আনুমানিক তিন হাজার বছরের প্রাচীন নেসবারের জনবসতি
আনুমানিক তিন হাজার বছরের প্রাচীন নেসবারের জনবসতি

পর্ব ৪

বুলগেরিয়ায় কয়েক দিন

বলকান পর্বতমালার নয়নাভিরাম সৌন্দর্যের মুগ্ধতা কাটেনি। বরং সেই স্মৃতি সজীব আজও। এর সঙ্গে সানি বিচ আর পুরোনো শহরের নানা বিষয় স্মৃতির মণিকাঞ্চন হয়ে রয়েছে।

পরের দিন আমার গন্তব্য ছিল সানি বিচ। এটি ইউরোপের সবচেয়ে জনপ্রিয় সমুদ্রসৈকতগুলোর মধ্য একটি। বুলগেরিয়ার রাজধানী সোফিয়া থেকে সানি বিচ পৌঁছাতে প্রায় আট ঘণ্টা সময় লাগে। বুলগেরিয়ার হাইওয়ে অত্যন্ত উন্নত, রাস্তাগুলোও বেশ চওড়া। সোফিয়ার সেরদিকা বাস টার্মিনাল থেকে সানি বিচ যেতে বাস ভাড়া হলো ৩৬ বুলগেরিয়ান লেভ। সকাল ছয়টার বাসে সোফিয়ার রওনা দিই।

সানি বিচ ইউরোপের একটি সবচেয়ে জনপ্রিয় সমুদ্রসৈকত

অপেক্ষাকৃতভাবে বলকান উপদ্বীপের দেশগুলো ইউরোপের অন্যান্য দেশের চেয়ে অনেক পিছিয়ে, তারপরও একটি কারণে বলকান উপদ্বীপের দেশগুলো আমাকে বারবার আকর্ষণ করে। সেটি হচ্ছে এ অঞ্চলের ভূপ্রাকৃতিক সৌন্দর্য। রাস্তার দুপাশের বলকান পর্বতমালার নয়নাভিরাম সৌন্দর্য যেকোনো মানুষের চিত্ত হরণ করতে বাধ্য। একবার যিনি এ স্বাদ পেয়েছেন, তিনি বারবার ফিরতে চাইবেন বলকান উপদ্বীপের কোনো না কোনো দেশে। এ ধরনের সৌন্দর্য ইউরোপ তো বটেই, পৃথিবীর অন্য কোনো দেশে খুঁজে পাওয়া যাবে কি না জানি না। যেন মনে হয়, শিল্পী তাঁর সুনিপুণ তুলির আঁচড়ে পুরো বলকান পেনিনসুলাকে সাজিয়েছেন। যাত্রাপথের পুরো অংশ ধরেই সে সৌন্দর্যের স্বাদ উপভোগ করার চেষ্টা করেছি।

বসন্তের আগমনে রাস্তার দুই ধারের পাহাড়গুলো সবুজে ছেয়ে গিয়েছে। শীতের চাদরকে বিদীর্ণ করে যেনও প্রকৃতিতে নতুন প্রাণের সঞ্চার হচ্ছে। রাস্তার দুই ধারে বলকান পর্বতমালার কোল ঘেঁষে কিছুক্ষণ পরপর ছোট ও মাঝারি আকারের বিভিন্ন জলপ্রপাত ও ছড়ার দেখা মিলছে। এককথায়, পুরো যাত্রাপথের সৌন্দর্য ছিল অসাধারণ। বলকান পর্বতমালার প্রেমে আমি মাতোয়ারা। এখনো সেসব স্মৃতি সজীব হয়ে ওঠে। মাঝেমধ্যে আফসোস হয় যদি যাত্রাপথের পুরো দৃশ্যকে ভিডিও আকারে ধারণ করতে পারতাম।

বলকান পর্বতমালার সৌন্দর্য পর্যটকদের ব্যাপকভাবে আকর্ষণ করে থাকে

বুরগাস থেকে শুরু করে সানি বিচ পর্যন্ত সমগ্র অংশ অনবদ্য। এ অংশ প্রকৃতপক্ষে বুলগেরিয়ার নয়নের মণি, কেননা প্রতিবছর যেসব দর্শনার্থী বুলগেরিয়ায় বেড়াতে আসেন, তাঁদের বেশির ভাগের লক্ষ্য থাকে কৃষ্ণসাগরবিধৌত এ অঞ্চলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের উপভোগ করা। গ্রীষ্মকালে কৃষ্ণসাগরতীরবর্তী অঞ্চলগুলোয় এত অধিকসংখ্যক পর্যটকের সমাগম হয় যে তিল ধারণের ঠাঁই পাওয়া যায় না। কালচে নীলাভ জলরাশি কৃষ্ণসাগরের সৌন্দর্যকে আলাদা মাত্রা দান করেছে। হাইড্রোজেন সালফাইডের উপস্থিতির কারণে এ অঞ্চলের পানি কিছুটা কালচে দেখায়।

