Thank you for trying Sticky AMP!!

নতুন চার ধরনের বিস্কুটের সঙ্গে পরিচিত করাচ্ছেন আকিজের কর্মকর্তারা

বাজারে আকিজের নতুন বিস্কুট ব্র্যান্ড বেকম্যান’স

দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী আকিজ ইনসাফ গ্রুপ বাজারে আনছে নতুন প্রতিষ্ঠান। নাম, আকিজ বেকার্স লিমিটেড। এখানে ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করছে এই শিল্পগোষ্ঠী। বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে ঘণ্টাব্যাপী এক জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে উদ্বোধন করা হয় হয় আকিজ বেকার্স লিমিটেডেটের বিস্কুটের ব্র্যান্ড বেকম্যান’স।

টঙ্গিতে বেকম্যান’স কারখানার ওপর বানানো ভিডিও দেখাচ্ছেন শেখ জামিল উদ্দিন

অনুষ্ঠানের শুরুতেই একটি ভিডিও দেখানো হয়। এই ভিডিও উপস্থাপনার মাধ্যমে চার স্বাদের চার রকম বিস্কুটকে পরিচিত করিয়ে দেওয়া হয়। বিস্কুটগুলো হলো ওভালটিন কুকিজ, চকো মেট কুকিজ, সল্টিস কুকিজ ও হরলিকস কুকিজ। উপস্থাপক রাফসান সাবাব বলেন, ‘আকিজ সব সময় দেখে বাজারে কী নেই অথচ মানুষের দরকার। কম দামে সেরা বিস্কুট বাজারে আনছে এই শিল্পগোষ্ঠী। ভিডিও দেখে মনে হচ্ছিল, এগুলো বিস্কুট নয়, মার্ভেল আর অ্যাভেঞ্জার্সের এক একটি হিরো। এগুলো বেকম্যান’স-এর হিরো।’  

এরপর স্টেজে আসেন আকিজ বেকার্স লিমিটেডের পরিচালক শেখ জামিল উদ্দিন, চিফ ফিন্যান্সিয়াল অফিসার সুজয় কুমার বিশ্বাস, প্রধান বিপণন কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম ও জিএমও সৌমিত্র কুমার মণ্ডল। তাঁরা চারজন চার প্রকার বিস্কুটের প্যাকেটের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন উপস্থিত সবাইকে।

এই চারজন উদ্বোধন করলেন চার স্বাদের বিস্কুট

শেখ জামিল উদ্দিন বলেন, ‘২০০৫ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত আমি ও আমার টিম বাংলাদেশে বেশ কিছু ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠা করেছি। সেগুলোর ভেতর মোজো, ফ্রুটিকা, স্পীডসহ আরও বেশ কিছু প্রোডাক্ট রয়েছে। আমরা সেই একই টিম কাজ করছি বিস্কুট নিয়ে। আমার বাবা ১৯৫০-এর দশকে এই যাত্রা শুরু করেছিলেন, এর মাঝে আমরা সিমেন্ট, ম্যাচ, টেক্সটাইল মিলস, সিরামিক, ফ্লাওয়ার মিলসের আটা, ময়দা, সুজিসহ আরও নানা কিছু বাজারে এনেছি। প্রতিবার আমাদের প্রত্যাশার চেয়ে অনেক বেশি গ্রাহক পেয়েছি। সবচেয়ে উন্নত মেশিনে কাজ করেছি আমরা। এখনো করছি। আমাদের সেই ফ্লাওয়ার মিলসের ময়দা, অন্যান্য ফ্রেশ কাঁচামাল আর ইতালীয় প্রযুক্তিতে তৈরি হচ্ছে সেরা সব বিস্কুট। ক্যালরি কম, ডায়াবেটিস বা ডায়েট বিস্কুট—সব ধরনের বিস্কুটের চাহিদা মিটিয়ে ২২ পদের বিস্কুট আনব আমরা।’

বেকারি পণ্য উৎপাদনের জন্য রাজধানীর অদূরে টঙ্গীতে বেকারম্যান’স নামে নতুন একটি কারখানা স্থাপন করেছে আকিজ। সেখানে কী পরিবেশে বিস্কুট উৎপাদিত হচ্ছে, তার একটা ভিডিও দেখানো হয়। জানানো হয়, ইতিমধ্যে বিস্কুটটি বাজারে চলে এসেছে আর লাখ লাখ গ্রাহক তৈরি হয়ে গেছে।

