দেশের এ–প্রান্ত থেকে ও-প্রান্ত বাইসাইকেলে ঘোরার বাতিকটা চাপল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া থেকে মেহেরপুর যাওয়ার পর। সে যাত্রার পর থেকেই বন্ধু সাকিব ক্রমাগত তাগাদা দিয়ে যাচ্ছিল একটা ক্রস কান্ট্রি রাইড বা দেশের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে সাইকেল চালিয়ে যাওয়ার জন্য। পেশাগত ব্যস্ততায় তখন আমার ফুরসত মেলাই ভার। ‘এ মাসে তো হচ্ছে না, সামনের মাসে দেখি, এই শীতেই যাব এ ব্যাপারে শিওর থাক’—সাকিবকে ক্রমাগত এগুলো বলে সময় পেছানো ছাড়া উপায়ন্তর ছিল না। শেষমেশ কষ্টেসৃষ্টে যখন সময় বের করতে পারলাম, তখন দেখলাম সাকিব যাচ্ছে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি দল নিয়ে ১০ দিনের ভ্রমণে!
ব্যাটে-বলে কিছুতেই মিলছিল না। আরেক দফা আমার ছুটির পরিকল্পনা কাটছাঁট করে সুবিধাজনক সময় বের করেই আগের ক্রস কান্ট্রি রাইডের সঙ্গীদের জানালাম। তত দিনে গন্তব্য ঠিকঠাক। টেকনাফ থেকে শুরু করে তেঁতুলিয়াই হবে আমাদের গন্তব্য। পাভেল, জাবেদ আর মুনাজ সবারই ওই সময়ে ব্যস্ততা ছিল। আমরা ‘দুজনই সই’ বলে পরিকল্পনা সাজাতে শুরু করেছিলাম। এর মধ্যে চট্টগ্রাম শিল্পকলা একাডেমির আড্ডায় সাকিব একদিন জানাল, রাশিকও যেতে চায় আমাদের সঙ্গে। রাশিকের সাইক্লিংয়ে খুব একটা অভিজ্ঞতা নেই দেখে আমি একটু জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকালাম। ‘ও শুধু টেকনাফ থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত চালাবে,’ সাকিবের প্রত্যুত্তর। তবে রাশিকের যে শুধু অভিজ্ঞতাই নেই, তা নয়। ওর তো সাইকেলই নেই! ওকে সাইকেল জোগাড় করতে বলে ক্রস কান্ট্রি রাইডের আগে একটা ছোটখাটো রাইডের ছক আঁটছিলাম। এর মধ্যেই প্রিয় অ্যাডভেঞ্চার ক্লাব অব চিটাগাংয়ের একটা সাপ্তাহিক রাইড ছিল বাঁশবাড়িয়া সৈকতে।
নাইট ডিউটির নির্ঘুম রাতের ক্লান্তি গা থেকে না সরিয়েই ভোরে ভোরে বেরিয়ে পড়লাম বাঁশবাড়িয়ার পানে। রাশিকও সঙ্গী হলো। মাঝামাঝি দূরত্বের একটা রাইডে গিয়ে নিজের জং সারানো আর রাশিককে পরখ করে নেওয়া—এই দুটোই উদ্দেশ্য। দুটোই বেশ ভালোভাবে পূরণ হলো। এমনকি রাশিক ওই রাইডে এত ভালো চালাল যে তাকে আমিই প্রস্তাব করে বসলাম আমাদের সঙ্গে পুরো রাইডে সঙ্গী হতে। ‘আপনি অভয় দিলে আমি আছি’—জানিয়ে সে রাজি হয়ে গেল।
রাইড, রুট ম্যাপ, সম্ভাব্য রাত্রিবাসের স্থান এসব নিয়ে গুগল আর্থ ও গুগল ম্যাপে বেশ সময় দিলাম কদিন। এর মধ্যেই রাশিকের জিম্মায় নিজের সাইকেল রেখে সাকিব কুয়েটের দলের সঙ্গে ট্রিপে চলে গেল। সে সেন্ট মার্টিন ট্রিপ শেষ করে টেকনাফে আমাদের সঙ্গে জয়েন করবে। সাইকেল সারাই–সংক্রান্ত যন্ত্রপাতি সব সাকিবের ঘাড়ে আর ওষুধপত্রের দায়-দায়িত্ব আমার ওপর। মধ্যরাতে চট্টগ্রামের সিনেমা প্যালেসের বাস কাউন্টারের সামনে দাঁড় করানো সৌদিয়া বাসের ছাদে যখন সাইকেল বেঁধে নিচ্ছিলাম, তখন আগামী কটা দিনের অনাগত অ্যাডভেঞ্চারের আশা উজ্জ্বল দীপ্তি ছড়াচ্ছিল রাশিকের চোখে-মুখে। ওর জীবনের প্রথম লং রাইডটাই হতে যাচ্ছে ক্রস কান্ট্রি রাইড।