প্রায় আট ঘণ্টা জার্নি শেষে সানি বিচে পৌঁছাই। তখন প্রায় বেলা আড়াইটা। আশপাশে কোনো মানুষ নেই, হোটেলগুলোও ফাঁকা। রেস্টুরেন্টগুলো বন্ধ। চারদিকে কোনো কোলাহল নেই। বারবার মনে হচ্ছিল, কোনো এক অদৃশ্য শক্তি যেন সবকিছু স্থবির করে দিয়েছে। কেন জানি ভয় লাগতে শুরু করলে। তারপর সাহস সঞ্চয় করে হাঁটতে শুরু করি। কিছুক্ষণ পর হঠাৎ দেখা মেলে এক মাঝবয়সী নারীর। তিনি আমাকে দেখামাত্র জিজ্ঞেস করেন আমার কোনো সাহায্য লাগবে কি না। আমি তাঁকে জানাই, এ রকম ভরদুপুরে এত গুরুত্বপূর্ণ একটি ট্যুরিস্ট স্পট জনমানবহীন ও ভুতুড়ে হয়ে উঠল কীভাবে?

ওই নারী বললেন, অক্টোবর থেকে শুরু করে মে মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত পুরো সানি বিচ এলাকা নিষ্প্রভ থাকে। কোনো ধরনের পর্যটকের আনাগোনা এ সময় দেখা যায় না। তাই আশপাশের হোটেল কিংবা রেস্টুরেন্ট এ সময় বন্ধ রাখা হয়; কিন্তু মে মাসের শেষ সপ্তাহ আসতে না আসতে সম্পূর্ণ এলাকাটি লোকে লোকারণ্য হয়ে ওঠে। সমগ্র এলাকা তখন প্রাণ ফিরে পায়। আরব দেশগুলো থেকে আসা পর্যটকেরা সাত থেকে আট মাস আগের থেকে হোটেল বুক করে রাখেন। যুক্তরাজ্য ও জার্মানি থেকে সবচেয়ে বেশি পর্যটক সানি বিচে বেড়াতে আসেন। ইউরোপের অন্যান্য দেশের তুলনায় বুলগেরিয়াতে অ্যালকোহলিক বেভারেজের দাম তুলনামূলকভাবে অনেক সস্তা। মূলত,

অপেক্ষাকৃতভাবে কম দামে অ্যালকোহলিক বেভারেজের স্বাদ নিতে এবং বুলগেরিয়ার সস্তা সেক্স ইন্ডাস্ট্রির জন্য যুক্তরাজ্য ও জার্মানি থেকে সিংহভাগ পর্যটক গ্রীষ্মকালীন অবকাশ যাপনের জন্য সানি বিচে জড় হন। ভরদুপুরে এসব তথ্য জানালেন ভদ্রমহিলা।

কিছুক্ষণ তট বরাবর হাঁটলাম। বিচের দুই ধারের ঘরবাড়িগুলো সত্যি অসাধারণ। সানি বিচের পাশাপাশি নেসেবারের ওল্ড টাউনটি দেখার জন্যও অনেক দর্শনার্থী এ এলাকায় বেড়াতে আসেন। কাঠের তৈরি ছোট ছোট ঘরবাড়ি বিশেষভাবে আমার নজর কাড়ে।
সানি বিচের পাশাপাশি নেসেবারের ওল্ড টাউনটি প্রদর্শন করতেও অনেক দর্শনার্থী এ অঞ্চলে বেড়াতে আসেন। রিলা মনাস্ট্রির মতো নেসেবারের ওল্ড টাউনটিও ইউনেসকো–স্বীকৃত ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট। সানি বিচ থেকে নেসেবারের পুরোনো শহরের দূরত্ব ছয় কিলোমিটার, সার্বক্ষণিক সানি বিচের সঙ্গে নেসেবারের ওল্ড টাউনের বাস সংযোগ রয়েছে।

