সূর্যের আলো থেকে ভিটামিন ডি পাওয়া যায়; কিন্তু অনেকে জানতে চান, কখন রোদে থাকতে হবে, কীভাবে ও কতটুকু রোদ লাগাতে হবে
সূর্যের আলো থেকে ভিটামিন ডি পাওয়া যায়; কিন্তু অনেকে জানতে চান, কখন রোদে থাকতে হবে, কীভাবে ও কতটুকু রোদ লাগাতে হবে

ঠিকমতো ভিটামিন ডি পেতে কখন, কীভাবে ও কতটুকু রোদ লাগাতে হবে?

এ কথা আমরা জানি যে সূর্যের আলো থেকে ভিটামিন ডি পাওয়া যায়। কিন্তু অনেকে জানতে চান, কখন রোদে থাকতে হবে, কীভাবে ও কতটুকু রোদ লাগাতে হবে। অনেকে জানতে চান, সপ্তাহের ছয় দিন রোদে গেলে কি সারা বছরের জন্য ডি সঞ্চয় হয়ে যাবে? এসব প্রশ্নের উত্তর জানার আগে চলুন জেনে নিই ভিটামিন ডি কী।

ভিটামিন ডি

এটি আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ভিটামিন, যা রক্তের ক্যালসিয়াম শোষণ করে পরিমাণ ঠিক রাখে। পেশি দৃঢ় করে, হাড় ও দাঁত মজবুত রাখে, সেই সঙ্গে রোগ প্রতিরোধ ও কিছু বিপাক ক্রিয়ায় সাহায্য করে। রোদ থেকে পাওয়া ভিটামিনের আরেক নাম সানশাইন ভিটামিন। কারণ, সূর্যের আলো থেকে আমরা ৮০ শতাংশ ভিটামিন ডি পেয়ে থাকি। সূর্যের আলো যখন আমাদের ত্বকে লাগে, তখন ত্বকে জমে থাকা কোলেস্টেরল থেকে ভিটামিন ডি তৈরি হয়। এরপর এটি রক্তে মিশে লিভার ও কিডনিতে গিয়ে সক্রিয় ভিটামিন ডি হয় বা বলা যায়, আরও শক্তিশালী হয়।

ভিটামিন ডি কমে গেলে কী সমস্যা হয়

সারা বিশ্বেই এখন ভিটামিন ডির ঘাটতি একটি বড় সমস্যা। শিশুদের রিকেটস রোগ বা হাড় বাঁকা হয়ে যাওয়ার একটি কারণ ভিটামিন ডির অভাব। বড়দের ভিটামিন ডির অভাব হলে অস্টিওপরোসিস, অস্টিওম্যালাসিয়া, হার্টের সমস্যা, ক্যানসারসহ রোগ প্রতিরোধ কমে যায়। যাঁরা দীর্ঘমেয়াদি রোগে ভুগছেন, তাঁদের ভিটামিন ডি কম থাকলে রোগ সারতে সময় লাগে।

কোন সময়ের রোদ ভালো

বাইরে বের হয়ে যখন দেখবেন, আপনার ছায়া আপনার তুলনায় ছোট, সেই সময়ের রোদ ভিটামিন ডি তৈরির জন্য সবচেয়ে ভালো। অর্থাৎ সকাল ১০টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত সপ্তাহে কমপক্ষে তিন দিন ১০ থেকে ৩০ মিনিট সারা গায়ে রোদ লাগাতে হবে।

শরীরের রঙের সঙ্গে ভিটামিন ডি তৈরির সম্পর্ক কী

আমাদের ত্বকের রং নির্ভর করে মেলানিন নামক একধরনের রঞ্জক পদার্থের ওপর। মেলানিন বেশি হলে শরীরের রং কালো বা শ্যামবর্ণ হয়। মেলানিন ভিটামিন ডি ত্বকে শোষণ করতে বাধা দেয়। তাই যাঁদের রং একটু চাপা, তাঁদের অন্তত ৩০ মিনিট রোদে থাকতে হবে। ত্বকের রং ফরসা হলে ১০ থেকে ২০ মিনিট রোদ লাগালেই যথেষ্ট। শিশু ও বয়স্কদের ভিটামিন ডি একটু বেশি প্রয়োজন হয়, তাই তাদের একটু বেশি সময় রোদে থাকতে হবে। পোশাক বা সানস্ক্রিন ত্বকে ভিটামিন ডি তৈরিতে বাধা দেয়। তাই মাঝেমধ্যে সানস্ক্রিন ছাড়াই বের হতে হবে। বিশেষভাবে খেয়াল রাখুন হাত, পা ও শরীরের কিছু অংশ যেন রোদের সংস্পর্শে আসে।

ছয় দিন রোদে থাকলে কি সারা বছরের ডি সঞ্চয় হবে

সূর্যরশ্মির সংস্পর্শে এলে শরীর নিজেই ভিটামিন ডি তৈরি করতে শুরু করে।

সূর্য থেকে পাওয়া ভিটামিন ডির কিছু অংশ চর্বি কোষে সংরক্ষণ করে রাখে। তবে এই সঞ্চয় সারা বছর ধরে শরীরের দৈনিক চাহিদা মেটাতে পারে না। প্রতি সপ্তাহে অন্তত দুই থেকে তিন দিন অল্প সময়ের জন্য রোদ লাগালে ও খাবারের মাধ্যমে ভিটামিন ডি গ্রহণ করলে সারা বছর সেটা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
কিছু সময় গায়ে রোদ মাখলে ভিটামিন ডির অভাব যেমন দূর হবে, তেমনি মনও ভালো থাকবে। তারপরও ভিটামিন ডির অভাব হলে চিকিত্সকের পরামর্শে সাপ্লিমেন্ট খাওয়া উচিত।