ছিমছাম অন্দর জনপ্রিয় ছিল এ বছর
ছিমছাম অন্দর জনপ্রিয় ছিল এ বছর

যেমন ছিল ২০২৫-এর অন্দর, কেমন হতে পারে পরের বছর

ছিমছাম অন্দর জনপ্রিয় ছিল এ বছর। চাকচিক্যের চেয়ে বেশি গুরুত্ব পেয়েছে উপযোগিতা। কম জায়গায় সব চাহিদা মিটিয়েও নিশ্চিত করা হয়েছে চলাচলের স্বাচ্ছন্দ্য। রঙের ব্যবহার ছিল পরিমিত। আসবাবে কয়েক বছর ধরেই চলছে মিনিমালিস্টিক ধারা। ২০২৫ সালের অন্দরসজ্জার ধারা নিয়ে সৃষ্টি আর্কিটেকচার অ্যান্ড কনসালট্যান্সির প্রতিষ্ঠাতা স্থপতি তাসনিম তূর্যির সঙ্গে কথা বলে লিখেছেন রাফিয়া আলম।

রঙের ধারা

চাঁপা সাদা, ধূসর, সাদা, মেটে, হালকা টোনের টেরাকোটা (মিউটেড টেরাকোটা) বা জলপাই রঙের মতো প্রশান্তিদায়ক রঙের ব্যবহার দেখা গেছে এ বছর। চোখের আরামের পাশাপাশি মনেরও চাপ কমায় এ ধরনের রং। এসব রঙের আরেকটি সুবিধা হলো, বহুদিন ধরে অনায়াসেই চলতে পারে এগুলোর ব্যবহার।

দেয়ালে রং করেছেন, ফেলে রাখা উপকরণ দিয়ে ঘর সাজিয়েছেন ডিজাইনার জাকিয়া ঊর্মি।

জায়গার সংকট

দিন দিন ছোট হয়ে এসেছে অন্দরের আকার। একই ঘরে বহু প্রয়োজন মেটাতে হচ্ছে এখন। একই আসবাবের বহুবিধ ব্যবহার বেশ কয়েক বছর ধরেই দারুণ জনপ্রিয়। সোফা কাম বেড এক বহুল প্রচলিত আসবাব। অনেকে বাড়ির এক কোণেই তৈরি করে নিয়েছেন অফিসের কাজ করার মতো জায়গা। লবির মতো ছোট জায়গাকেও পারিবারিক প্রয়োজনে কাজে লাগানো হচ্ছে। কেবল দৃষ্টিনন্দন হলেই কোনো আসবাব কিংবা অনুষঙ্গ এখন আর অন্দরে জায়গা পাচ্ছে না; বরং কার্যকারিতার দিকটাকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে সবচেয়ে বেশি।

প্রকৃতির প্রয়োজন

অন্দরের নানা অনুষঙ্গে খুঁজেছেন প্রকৃতিবান্ধব উপকরণ

অফুরান বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রভাব প্রকট হয়ে উঠছে প্রতিনিয়ত। অন্দরে প্রকৃতির প্রয়োজন অনুভব করছেন শহুরে মানুষ। অন্দরসজ্জায় তাই ভিন্নমাত্রা যোগ করেছে গাছ। বারান্দা, জানালা, লবি, টেবিল, ডেস্ক, দেয়ালের তাক—যেখানে সম্ভব, গাছ রাখছেন প্রকৃতিপ্রেমীরা। অন্দরেরও চাহিদা হয়ে উঠেছে এখন প্রাকৃতিক আলো আর বাতাস। যখন প্রকৃতির আলো নেই, তখনো কোমল আলোর ব্যবস্থা থাকছে। সচেতন মানুষ এ বছর দেয়ালের রং এবং অন্দরের নানা অনুষঙ্গে খুঁজেছেন প্রকৃতিবান্ধব উপকরণ। প্রকৃতিবান্ধব এমন সব ভাবনা সামনের বছরগুলোতে আরও শক্তিশালী হয়ে উঠবে বলেই আশা করা যায়।

যেমন হতে পারে ২০২৬

দেয়ালের রঙের ধারায় থ্রি ডাইমেনশনাল প্যাটার্নের ব্যবহার বাড়তে পারে

২০২৬ সালে অন্দরসজ্জায় দেখা যেতে পারে নিজস্বতাকে তুলে ধরার প্রবণতা। গৎবাঁধা একটা নির্দিষ্ট ধারা অনুসরণের প্রবণতা থেকে সরে আসতে পারেন মানুষ। এ বছর অন্দরে হতে পারে ব্যক্তিসত্তা, সংস্কৃতি, কৃষ্টি এবং জীবনধারার প্রতিফলন। অন্দরসজ্জার মাধ্যমে তুলে ধরা হতে পারে নিজস্ব আবেগ এবং অনুভূতি। দেয়ালের ছবিতেও হতে পারে আবেগের প্রকাশ। প্রার্থনা বা ধ্যানের জন্য অন্দরে রাখা হতে পারে আলাদা জায়গা। প্রযুক্তির ব্যবহারও হতে পারে অত্যাধুনিক। লুকানো চার্জিং পোর্ট কিংবা আধুনিক আলোকসজ্জার ভিন্নধারা কাজে লাগানো হতে পারে। দেয়ালের রঙের ধারায় থ্রি ডাইমেনশনাল প্যাটার্নের ব্যবহার বাড়তে পারে। রঙের কল্যাণে সমতল দেয়ালকেও মনে হবে ত্রিমাত্রিক। মেটে, ধূসর বা বেজ রঙের মতো নিউট্রাল রঙের সঙ্গে সি গ্রিন, গাঢ় নীল বা নেভি ব্লুর মতো উজ্জ্বল কোনো একটা রঙের খানিকটা ব্যবহার হতে পারে অনেক অন্দরে। এই ধারা অবশ্য এখনই কোথাও কোথাও দেখা যায়। ২০২৬ সালে এটা বাড়তে পারে।