মনের বাক্স
মনের বাক্স

মনের বাক্স

অবশেষে স্কুল খোলার স্বস্তি

তুমি যদি জানতে

শব্দের যদি সামর্থ্য থাকত অনুভূতি হয়ে তোমার কাছে পৌঁছানোর, তাহলে তুমি প্রতিটি শব্দ পড়তে আর একটা একটা করে আমার সীমাবদ্ধ শব্দগুলোর অনুভূতি বুঝে যেতে। যদি চোখ বন্ধ করলেই তুমি দেখতে পেতে, তোমার এলোমেলো অবিন্যস্ত চুলগুলো ছুঁয়ে দেখার অধিকারের অভাবে কাঁপতে থাকা আমার হাতের আঙুল; যদি বুঝে যেতে, এক নিমেষেই ‘তুমি’ নামক একটা বিশাল আকাশ দেখতে না পারার বিষণ্নতা নিয়ে ক্লান্ত সন্ধ্যায় টলমল করে আমার দুচোখ; যদি তুমি টের পেয়ে যেতে, এই যোজন যোজন মাইল দূরত্বে থেকেও তোমাকে জয় করার স্বপ্নটুকু; তুমি যদি জানতে সদ্য ফোটা নয়নতারা অথবা শিউলি ফুলের মতো সরল মুগ্ধতা নিয়ে তোমার চোখে তাকিয়ে থাকা প্রতিটি সকালের কথা, তাহলে হয়তো অনেক কিছুই সহজ হয়ে যেত।

তুমি আমার সৌভাগ্য, সব মুগ্ধতা আর অভিমানের দেয়াল পেরিয়ে আমার ভালো থাকা।

মারুফ, ময়মনসিংহ

জীবনে এসেছে নতুন উপলব্ধি

মানুষের চরণচিহ্নে পা ফেলে প্রতিনিয়ত চলার নামই বুঝি জীবন। এই বোধশক্তি নির্বিঘ্ন ক্ষণে কেউ-ই বুঝতে পারে না। কিন্তু শৈশব, কৈশোরের মতো অতি মোলায়েম জীবনের যখন বাঁক ঘুরে যায় অকস্মাৎ, তখনই হয়তো আপন জীবনকে জানতে পারে সবাই!

জীবনে বহু অভিজ্ঞতা পুঁজি করে অন্য আর দশজনের মতো আমিও এখন পথ চলছি। সময়-অসময়কে কেন্দ্র করে যাঁরা আমার জীবনকে নাটকীয়তায় ভাসিয়েছেন, আজও ভোরে তাঁরা চায়ের চুমুকে নিজের কথাই শুধু ভাবছেন। ভাবছেন নিজেকে পরিমার্জিত করার, আরও উন্নত করার কথা। কিন্তু যাঁদের সঙ্গে সকাল-সন্ধ্যা আড্ডা দিয়ে আমিও নষ্ট করেছি আমার অতি মূল্যবান সময়, তাঁরা একমুহূর্তের জন্যও আমাকে নিয়ে ভাবেনি। পৃথিবীতে হয়তো এটাই নিয়ম, দিক্‌ভ্রান্ত হয়ে গেলে কেউ কাউকে চিনবে না। তাই সময়ের ন্যূনতম অপব্যবহার এখন আমার কাছে পছন্দ হয় না।

আবুল কালাম, রাজনগর, মৌলভীবাজার

ছোট্ট সনি

তোকে অনেক দিন ধরে দেখিনি। হয়তো এত দিনে অনেক বড়ে হয়ে গেছিস। আমাকে তোর মনে পড়ে কি না, জানি না, তবে তোকে আমি ভুলতে পারি না। তোর অমায়িক আচরণ আমাকে মুগ্ধ করেছে। খুব অল্প দিনের পরিচয়ে এত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আগে কখনো কারও সঙ্গে হয়নি। যেদিন তুই চলে গেলি সেদিন বুঝতে পারলাম মনের কত গভীরে তুই জায়গায় করে নিয়েছিলি।

তোর ভাইয়া ডাক, দুষ্টু-মিষ্টি হাসি, খুনসুটি সবকিছু স্মৃতিপটে ভেসে উঠছিল। একসঙ্গে কাটানো সেই স্বপ্নিল দিনগুলো খুব মনে পড়ে। বিকেলে মাঠে ব্যাট–বল অনুশীলন করে সন্ধ্যায় আমার পাশে বসে সফলতা-ব্যর্থতার ফিরিস্তি তুলে ধরতি। বড় ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন দেখতি। আর আমি তোর মাথায় হাত বুলিয়ে, গাল টেনে আশ্বাস দিতাম, চালিয়ে যা। সময়ের স্রোতে কোথায় যে হারিয়ে গেল রঙিন দিনগুলো।

ইলিয়াছ আখন্দ, নন্দীগ্রাম, বগুড়া

অবশেষে স্কুল খোলার স্বস্তি

প্রায় ১৯ মাস পর খুলেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। দেড় বছরের বেশি সময় ধরে ঘরে বসা আমি। কোনো প্রকার পরীক্ষা না দিতে দিতে আমার ভেতর পরীক্ষার প্রতি এক চরম ভীতির সৃষ্টি হয়েছিল। আগে পরীক্ষাকে ভয় পেতাম না, বরং পরীক্ষা দিতে আনন্দ লাগত। কিন্তু এমন আনন্দ এখন আর নেই।

একসময় মনে হতো, স্কুল না খুললেই ভালো। পরীক্ষা দেওয়া লাগবে না। অ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমে ওপরের ক্লাসের ফলাফল করলেই বেশি ভালো হবে। যখন স্কুল খুলে দেওয়ার খবর শুনতাম, তখন অনেক ভয় হতো, যদি স্কুল খুলে দেওয়া হয়, তাহলে কী যে হবে!

কিন্তু প্রত্যেকবার ছুটি বাড়ত। কারণ, সংক্রমণ বৃদ্ধি পেত। বর্তমানে সংক্রমণ নিম্নমুখী। এবার তাই স্কুল খুলল। তবে শত ভয়ের মধ্যেও একটা চাপা আনন্দ অনুভব করছি। হোক পরীক্ষার ভয়। বাড়িতে বসে বসে তো পিছিয়ে যাচ্ছিলাম। এখন আশা করি, নতুন করে আবার সামনে এগোতে পারব। এর চেয়ে আনন্দের আর কী আছে!

অর্জন পোদ্দার, ব্রাহ্মন্দী কে কে এম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, নরসিংদী