মৃদু গর্জন তুলে একরাশ ধোঁয়া ছেড়ে আমাদের বহনকারী বাসটি যখন টেকনাফ বাসস্ট্যান্ডে আমাদের নামিয়ে দিল, তখনো চারপাশে অন্ধকার। বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া একটা হোটেলে আগের রাতে আস্তানা গেড়ে ছিল সাকিব। ছাদ থেকে সাইকেল নামিয়ে অল্প একটু বিশ্রাম নিয়ে আমরা যখন শাহপরীর দ্বীপের উদ্দেশে প্যাডেল ঘোরালাম, তখন সবে সূর্যের প্রথম কিরণ পূর্বাকাশে তার উপস্থিতি জানান দিচ্ছে। টেকনাফ থেকে শাহপরীর দ্বীপের দূরত্ব ১৭ কিলোমিটার। এই রাস্তায় বছর দুয়েক আগে সাইকেল চালানোর সুযোগ হয়েছিল। এবড়োখেবড়ো রাস্তা এখনো আগের মতোই আছে।
দুপাশে লবণের খেতের মধ্য দিয়ে সর্পিল একটা রাস্তা মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে শাহপরীর দ্বীপকে যুক্ত করেছে। হাওয়ার তোড় ছাড়িয়ে মাটির রাস্তা ধরে এগোচ্ছি। মাঝেমধ্যে দু-চারটা ঘরবাড়ি চোখে পড়ছে। শীতের অলস সকালে এখনো কেউ জেগে ওঠেনি।
কিছুদূর এগিয়ে দেখা মিলল গাঙচিলের। অল্প পানিতে গা ভাসিয়ে অলস সময় কাটাচ্ছে তারা। সামনে এগিয়ে হাতের ডান দিকে ঘুরতেই নাফ নদী। বাকি রাস্তাটা নদীর পাড় ঘেঁষে। ইট আর মাটি মেশানো এই রাস্তাটা শেষ হয়েছে শাহপরীর দ্বীপের জেটিতে। এরপর আর যানবাহন চলার উপযোগী রাস্তা নেই। মিয়ানমার থেকে নদীপথে আসা গরুদের ফাঁক গলে বহু কষ্টে সাইকেলসমেত জেটির শেষ মাথায় গিয়ে দাঁড়ালাম আমরা তিনজন। কর্তব্যরত এক বিজিবির জওয়ান বেশ আগ্রহভরে আমাদের আগমনের হেতু জিজ্ঞেস করলেন। উত্তর শুনে আমাদের শুভকামনা জানিয়ে ছবি তুলে দিলেন।
অফিশিয়ালি আমাদের যাত্রা এখান থেকেই শুরু। আরেকটা গরুবোঝাই নৌযান জেটিতে খালাসের অপেক্ষায় ছিল। বর্মিজ গরুর খপ্পর থেকে বাঁচতে তড়িঘড়ি করে প্যাডেলে পা ঘোরালাম। একই পথে টেকনাফ ফিরে প্রাতরাশটা সেরে আমাদের সেদিনের গন্তব্য কক্সবাজারের উদ্দেশে রওনা হয়ে গেলাম। টেকনাফ থেকে কক্সবাজার যাওয়ার তিনটি রাস্তা আছে। প্রথমটি টেকনাফ বাসস্ট্যান্ড থেকে সোজা উখিয়া হয়ে কক্সবাজারের লিংক রোডে প্রবেশ করেছে। দ্বিতীয়টি মেরিন ড্রাইভ হয়ে কলাতলী মোড়। অন্যটি মেরিন ড্রাইভের কাছাকাছি দূরত্বেই এলজিইডি রোড। তবে এই রাস্তা সরাসরি কক্সবাজার পৌঁছায় না। এই রাস্তা ধরে ইনানীর কিছু পরে সোনার পাড়া পর্যন্ত যাওয়া যায়। কক্সবাজার যেতে হলে পরবর্তী রাস্তাটুকু মেরিন ড্রাইভ হয়েই এগোতে হবে। স্বভাবতই আমরা নয়নাভিরাম মেরিন ড্রাইভই বেছে নিলাম। সাইক্লিস্টদের জন্য এই রাস্তায় সাইকেল চালানোটা অনেকটা স্বপ্নের মতো ব্যাপার। এক পাশে সবুজ পাহাড় আর অন্য পাশে নীলাভ পানির সাগরের মধ্যে সরল বিস্তৃতির একটানা এমন রাস্তা এ দেশে আর দ্বিতীয়টি নেই।