মধ্যযুগে নির্মিত এ দুর্গটি নেসেবারের ওল্ড টাউনের অন্যতম ল্যান্ডমার্ক

প্রত্নতত্ত্ববিদদের মতে, আনুমানিক তিন হাজার বছর ধরে নেসেবারের এ ওল্ড টাউনে জনবসতি রয়েছে। ধারণা করা হয়, থ্রেসিয়ানদের হাত ধরে নেসেবারের গোড়াপত্তন ঘটে। খ্রিষ্টপূর্ব ৬০০ অব্দে এ স্থান গ্রিক সাম্রাজ্যের উপনিবেশে পরিণত হয়। বর্তমানে এ স্থানের অধিকাংশ স্থাপনা গ্রিক ও বাইজেনটাইন শাসনামলে নির্মিত। নেসেবারের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার মধ্যে রয়েছে অ্যাক্রোপোলিস, গ্রিক দেবতা অ্যাপোলোকে উৎসর্গ করে তৈরি মন্দির, অ্যাগোরা, স্টারা মেট্রোপোলিয়া ব্যাসিলিকা এবং বেশ কিছু অর্থোডক্স চার্চ। এ ছাড়া মধ্যযুগে নির্মিত দুর্গটিও নেসেবারের ওল্ড টাউনের অন্যতম ল্যান্ডমার্ক।

ভেতরের স্থাপনাগুলোকে ঘুরে দেখতে আলাদাভাবে অর্থ গুনতে হয়। ১৯০০ সালের জনগণনা অনুযায়ী নেসেবারের মোট জনসংখ্যা ছিল ১ হাজার ৯০০ জন, যাঁদের মধ্যে শতকরা ৮৯ ভাগ ছিলেন গ্রিক। মূলত মৎস্য শিকার ও ওয়াইন তৈরি করে এ অঞ্চলের মানুষ জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। প্রথম বলকান যুদ্ধের পর বুলগেরিয়ার সঙ্গে গ্রিসের সম্পর্কের চরম অবনতি ঘটে, মেসিডোনিয়াসহ বেশ কিছু অঞ্চলের অধিকার নিয়ে প্রতিবেশী এ দুই দেশ সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে। শুরু হয় দ্বিতীয় বলকান যুদ্ধের পর, গ্রিস ও সার্বিয়ার সেনাবাহিনীর প্রতিরোধের মুখে বুলগেরিয়ানরা পরাজয় স্বীকারে বাধ্য হয়। ২০০৭ সালে বুলগেরিয়া ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে যোগদান করে, এর আগপর্যন্ত প্রতিবেশী দুই দেশের সম্পর্ক ছিল সাপে-নেউলে। দ্বিতীয় বলকান পর বুলগেরিয়াতে বসবাসরত গ্রিক জনগোষ্ঠীর বড় অংশ গ্রিসে চলে আসে। অন্যদিকে, গ্রিসের উত্তরাঞ্চলে যেসব বুলগেরিয়ানের বসবাস ছিল, তাঁদের গ্রিস থেকে বুলগেরিয়ায় স্থানান্তরে বাধ্য করা হয়।

কাঠের তৈরি এই বাড়িগুলো কৃষ্ণসাগর তীরবর্তী বুলগেরিয়ার স্থাপত্যশৈলীর এক অনন্য নিদর্শন

নেসেবারের ওল্ড টাউন পরিদর্শন শেষে ছুটে গেলাম বুরগাসে, কৃষ্ণসাগরের তীরবর্তী অঞ্চলগুলোর মধ্যে বুরগাস আয়তনের দিক থেকে সবচেয়ে বড় শহরগুলোর একটি। বুরগাসের সিটি সেন্টারে বসে কিছুক্ষণ সময় কাটালাম। সোফিয়া আমার কাছে তেমন একটা ভালো লাগেনি; কেননা সোফিয়ায় যাদের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে, সবাইকে রাশভারী মনে হয়েছে। বুরগাস কিংবা সানি বিচের চিত্র একেবারে আলাদা। এ অঞ্চলের অধিবাসীরা সত্যি অনেক বন্ধুবৎসল। বুরগাসের বাস টার্মিনালে আমার সঙ্গে তানিয়া নামের এক ভদ্রমহিলার পরিচয় হয়েছিল। তাঁকে বিশেষভাবে স্মরণ না করলে আমার এ যাত্রা অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। বুরগাস সিটি সেন্টারে আমি এক অপ্রীতিকর ঘটনার সম্মুখীন হয়েছিলাম, বিষয়টি তখন তিনি লক্ষ করে নিজের কাজ ছেড়ে ছুটে এলেন আমাকে সহযোগিতা করার জন্য।

বুলগেরিয়া ভ্রমণের শেষ দিনটি নির্ধারিত রেখেছিলাম সোফিয়ার জন্য। হোটেলের তুলনায় হোস্টেলে থাকার মধ্যে আলাদা ধরনের আনন্দ রয়েছে। প্রথমত, হোস্টেলে থাকার খরচ হোটেলের তুলনায় অনেক কম। দ্বিতীয়ত, বিভিন্ন দেশের পর্যটকদের সঙ্গে সময় কাটানোর সুযোগ হয়ে ওঠে। এভাবে পরস্পরের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলা সম্ভব। তবে হোস্টেলে রাত্রিযাপন করতে হলে প্রাইভেসির বিষয়টিও মাথায় রাখা প্রয়োজন।