এই চারজন উদ্বোধন করলেন চার স্বাদের বিস্কুট

শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বাজারে অনেক ধরনের বিস্কুট আছে। কিন্তু সেগুলোর ক্রেতার মনের চাহিদা পূরণ করতে ব্যর্থ। বিদেশি বিস্কুট দখল করে রেখেছে দেশি বিস্কুটের বাজার। আমরা দেশের মানুষকে তাঁদের চাহিদা অনুযায়ী সেরা বিস্কুট সরবরাহ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমাদের বিস্কুটগুলো সবার আগে চেয়ারম্যান স্যারের পরিবারের সদস্য ও বাচ্চারা খেয়ে দেখেছেন। তাঁরা অনুমোদন দেওয়ার পরেই বিস্কুট উৎপাদন শুরু হয়েছে। বিস্কুট তৈরিতে ইউরোপের সেরা প্রযুক্তি ও দেশের সেরা কাঁচামাল ব্যবহৃত হয়েছে। আমার বিশ্বাস বেকম্যান’স ক্রেতাদের চাওয়াকে পাওয়ায় রূপান্তরিত করবে। এটা দেশের সেরা বিস্কুটের ব্র্যান্ড হবে আর সফলতার সর্বোচ্চ চূড়া স্পর্শ করবে।’

ভিডিও বার্তায় যোগ দিয়ে ঢাকায় নিযুক্ত ইতালীয় রাষ্ট্রদূত এনরিকো নুনজিয়াটা বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে ইতালির দীর্ঘ সময়ের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক দারুণ বন্ধুত্বপূর্ণ। ইতালিতে বাংলাদেশি কমিউনিটি আছে। বাংলাদেশ এর আগে পোশাকশিল্পে ইতালীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করেছে। এবার খাবারের ইন্ডাস্ট্রিতেও আকিজ বেকার্স লিমিটেড ইতালি থেকে মেশিন আমদানি করেছে। শুরু থেকেই বিস্কুটের চাহিদা ছিল। মহামারিকালে বিস্কুটের চাহিদা আরও বেড়েছে। আমি আশা করছি তারা বরাবরের মতোই গ্রাহককে সবচেয়ে ভালো বিস্কুট উপহার দেবে।’  

বেকার্সের প্রধান বিপণন কর্মকর্তা (সিএমও) শফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, শুরুতে বিস্কুট ও কুকিজ এলেও ধীরে ধীরে কেক, পাউরুটি, চকলেটসহ নানা ধরনের বেকারি পণ্য নিয়ে আসবে আকিজ বেকার্স। এই ব্যবসায় আসার পেছনের কারণ হিসেবে তিনি বলেন, বাজারে অনেক ব্র্যান্ডের বিস্কুট থাকলেও মানসম্মত বিস্কুটের অভাব রয়েছে। মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্তরা বিদেশি বিস্কুট কিনছেন। মূলত সেই বাজার ধরতেই বেকারি পণ্যের ব্যবসায় নামছে আকিজ।

আকিজ বেকার্সের সিএমও শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে আমাদের বিনিয়োগ ১ হাজার ২০০ কোটি টাকার। ভবিষ্যতে এটি আরও বাড়বে। দেশের বাজারের পাশাপাশি বেকারি পণ্য রপ্তানিরও চিন্তাভাবনা চলছে।’

আকিজ গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা শেখ আকিজ উদ্দিন ২ রুপি ৩০ পয়সা নিয়ে কমলালেবু দিয়ে ব্যবসা শুরু করেছিলেন। দেশের সফল এই ব্যবসায়ী দুই রুপির ব্যবসাকে উন্নীত করেন পাঁচ হাজার কোটি টাকায়। ছেলেদের হাত ধরে সেটি বর্তমানে ১৪ হাজার কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে। এখন আকিজের সিমেন্ট, সিরামিক, খাদ্যপণ্য, বস্ত্রকল, প্লাস্টিক, পাট, প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং, পার্টিকেল বোর্ড, জাহাজে পণ্য পরিবহন, চা-বাগান, কৃষিভিত্তিক শিল্পসহ বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা রয়েছে। কাজ করেন ৩৫ হাজার কর্মী।

ছবি: আকিজ-এর পক্ষ থেকে সরবরাহকৃত