টেকনাফের এক ‘পিচ্চি’ সাইক্লিস্ট আমাদের সঙ্গ দেওয়ার জন্য বেশ কিছুদূর এল। একটা নির্দিষ্ট দূরত্বে এসে জুনায়েদকে বিদায় দিয়েই আমরা আমাদের নিজস্ব গতিতে চললাম। যেহেতু মেরিন ড্রাইভ ধরে কক্সবাজারের দূরত্ব ৮০ কিলোমিটারের মতো, সেহেতু আমাদের খুব বেশি তাড়াহুড়ো নেই। শামলাপুরের বেশ কিছুটা আগে আমরা মেরিন ড্রাইভের পাশ ঘেঁষে যাওয়া এলজিইডির রাস্তা ধরলাম। উদ্দেশ্য জাহাজপুরার শতবর্ষী গর্জনগাছগুলোকে দেখা। জাহাজপুরা নামক জায়গাটাকে আমার সব সময় খুবই অদ্ভুত লাগে। রাস্তার মাঝেই এমন বিশাল সব শতবর্ষী গাছ রেখে রাস্তা বানানোটা এ দেশের প্রচলিত ঐতিহ্যের মধ্যেই পড়ে না।
সেদিক থেকে জাহাজপুরার এই জায়গাটা উজ্জ্বল ব্যতিক্রম। আগেও যতবারই এখানটায় এসেছি, এই জায়গাটার অমোঘ আকর্ষণে জড়িয়েছি নিজেকে। জাহাজপুরা বাজার পেরিয়ে শামলাপুর বাজার থেকে হাতের বাঁয়ে আবার মেরিন ড্রাইভে গিয়ে উঠলাম। কক্সবাজারের জনপ্রিয় পর্যটন সৈকতগুলোর তুলনায় এদিকের সৈকতগুলো আমার খুবই পছন্দের। কলাতলী, সুগন্ধা কিংবা লাবণীর হাজারো পর্যটকের ভিড়ে নোংরা হয়ে থাকা সৈকতের তুলনায় এদিকের সৈকত ছিমছাম, পরিষ্কার। ওই সৈকতগুলোর তুলনায় এদিকের সৈকতে প্রবালের উপস্থিতি বেশি থাকায় এদিকের পানিও বেশ স্বচ্ছ, নীলাভ। শামলাপুর সৈকতে স্থানীয় মাছশিকারিদের কারণে সব সময়ই বেশ জমজমাট। সৈকতসংলগ্ন ঝাউবাগানে বসে বেশ কিছুক্ষণ মাছ বিকিকিনি দেখে আবার পথে নামলাম।
ইনানী বাজারে পেটপূজাটা সেরে রাস্তার দুধারের অসংখ্য হ্যাচারি পেরিয়ে যখন রেজু খালের নিকটে, তখন বাজে মোটে আড়াইটা। বাকি পথটা হেলেদুলে গিয়ে নিসর্গ হোটেলের সামনের ভাঙা ব্রিজ জায়গাটাতে বসে পড়লাম সূর্যাস্ত দেখতে। সূর্য পশ্চিমাকাশে মরা আলো ছড়াতে ছড়াতে ডুব দিতেই আমরা সেদিনকার রাত্রিবাসের স্থল সুগন্ধা পয়েন্টের দিকে প্যাডেল ঘোরালাম। একদম সৈকতসংলগ্ন নীলিমা বিচ রিসোর্টটা বেশ সাজানো-গোছানো। রাতের খাবারের কোপটা পড়ল সাকিবের ওপর। সেই দুপুর থেকে রাশিকের ক্রমাগত ঘ্যানঘ্যানানিতে বিরক্ত হয়েই সম্ভবত রূপসী বাংলা হোটেলে ক্র্যাব মাশালা আর প্রণ ফ্রাই জুটল।
ভালো একটা ঘুমের পরে বেশ ভোরে ভোরেই সাইকেলে চেপে বসা। আজকের গন্তব্য চট্টগ্রাম। তবে চট্টগ্রাম পৌঁছাতে আমরা চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের বদলে মহেশখালী-বদরখালী-বাঁশখালী-আনোয়ারা হয়ে চট্টগ্রাম ঢুকেছে যে সড়ক, সেটা ধরেই এগোব। এই রাইডে আমাদের পরিকল্পনাই ছিল যতটা ভোরে বের হয়ে রাইড শুরু করা যায়। ঘণ্টা দুয়েক চালিয়ে তবেই প্রাতরাশের বিরতি নিতাম। সুগন্ধা থেকে বেরিয়ে ঘুম গাছতলা হয়ে এয়ারপোর্ট রোড ধরে মহেশখালী যাওয়ার জন্য ৬ নম্বর ঘাটে যখন পৌঁছেছি, তখনো ঘাটের স্বাভাবিক ব্যস্ততা শুরু হয়নি। মিনিট পনেরোর মধ্যেই স্পিডবোট আমাদের মহেশখালী নামিয়ে দিল।