নেসেবারের অন্যতম প্রসিদ্ধ অর্থোডক্স গির্জা চার্চ অব দ্য হলি আর্কঅ্যাঙ্গেলস মিহাইল অ্যান্ড গ্যাব্রিয়েল

শেষ দিন সকালে নাশতা করার সময় আমার সঙ্গে তিনজন বিদেশি পর্যটকের পরিচয় হয়। তাঁদের দুজন ছিলেন আজারবাইজানের। মিরহাসান মাজিদলি ও তারাগুলু খাসিজাদা। স্টাইপেনডিয়াম হাঙ্গেরিকাম নামক শিক্ষাবৃত্তির অধীনে তাঁরা হাঙ্গেরির ইউনিভার্সিটি অব সেগেড থেকে মাস্টার্স সম্পন্ন করেছেন। তৃতীয়জন ছিল এক কিশোরী, তার নাম জাজ খেরা। জাজ হচ্ছে পাঞ্জাবি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক। আমরা চারজন মিলে পুরো সোফিয়া শহরকে ঘুরে দেখার চেষ্টা করলাম।

শুরুটা হলো আলেকজান্ডার নেভস্কি ক্যাথেড্রাল দিয়ে। এই ক্যাথেড্রাল হচ্ছে সোফিয়া তথা সমগ্র বুলগেরিয়ার প্রধান ল্যান্ডমার্ক। ইন্টারনেটে সোফিয়া কিংবা বুলগেরিয়া লিখে সার্চ দিলে সবার প্রথমেই আলেকজান্ডার নেভস্কি ক্যাথেড্রালের ছবি দেখাবে।
প্রকৃতপক্ষে আলেকজান্ডার নেভস্কি ক্যাথেড্রালটি দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপের সর্ববৃহৎ অর্থোডক্স চার্চগুলোর একটি। বুলগেরিয়ার সিংহভাগ মানুষই অর্থোডক্স খ্রিষ্টধর্মাবলম্বী হওয়ায় তাঁদের ব্যক্তিগত জীবনে এ চার্চের প্রভাব বিশেষভাবে লক্ষণীয়; আর বুলগেরিয়ার স্বাধীনতাসংগ্রামের সঙ্গেও ক্যাথেড্রালটি বিশেষভাবে জড়িত। ১৮৭৯ সালে বুলগেরিয়া যখন তুরস্কের অটোমান শাসকদের কাছ থেকে স্বাধীনতা অর্জন করে, তখন বুলগেরিয়ার পক্ষ থেকে অটোমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য তেমন কোনো সুসংগঠিত মিলিটারি ফোর্স ছিল না।

এ সময় রাশিয়া বলকান অঞ্চলে নিজেদের প্রভাব বিস্তার করতে আরম্ভ করে এবং এরই জেরে রাশিয়া সে সময় বুলগেরিয়াকে সামরিক শক্তি দিয়ে সাহায্য করে অটোমানদের বিরুদ্ধে স্বাধীনতাসংগ্রামের জন্য। স্টেফানোর চুক্তির মাধ্যমে বুলগেরিয়া পরবর্তী সময়ে স্বাধীনতা অর্জন করলে রাশিয়ানদের প্রতি কৃতজ্ঞতাস্বরূপ এবং বুলগেরিয়ার স্বাধীনতাযুদ্ধে নিহত মানুষের স্মরণে এ ক্যাথেড্রাল নির্মাণ করে।

সম্পূর্ণ ক্যাথেড্রাল নির্মাণ করতে ৩০ বছরের মতো সময় লাগে এবং ১৯২৪ সালে এটি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। নভোগদের রাজকুমার এবং বিখ্যাত ধর্মযাজক আলেকজান্ডার নেভস্কির নাম অনুসারে এ ক্যাথেড্রালের নাম রাখা হয় আলেকজান্ডার নেভস্কি ক্যাথেড্রাল। অসাধারণ স্থাপত্যশৈলীর এই নিদর্শন প্রতিবছর আকর্ষণ করে পৃথিবীর নানা প্রান্তের অসংখ্য পর্যটককে। ক্যাথেড্রালটি বাইরে থেকে দেখতে যেমন অসাধারণ, তেমনি এর ভেতরটা। অসাধারণ শিল্পকর্ম এর অন্দরকে দিয়েছে অনন্যতা। চার্চের ভেতরে প্রবেশ করতে হলে কোনো ধরনের ফির প্রয়োজন হয় না। তবে কেউ ছবি তুলতে চাইলে তাঁকে আলাদাভাবে ফি দিতে হয়।