মিচেল স্টার্ক ও অ্যালিসা হিলি—ক্রিকেটের এই পাওয়ার কাপলের ১৩টি ছবি ও ভালোবাসার গল্প

মিচেল স্টার্ক ও অ্যালিসা হিলিকে বলা হয় ‘ক্রিকেটের পাওয়ার কাপল’। ক্রিকেট ইতিহাসে এমন কোনো আন্তর্জাতিক শিরোপা নেই, যা তাঁরা জেতেননি। ৯টি বিশ্বকাপ জেতা এই দম্পতির প্রেম, বিয়ে ও দাম্পত্য সম্পর্কে জানুন ১৩টি ছবির সঙ্গে।

মিচেল স্টার্ক ও অ্যালিসা হিলি নিজ নিজ ক্ষেত্রে সফল ক্রিকেটার। তবে দুজন দুই মেরুর খেলোয়াড়, মিচেল স্টার্ক বাঁহাতি পেস বোলার, আর অ্যালিসা হিলি ডানহাতি উইকেটরক্ষক–ব্যাটার। হিলি বর্তমান অস্ট্রেলিয়া দলের অধিনায়ক।
মিচেল স্টার্ক ও অ্যালিসা হিলির প্রেম, বিয়ে ও দাম্পত্যজীবন
হিলি ও স্টার্ক দুইজনেরই জন্ম ১৯৯০ সালে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দুজনেরই অভিষেক ২০১০ সালে। সময়ের সঙ্গে অ্যালিসা হিলি হয়ে উঠেছেন অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাসের সেরা ব্যাটারদের একজন। অন্যদিকে মিচেল স্টার্কও হয়ে উঠেছেন ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা বোলারদের একজন।
অ্যালিসা হিলি ও মিচেল স্টার্কের পরিচয় ৯ বছর বয়সে। দুজনই তখন খেলতেন সিডনির নর্দার্ন ডিস্ট্রিক্ট জুনিয়র ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের হয়ে। দুজন একসঙ্গে উইকেটকিপিং অনুশীলন করতেন। সেই দলের কোচ ছিলেন আবার মিচেল স্টার্কের বাবা পল স্টার্ক।
প্রথম তিন বছর দুজন একসঙ্গে উইকেটকিপিং করতেন। কিন্তু দলে একজন কিপারের জায়গা হতো বলে বেশির ভাগ সময় বসে থাকতে হতো স্টার্ককে। সেখান থেকে সব মনোযোগ ঢেলে দেন বোলিংয়ে। ছোটবেলা থেকেই হিলিকে একটু একটু পছন্দ করতেন স্টার্ক। কিন্তু মুখ ফুটে বলতে পারেননি। বন্ধুবান্ধব জানত, সোনালি চুলের উইকেটকিপারের প্রতি স্টার্কের একটু দুর্বলতা আছে।
মজার ব্যাপার হলো, দুজনের কেউই মনে করতে পারেন না, তাঁদের প্রেমটা ঠিক কবে হয়েছে। স্টার্কের মতে, তিনি যখন প্রথম দেশের বাইরে খেলতে যাচ্ছেন, তখন তাঁর মনে হয়েছিল, হিলির সঙ্গে তো অনেক দিন দেখা হবে না। সেখান থেকেই জিজ্ঞাসা করে বসেন, ‘আমরা কি প্রেম করছি?’ হিলিও সায় দেন তাঁর কথায়। সেখান থেকেই বন্ধুত্ব পরিণত হয় প্রেমে।
অ্যালিসা হিলির অবশ্য আরেকটা পরিচয় আছে। অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাসের অন্যতম সেরা উইকেটকিপার ইয়ান হিলির ভাতিজি তিনি। তবে ক্রিকেটীয় ক্যারিয়ারে চাচার নাম প্রায় ছাড়িয়েই গেছেন অ্যালিসা।
প্রায় ৭ বছর প্রেম করার পর ২০১৫ সালে বাগ্‌দান সম্পন্ন করেন দুজন। ২০১৬ সালে করেন বিয়ে। তত দিনে দুজনই জিতেছেন বিশ্বকাপ শিরোপা।
অ্যালিসা হিলি এখন পর্যন্ত ৮টি বিশ্বকাপ জিতেছেন (৬টি টি–টোয়েন্টি ও ২টি ওয়ানডে বিশ্বকাপ)। অন্যদিকে মিচেল স্টার্ক জিতেছেন ৩টি বিশ্বকাপ (২টি ওয়ানডে ও ১টি টি–টোয়েন্টি)।
ক্রিকেট দুনিয়ায় মিচেল স্টার্ক ‘বউপাগল’ হিসেবে বেশ পরিচিত। স্ত্রী অ্যালিসা হিলির খেলা দেখতে একবার জাতীয় দল থেকে ছুটি নিয়েছিলেন। এমনকি বেশ কয়েক বছর আইপিএল খেলেননি দুজন একসঙ্গে সময় কাটাবেন বলে। এখন অবশ্য দুজন একসঙ্গে আইপিএল খেলেন, ছুটি কাটান ভারতে।
ক্রিকেট নিয়ে ব্যস্ত থাকায় কখনো চুটিয়ে প্রেম করা হয়ে ওঠেনি দুজনের। শুরু থেকেই তাঁদের সম্পর্কের অন্তরায় ছিল দূরত্ব। কখনো স্টার্ক খেলার জন্য দেশের বাইরে তো কখনো হিলি। দুজনের সম্পর্কে সব সময়ই তৃতীয় সঙ্গী হয়ে ছিল ফোন। যে কারণে সময় পেলেই দুজন দুজনের খেলা দেখতে ছুটে যান।
স্টার্ক ও হিলি প্রতিবছর একবার সময় করে গলফ খেলেন। সেই টুর্নামেন্ট যিনি জেতেন, তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হয় ‘স্টিলি কাপ’।
মজার ব্যাপার হলো হিলি ও স্টার্ক দুজনেরই টেস্টে সর্বোচ্চ রান ৯৯। এই নিয়ে মজা করতে ছাড়েন না স্টার্ক।
হিলি-স্টার্ক দম্পত্তির দুটি কুকুর আছে। বাড়ির পাশে অসুস্থ দুটি কুকুরছানা দেখে উদ্ধার করেন হিলি। তার পর থেকে ওদের লালনপালন করছেন তাঁরা।

লেখা: মৃণাল সাহা

সূত্র: স্কাই স্পোর্টস, ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া