জেটি ধরে বাজারের দিকে চলা শুরু করতেই মনটা ভালো হয়ে গেল। উঁচু জেটিঘাটের দুপাশের সবুজ বনানী মন ভালো করার সব উপাদান নিয়েই প্রস্তুত। যাত্রাপথে রাখাইন পাড়ার বৌদ্ধ মন্দির ঘুরে দেখে আবার সাইকেলের স্যাডলে। এই রাস্তাটার সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো এটি চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের মতো এত ব্যস্ত নয়। খুব বেশি যানবাহনের চলাচল নেই এদিকে। অল্প কিছু মিনিবাস আর সিএনজিই মূল বাহন। দিগন্ত বিস্তৃত শুঁটকির মাঠ পেরিয়ে বদরখালী এসে পৌঁছালাম। পথচলতি একটা কাজ আমরা নিয়মিতই করছি। একটানা ঘণ্টা দেড়েক বা দু-এক সাইকেল চালানোর পরই রাস্তার ধারের কোনো টংয়ে আমরা খানিকক্ষণের জন্য বিশ্রাম নিতাম। আর সেই সঙ্গে চলত স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে খোশগল্প। এরই ফাঁকে চা-নাশতা করে আবার সাইকেলে। বদরখালী হয়ে বাঁশখালীর দিকে যেতে একটা বেশ বিচিত্র নামের বাজার চোখে পড়ল। বাজারটার নাম প্রেম বাজার। পাইকারি দরে প্রেম কিনতে পারব, এই আশায় বাজারের আনাচকানাচে ঢুঁ মারলেও সেই আশা আর পূরণ হয়নি!
অগত্যা প্রেম বাজার লেখা সাইনবোর্ডের সঙ্গে ছবি তুলেই ক্ষান্তি। মৃদুমন্দ বাতাসের ঝাপটা গায়ে লাগাতে লাগাতেই একসময় বাঁশখালী। বাঁশখালীর এক বন্ধুকে ফোন করে ভালো একটা ভাতের হোটেলের নাম জেনে সেটা খুঁজতে মিনিট দুয়েক লাগল। ভরপেট খেয়ে আবার দ্বিচক্রযানে। বাঁশখালী থেকে চট্টগ্রামের দূরত্ব প্রায় ৫০ কিলোমিটারের মতো। বাকি পথটুকু হেলতে-দুলতে যাব, এই পরিকল্পনা করে ধীরেসুস্থে প্যাডেল ঘোরালাম। এদিকের রাস্তায় আধিপত্য বিস্তার করে আছে তিন চাকার যানবাহন সিএনজি। দুলকি চালে চলতে চলতেই একসময় তৈলারদ্বীপ সেতুতে। সাঙ্গু নদের ওপর নির্মিত এই সেতু জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে ২০০৫ সালে। সেতুর ওপরে ফুরফুরে হাওয়ায় কিছুক্ষণ গা এলিয়ে বসে রইলাম তিনজনেই।
সেতু পেরিয়ে অল্প এগোতেই নজর কাড়ল রাস্তার পাশের বিশাল গবাদিপশুর হাট। সরকার হাটের নাম ছোটবেলা থেকেই শুনে আসছি। পবিত্র ঈদুল আজহার সময় বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে এ হাটের অনেক প্রতিবেদন দেখেছি। এ পথে আগে গাড়িতে গেলেও হাটটা সরাসরি দেখার সুযোগ হয়নি। ক্রসিংয়ের আগে রাস্তার পাশের এক টংয়ে চা–বিরতি। এরপর এক টানে যখন নতুন ব্রিজে এসে পৌঁছালাম, তখনো দিনের আলো ফুরায়নি। নতুন ব্রিজ থেকেই রাশিক নিজ বাসার পথ ধরল। আমি আর সাকিবও নিজ নিজ বাসার পথ ধরলাম পরদিনের পরিকল্পনার ছক কষতে কষতে। ক্রস কান্ট্রি রাইডে এসেও এক দিনের জন্য নিজ বাসার আরামদায়ক জায়গা পেয়ে মনে মনে বেশ পুলকিত। ‘দুই দিনে কালো হয়ে গেছিস। আরও শুকিয়ে গেছিস,’ আম্মুর এসব চিরায়ত বাণী শুনে, রাতের খাবার সেরে পরদিনের পরিকল্পনা করতে করতে ঘুমের দেশে।