়ার প্রধান কারণ ট্রমা বা আঘাত। সাধারণত হাড় ভাঙা, মচকানো, অস্ত্রোপচার–পরবর্তী জটিলতা থেকে এই সিআরপিএস দেখা দিতে পারে। পাশাপাশি আরও কিছু শারীরবৃত্তীয় কারণও ভূমিকা রাখে, যেমন—

  • নার্ভ ইনজুরি: আঘাতের ফলে স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হলে ব্যথা অস্বাভাবিকভাবে তীব্র হতে পারে।

  • অস্বাভাবিক প্রদাহজনিত প্রতিক্রিয়া: আঘাতের পর শরীরের স্বাভাবিক প্রদাহ প্রক্রিয়া অতিরিক্ত সক্রিয় হয়ে ব্যথাকে বাড়িয়ে তোলে।

  • অটোইমিউন কারণ: কিছু ক্ষেত্রে রোগ প্রতিরোধব্যবস্থা ভুল করে নিজের নার্ভ ও টিস্যুর ওপর আক্রমণ চালায়। ফলে ব্যথা দীর্ঘস্থায়ী হয়।

লক্ষণ বা উপসর্গ

  • তীব্র ও দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা।

  • স্পর্শে অতিসংবেদনশীলতা।

  • অল্প ব্যথা বেশি অনুভূত হওয়া।

  • ত্বকের রং পরিবর্তন (লাল, নীলচে, ফ্যাকাশে)।

  • ফোলা।

  • ঘাম বেশি হওয়া।

  • ত্বক পাতলা বা চকচকে হয়ে যাওয়া।

  • নখ ও চুলের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি।

  • পেশির দুর্বলতা ও জয়েন্ট স্টিফনেস।

প্রতিরোধে করণীয়

  • আঘাত বা ফ্র্যাকচার হলে দ্রুত ও সঠিক চিকিৎসা নিতে হবে।

  • ব্যথা নিয়ন্ত্রণে নজর দিতে হবে।

  • অপ্রয়োজনীয় নিষ্ক্রিয়তা এড়ানো।

  • অস্ত্রোপচারের পর পুনর্বাসন বা রিহ্যাবিলিটেশন।

ফিজিয়াট্রিক ব্যবস্থাপনা

  • নিউরোপ্যাথির ব্যথা কমানোর ওষুধ, স্টেরয়েড, বিসফসফোনেট ইত্যাদি।

  • ফিজিক্যাল থেরাপি: ডিসেনসিটাইজেশন টেকনিক (তুলা, ভাইব্রেশন ইত্যাদি দিয়ে স্পর্শ সহ্য করার প্রশিক্ষণ)।

  • গ্রেডেড মোটর ইমাজারি অ্যান্ড মিরর থেরাপি।

  • রেঞ্জ অব মোশন এক্সারাইজ, টারমিনাল স্ট্রেচিং।

  • স্ট্রেদেনিং ও ফাংশনাল ট্রেনিং।

  • আলট্রাসাউন্ড।

  • ওয়াক্স বাথ।

  • গরম বা ঠান্ডা সেঁক, কনট্রাস্ট বাথ।

  • সিমপ্যাথেটিক ব্লক, স্পাইনাল কর্ড স্টিমুলেশন।

  • জয়েন্ট প্রটেকশন বা অতিরিক্ত চাপ এড়ানো।

  • অ্যাডাপটিভ টুলস ব্যবহার—যেমন হালকা ওজনের কিচেন টুলস, হ্যান্ডেল।

  • কাজ ভাগ করে করা, বিশ্রামের সময় রাখা।

  • ছোট ধাপে কাজ করা—এক হাতে করা কাজ দুই হাতে ভাগ করা।

  • পোশাক পরা, গোসল, রান্না ইত্যাদিতে সাহায্যকারী কৌশল।

ডা. সাকিব আল নাহিয়ান, সহকারী অধ্যাপক, ফিজিক্যাল মেডিসিন বিভাগ, গ্রিন লাইফ মেডিকেল কলেজ, ঢাকা